Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

পাবিপ্রবিতে র‍্যাগিংয়ের প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীকে নির্যাতন

প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২২, ০১:২৭

নির্যাতিত শিক্ষার্থী নুরুল আমিন

পাবিপ্রবি লাইভ: র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করেছেন একই ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী। নির্যাতিত শিক্ষার্থী অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ১১তম ব্যাচের নুরুল আমিন।

রবিবার (২২ মে) রাত প্রায় ১২টার দিকে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। অনুসন্ধানে জানা যায়, আহত শিক্ষার্থী নুরুল আমিন ২০ তারিখ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের গণরুমে তার বন্ধুর সাথে দেখা করতে গেলে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ১৩তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগ দিতে দেখে। র‍্যাগ দেওয়ার সময় গণরুমে নুরুল আমিনের প্রবেশে বিরক্তিবোধ করে ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা বিষয়টি ১১তম ব্যাচের সিনিয়রদের কাছে জানায়। ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা নুরুল আমিনের প্রতি গণরুমে র‍্যাগিং এর প্রতিবাদ এবং ভিডিও করার অভিযোগ এনে রাতে হলের ছাদে শারিরীকভাবে নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতিত শিক্ষার্থী নুরুল আমিন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন- “২১ মে রাত দশটার দিকে টিউশনি থেকে হলে ফেরার পর আমার রুমমেটের কাছ থেকে জানতে পারি কয়েকজন শিক্ষার্থী আমাকে মারার জন্য ঘুরছে। এই ঘটনা শোনার পর পরই আমি ৩১৩ নাম্বার রুমে এক বড় ভাইকে বিষয়টি জানাতে যাই। ৩১৩ নাম্বার রুমে প্রবেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক পোদ্দার, আইসিই বিভাগের শাহ আলম, রুবেল, মিলন, মঞ্জুরুল, ইইই বিভাগের সীমান্ত সহ ১০-১২ জন শিক্ষার্থী ৩১৩ নাম্বার রুমে প্রবেশ করে। পরে তারা ওই রুম থেকে আমাকে বের করে দুইজন শিক্ষার্থী আমার হাত দুটি শক্ত করে ধরে এবং দুজন শিক্ষার্থী মুখ চেপে ধরে হলের ৪ তলার রিডিং রুমের ছাদের উপরে নিয়ে যায়। এর পর পরই তাদের সাথে যুক্ত হয় আরও ১০-১২ জন শিক্ষার্থী।”

নুরুল আমিন ক্যাম্পাসলাইভকে আরও বলেন– “আমি গত ২০ মে বন্ধুর সাথে গণরুমে গিয়ে দেখা করে চলে আসি। কোন কথা কিংবা ভিডিও করিনি। আমাকে মারধর করার পেছনে র‍্যাগিং এর ব্যাপারটা একটা ক্লু মাত্র, এর পেছনে আরও বড় ইস্যু আছে বলে আমি মনে করি।”

প্রায় আধা ঘন্টা ধরে শারীরিক নির্যাতনের পর নুরুল আমিনকে ছেড়ে দিলে ৩ তলায় এসে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সে করে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।

মারধরের ঘটনা শোনার পরপরই রাত ১টায় পাবনা সদর হাসপাতালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হাসিবুর রহমান, ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক ড. সমীরণ কুমার সাহা নুরুল আমিনকে হাসপাতালে দেখতে যায়। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুন এবং বিকেলে উপ-উপাচার্য ড. এস এম মোস্তফা কামাল খান নুরুল আমিনকে পাবনা সদর হাসপাতালে দেখতে যান।

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর সাইফুল ইসলামকে ফোন দেওয়া হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস. এম মোস্তফা কামাল খান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন- “যেটি ঘটেছে সেটি দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা চাইনা সামনে কোন ঘটনা ঘটুক। ইতোমধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হল প্রভোস্টকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করি ভিক্টিম এটার সুষ্ঠু বিচার পাবে”।

উল্লখ্য, নুরুল আমিন গত ১৭ মে হলের ডাইনিং এর খাবারের মান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুক গ্রুপে পোস্ট করেন। এরপর থেকেই হলের ডায়নিংয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকা কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। হলের ডাইনিংয়ের খাবার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে রাজনৈতিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে চুপ করে আছেন বলে জানা গেছে।

ঢাকা, ২৩ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এএএম//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ