রাবি লাইভ: নিজ কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যাওয়ার পূর্বে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রী সাদিয়া তাবাসসুম তার বাবার ডায়েরিতে চিরকুট লিখে গেছেন। যেখানে লেখা আছে, ‘চোরাবালির মতো ডিপ্রেশন, বেড়েই যাচ্ছে, মুক্তির পথ নেই, গ্রাস করে নিচ্ছে জীবন, মেনে নিতে পারছি না।’ শিক্ষার্থীর চাচা মো. কবীর উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
জানা গেছে, সাদিয়া নামে ওই ছাত্রী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। মাওহা ইউনিয়নের বিশমপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ফারুক মিয়ার মেয়ে।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১০ মে) বিকেলে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার নিজ ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
থানা সূত্রে জানা গেছে, সাদিয়া স্বপরিবারে ময়মনসিংহ শহরে বসবাস করেন। ঈদের আগে সবাই গ্রামের বাড়িতে আসেন। দুপুরের পর সাদিয়া নিজের ঘর দরজা বন্ধ করে রাখেন। কিছুক্ষণ পর পরিবারের সদস্য তাকে অনেক ডাকাডাকি করলেও দরজা খোলেননি। পরবর্তীতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।
শিক্ষার্থীর চাচা মো. কবীর উদ্দিন ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, সাদিয়ার ইচ্ছা ছিল মেডিকেলে পড়বে। চান্স পায়নি, তারপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। কিন্তু এরপরও তার মধ্যে বিষন্নতা দেখা যেত। এবার তার আরেক পরিচিতজন মেডিকেলে চান্স পায়। এ নিয়ে সে ব্যাপকভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তাকে এ জন্য চিকিৎসা করানো হচ্ছিল।
তিনি আরও জানান, মৃত্যুর আগে সাদিয়া ওর বাবার ডায়রিতে লিখেছে- ‘চুরাবালির মতো ডিপ্রেশন, বেড়েই যাচ্ছে, মুক্তির পথ নেই, গ্রাস করে নিচ্ছে জীবন, মেনে নিতে পারছি না।’ দুপুরে নিজ ঘরে বাঁশের আড়ার সঙ্গে ফাঁস নেয়। পরিবারের লোকজন বিষয়টি ঠের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। গৌরীপুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার পূর্বেই সে মারা গেছে।
সাদিয়ার বন্ধুদের ভাষ্যমতে, ব্যক্তিগত কিছু কারণে বেশ কিছুদিন যাবত মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। যার ফলে এবছর ইয়ার ড্রপও দিয়েছেন সাদিয়া। তাছাড়া কয়েকমাস ধরে ফেসবুক আইডিও ডিএকটিভ রেখেছিলেন তিনি।
গৌরীপুর থানার এসআই মাইনুল রেজা ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, মাঝে বেশকিছু দিন সাদিয়ার লেখাপড়া বন্ধ ছিল। যে কারণে তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এ সব কারণে সাদিয়া আত্মহত্যা করতে পারেন।
সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এসআই মাইনুল রেজা।
এ বিষয়ে ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. সোহেল কবীর ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'আপনারা যে বিষয়ে শুনেছেন আমিও একই শুনেছি। তবে এর চেয়ে বেশী কিছু জানিনা।'
ঢাকা, ১১ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//ওএফ//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: