Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

হল বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা, যা বলছে কর্তৃপক্ষ

প্রকাশিত: ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০১:৩৩

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

উমর ফারুক, রাবি: রমজান ও পবিত্র ইদুল ফিতর উপলক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে সকল একাডেমিক ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। যা চলমান থাকবে আগামী ১৪ মে পর্যন্ত।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো আগামী ২৭ এপ্রিল দুপুর ২টারমধ্যে সকল আবাসিক শিক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হল ত্যাগ করতে হবে। এছাড়া আগামী ১২ মে সকাল ১০টায় পুনরায় সকল হল খুলবে। এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে হল প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহব্বায়ক কমিটি।

ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে ১৬দিন হল বন্ধের সিদ্ধান্তে খুশি নন শিক্ষার্থীরা। তারা মনে করছেন ৩০এপ্রিল থেকে ৬মে পর্যন্ত বন্ধ দেয়া যুক্তিযুক্ত। বেশীদিন হল বন্ধে যারা চাকরী প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বিরূপ প্রভাব তৈরি করবে। তাছাড়া যারা অন্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের এতদিন বাহিরে থাকায় বা বাড়ীতে যাওয়া নিয়ে ভোগান্তি তৈরি হবে বলে মনে করছেন তারা।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শান্ত নামে এক শিক্ষার্থী 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার' ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, ছুটি ২৭ এপ্রিল - ১২ মে, ২০২২=১৫ দিন। করোনায় দীর্ঘদিন হল বন্ধ থাকার পর, এত্তো দিন হল বন্ধ রাখার মানেই হয় না। কারণ অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বাসায় পড়াশোনা করা হয় না (ব্যক্তিগত + পারিবারিক সমস্যা) ২৭মে বিসিএস সহ, মে মাসে অনেক চাকুরির, বিভাগের পরীক্ষা + অনেক অমুসলিম আছে। যাদের বাধ্য হয়ে বাসায় ফিরতে হবে (এক প্রকার ভোগান্তি+ অর্থ খরচ) + যা শুনলাম, ঈদে অনেকেই বাসায় যাবে না হল বন্ধ হলে মেসে যেতে হবে তাদের। এখানে অধিকাংশই মধ্যবিত্ত,নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। ছুটির মধ্যেও, হলে কর্মচারীদের থাকা লাগে।

ফারদিন অন্তর নামে নওয়াব আবদুল লতিফ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, ইদের ছুটির পরেই পরীক্ষা। বাড়িতে একদম পড়াশোনা হয়না এটা সবাই জানে। এ অবস্থায় হল এতো দিন বন্ধ থাকলে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ হল ইদের ২/৩ দিন পর খুলে দেয়ার জন্য।

হল বন্ধের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মতামত নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তারিফ হাসান মেহেদী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'হল বন্ধ ও অন্যান্য ছাত্র সংশ্লিষ্ট মিটিংগুলোতে সাধারণ কিছু ছাত্রকে ডাকুন। কতদিন হল বন্ধ হলে আমাদের সুবিধা-অসুবিধা হবে এমন মতামত নিন। প্রভোস্ট স্যারদের কি অসুবিধা, কি সুবিধা সেটা আমরাও দেখি। আমাদের কি অসুবিধা, সুবিধা সেটা তারাও দেখুক। একপক্ষের সিদ্ধান্তকে (তাও যদি যৌক্তিক হত) আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়াও জুলুম। প্রভোস্ট স্যাররা তো এখন আর ছাত্র নন তাই তারা ছাত্রদের সুযোগ-সুবিধাগুলো বুঝবেন না।'

রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী তাসনিম হোসাইন ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'আমরা দীর্ঘ সময় করোনা মহামারীর কারণে বাড়ীতেই ছিলাম। আস্তে- আস্তে আমরা যান্ত্রিক জীবনে ফিরতে চেষ্টা করছি। কিন্তু আবারো ঈদে কারণে এতোদিন হল বন্ধ করা ঠিক হবে না। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা থাকে তাদের জন্যও একধরনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আবার ২৭মে বিসিএস পরীক্ষা রয়েছে। সব দিক বিবেচনা করলে আমার মনে হয় রাবিতে সারাবছর হল খোলা রাখার টেন্ড চালু করা যেতে পারে।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো সারাবছর খোলা রাখার দাবি জানিয়ে মাজহারুল ইসলাম নামে আরেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরের মত এবারও একটা দীর্ঘ ছুটি দিলো। যেখানে কিনা রমজানে ক্লাস করায়ে সেশন জট কমাতে চাচ্ছিল প্রশাসন। সেখানে হল বন্ধ থাকবে ২৭ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত। ক্লাস হবে তারও কয়েকদিন পর।

হল বন্ধ হবে কেনো? কারণ কি! ইদের এত্ত দীর্ঘ ছুটিতে বাড়ি থাকতে হবে। এর ভিতরে হল বন্ধ, পুরাই একটা অস্বস্তিকর অবস্থা। প্রত্যেকবারই দেখে আসছি ইদের ছুটিতে হল গুলো ১৫/২০ দিন বন্ধ রাখে। এটা পরিবর্তন হওয়া দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে নিকট সারাবছর হল খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছি।'

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক ও শহীদ হবিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর জাহিদুল ইসলাম সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর তারেক নূর ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেটা আসলেই শিক্ষার্থীদের জন্য ভোগান্তি হবে। আগে দেখি ঈদ কবে হয়। আমি এ বিষয়টা নিয়ে ভিসি স্যারের সাথে আজই কথা বলব এবং ঈদের দু তিন মধ্যে হল খোলার ব্যবস্থা করব।'

প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. সুলতান- উল- ইসলাম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'আসলে গ্রীষ্মকালীন ছুটি, রমজান এবং ঈদের ছুটি মিলিয়ে ১২ মে পর্যন্ত হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ইদানিং শিক্ষার্থীদের খাবার নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। অনেকের আবার এজন্য শরীর অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এসব দিক বিবেচনা নিয়ে এ সিদ্ধান্ত।'

ঈদের পর শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পরীক্ষা কিংবা চাকরী প্রত্যাশীদের পড়াশোনা সব মিলিয়ে একটা ভোগান্তির কারন হয়ে দাঁড়াবে এ নিয়ে তিনি বলেন, 'আমি এ বিষয়টা নিয়ে ভিসি স্যারের সাথে কথা বলব। কিভাবে ছুটি কমানো যায় সে চেষ্টা করব।'

ঢাকা, ১৫ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ