Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

'স্বাধীনতা' শুধু ৫০ বছরের অর্জন নয়, এটি আমাদের মেরুদণ্ড

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০২২, ০২:১৩

আজ ২৬ মার্চ, ১৯৭১। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বিশ্বের বুকে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন আজ। ১৯৭১ সালের এই দিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষিত হয়েছিল। স্বাধীনতা দিবসে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়া এবং ভাবনার কথাগুলো তুলে ধরেছেন ক্যাম্পাসলাইভ২৪কম-এর ক্যাম্পাস প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন

স্বাধীনতা আমাদের একটি অধিকার

স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের রক্ত দিয়ে অর্জিত। শুধু ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়নি আমাদের এই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার এই আকাঙ্ক্ষা আমাদের ভিতরে অনেক আগে থেকেই ক্রমে ক্রমে বেড়ে উঠেছিল। যার ফল স্বরূপ আমরা পেয়েছি ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধ। আমরা পেয়েছি আমাদের কাঙ্খিত স্বাধীনতা। এবং এখনও আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার এই ধারা অব্যাহত আছে। আমাদের চিন্তা স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে কাজ করার স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা সঠিক ভাবে প্রকাশের জন্য এখনো লড়াই করে যাচ্ছি। এখনো নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি। বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে আন্দোলন করে যাচ্ছি। সুবিধা বঞ্ছিত এবং সকল খেটে খাওয়া মানুষের অধিকারের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি। এসব স্বাধীনতার একটি গুরুত্বপুর্ণ অংশ।

শাহনেওয়াজ সাদী

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর সূর্য আজ নবরূপে উদিত হয়েছে বাংলার আকাশে। সম্প্রতি আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছি। তবুও এই যে দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচার, গুম-খুন, রাস্তায় বের হলেই ট্রাফিক জ্যাম, বেকারত্ব- এসব নেতিবাচক দিক উন্নয়নের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এগুলো সরকারের একার পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। ১৯৪৮, ১৯৫২, ১৯৭১ সালে দেশকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে তরুণ ছাত্রদের যেমন ভূমিকা ছিল তেমনি আমাদের সকলের এগিয়ে আসতে হবে আমাদের স্বাধীনতা রক্ষার্থে। এগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর অদম্য চেষ্টা আমাদের মহৎ উদ্দেশ্য সাধনের। দল-মত নির্বিশেষে আমাদের সবার উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে সহযোগিতা করা, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলা। তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির পথে। স্বাধীনতা শব্দ শুধু আমাদের ৫০ বছরের অর্জন না, এটিই আমাদের মেরুদণ্ড।

শাহনেওয়াজ সাদী
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ।

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষার্থে সচেতন হওয়া জরুরী

৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময় পেয়েছি আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা। যে স্বাধীনতার জন্য ৭ কোটি বাঙালিকে বেছে নিতে হয়েছিল রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পথ। মুক্তিসংগ্রামে অকুতোভয় সেনানী ছিল বাংলার দামাল তরুণরা। আজও আছে। স্বাধীনতা দিবসে প্রজন্মের তরুণদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। সামনে নিয়ে আসে পূর্বসূরীদের আত্মত্যাগের মহিমা। স্বাধীনতার এত বছর পর এসে সেই স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করার দায়িত্ব তরুণদের। কিন্তু এই স্বাধীনতা আজ সার্বজনীন হলেও বর্তমান সময়ে এসে দেখা যায় তার মহিমা সীমাবদ্ধ আছে শুধু এই দিনটির মধ্যে। এর মূল কারণ হলো আত্মকেন্দ্রিকতা, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীতার অভাব, মূল্যবোধ। একটু লক্ষ করলে দেখা যায় বর্তমানে সমাজের কিছু মানুষ নিজের স্বার্থসিদ্ধির কাজে ব্যস্ত। সমাজের কথা চিন্তা করে কোন পদক্ষেপ বা কোনো কার্যক্রম করার সৎ মানসিকতা তাদের ভেতর কাজ করে না। অন্যদিকে, তরুণ সমাজের হীনম্মন্যতা স্বাধীন সমাজে উন্নয়নের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তরুণ প্রজন্ম দেশের জন্য কোনো কিছু করার কথা ভাবলে অথবা নতুন পরিবর্তন আনতে চাইলে তাদেরকে বিভিন্নভাবে নিরুৎসাহিত করা। যেটা পুরো সমাজের জন্য ক্ষতিকর।

সোমা ভদ্র

 

স্বাধীনতার অনেকগুলো দশক পেরিয়ে আসলেও আমরা কী আদৌ দুঃখ-দৈন্য, নিয়ম-অনিয়ম, অত্যাচার-শোষণের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছি? আমাদের দেশের অবকাঠামো মানুষের জীবনযাত্রা সে প্রশ্নের উত্তর দেয়। গত এক দশকে কর্মসংস্থানের সংকট তরুণ সমাজকে বেকারত্ব নামক শব্দের সম্মুখীন হতে হয়। আজ তাদের চাকরির সুযোগ সীমাবদ্ধতা থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে শিক্ষিত বেকার। যে তরুণরা দেশেকে এগিয়ে নিয়ে যাবে; তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ না তৈরি হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। আর তাই বিভিন্ন বহুমুখী পরিকল্পনা, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বেকারত্ব হ্রাস, রপ্তানি বিনিয়োগ সব ক্ষেত্রে সঙ্কট মোকাবেলা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। আর যারা সচেতন তরুণ তাদের উচিত মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসা।

সেই সাথে সব শ্রেণিপেশার মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও প্রগাঢ় দেশাত্মবোধ, উন্নত নৈতিকতা ও মূল্যবোধ প্রয়োজন, মানসিকতা পরিবর্তন আবশ্যক, তারুণ্যের সুস্থ স্বাভাবিক বেড়ে উঠা নিশ্চিত করতে হবে, নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দেওয়া অনস্বীকার্য।

সোমা ভদ্র
লোকপ্রশাসন বিভাগ।

স্বাধীনতা: একটি স্বপ্ন ও বাস্তবতা

পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। স্বাধীনতা শব্দটি শ্রুতিমধুর হলেও এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী ইতিহাস । ১৯৭১ সালের ২৫ এ মার্চ অন্ধকার রাতে পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ২৫ এ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেন,রাতে ঢাকায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ২৬ এ মার্চ যার যা আছে তাই নিয়ে সর্বত্র শত্রুর মোকাবিলা শুরু হয়। এরপর লাখো শহীদের রক্তের নদী পেরিয়ে, লাখো মা বোনের সম্ভ্রম আর শত ত্যাগ তিতিক্ষার পরে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশ জন্ম লাভ করে।

সাজ্জাদ মাহমুদ রাকিব

 

স্বাধীনতার ৫১ বছর পরেও ভূখন্ডের স্বাধীনতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। সত্যিকারের গণমানুষের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সর্বত্র দুর্নীতি,ক্ষুধা, দারিদ্র, অপশাসন , নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় আমাদের লাগাম টেনে ধরেছে। এতকিছুর মধ্যেও আশার কথা হলো বর্তমান প্রজন্ম স্বাধীনতার বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। তাদের হাত ধরেই অর্জিত হবে সত্যিকারের স্বাধীনতা।

"পৃথিবীর এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত
ঘোষণার ধ্বনি–প্রতিধ্বনি তুলে,
নতুন নিশানা উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
এই বাংলায়
তোমাকেই আসতে হবে।"— শামসুর রাহমান

সাজ্জাদ মাহমুদ রাকিব
ফার্মেসী বিভাগ।

স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের ভূমিকা অগ্রণী হওয়া প্রয়োজন

মার্চ মাস মানেই বাঙালির নিজ ঐশ্বর্য, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও স্বাধীনচেতা মনোভাব উজ্জীবিত হবার মাস। দেখতে দেখতে আমরা স্বাধীনতার ৫১ বছর পার করতে চলেছি। স্বাধীনতার যে সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পার করেছি, যার ফলে নবরূপে বাংলাদেশ সেজে উঠেছে বিশ্বের দরবারে। একজন বাঙালি হিসেবে সেজন্য আজ আমি গর্ববোধ করি। কারণ এদেশের স্বাধীনতা দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে।

১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বাংলার সকল শ্রেণী পেশার মানুষ মাটির টানে নিঃস্বার্থে যুদ্ধে গিয়েছে। তবে ১৯৪৮ সাল থেকে যতগুলো আন্দোলন-সংগ্রাম আজ পর্যন্ত বাঙালিরা করেছে তার সর্বাগ্রে অকুতোভয়ে দাঁড়িয়েছে এদেশের তরুণ সমাজ। এমনকি ১৯৭১ সালে দেশকে রক্ষা করতেও তরুণ সমাজের ভূমিকা অসামান্য। আর আজ যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পার করেছি, পদার্পন করেছি ৫১ বছরে এবং আমাদের বাংলাদেশ আজকে যে অবস্থানে রয়েছে সেখানে পৌঁছাতে বড় ভূমিকা পালন করেছে এই তরুণরাই। এখনো রাষ্ট্রবিরোধী কোনো আগ্রাসন শুরু হলে সবার প্রথমে প্রতিবাদী হয়ে উঠে তরুণ সমাজ।

তনুশ্রী রানী ঘোষ

 

এদেশের স্বাধীনতা অর্জনে অন্যান্যদের সাথে তরুণ সমাজ যতটা ভূমিকা পালন করেছে আজকে স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষার্থে তরুণ প্রজন্মকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ১৯৭১ সালের বঙ্গবন্ধু তরুণদের উজ্জীবিত করার মধ্য দিয়ে অগ্রগতির যে মূলমন্ত্র শিখিয়েছেন তা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে তরুণদেরই।

তনুশ্রী রানী ঘোষ
ইংরেজী বিভাগ।

স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা

বিশ্ব মানচিত্রে লাল-সবুজের একটি শীতল ছায়ার দেশ আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ নামকরণের পেছনের প্রেক্ষাপট মোটেও সহজ ছিল না। ১৯৭১ সালের ৩০ লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই অর্জন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশের এর উৎপত্তির সূত্রপাত হয়েছিল বাহান্নোর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, ছয় দফা দাবির মাধ্যমে। এই সকল আন্দোলনের প্রাণ বিন্দু ছিল সেই সময়কার তরুণরা। নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তারা কখনো ছাড় দেননি। তারই ধারাবাহিকতায় তারা নিজেদের সর্বত্র বিলীন করে দিয়ে স্বাধীনতা শব্দটি অর্জন করেছিল।

রেজওয়ান হৃদয়

 

স্বাধীনতার ৫১ বছর পার হলেও মুক্তিযুদ্ধ থেকে কতটুকু শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছি? এদেশে এখনো না খেয়ে মানুষ মরছে, ন্যায় বিচারের জন্য ঘুরতে হচ্ছে এখনো অসহায় মানুষকে। এখনো অসংখ্য মানুষকে দিন কাটাতে হচ্ছে শহরের ফুটপাতে। চিকিৎসার অভাবে মরেছে অসংখ্য মানুষ। এটাই কী ছিলো ৭১ সালে যুদ্ধ করার অঙ্গীকার? আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা ঠিক কিন্তু প্রকৃত স্বাধীনতা এখনো আমরা অর্জন করতে পারিনি। আমরা এখনো দারিদ্রতার সাথে লড়াই করছি, এখনো শিক্ষা-গবেষণায় পিছিয়ে আছি। যে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছেন সেই সোনার বাংলার এখনো হয়নি। সব সমস্যা পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় এখন এসেছে। দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার কাজে নেমে পড়ার সময় এখনই।

রেজওয়ান হৃদয়
পরিসংখ্যান বিভাগ।

তরুণ প্রজন্মের স্বাধীনতার সঠিক অর্থ অনুধাবন করা উচিত

স্বাধীনতা শব্দটার একটা সুন্দর অর্থ আছে। মুলত সেই স্বাধীনতাকে পাওয়ার জন্য আমাদের দেশে একসময় ৭১ এসেছিলো। নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন বাবা, ভাই, কৃষক, শ্রমিক, মা-বোনসহ সকল শ্রেনীর মানুষ। কত মানুষ তার প্রাণ হারায়, কত বোন হারায় তাদের সম্ভ্রম, কত মা হারায় তাদের সন্তানকে, আবার কত স্ত্রী হারায় তাদের জীবনসঙ্গীকে। এমন অনেকে আছে যারা পঙ্গুত বরণ করে জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে বেঁচে ছিলেন। কিন্তু আমরা বর্তমান প্রজন্ম! কতটুকু জানি এই স্বাধীনতাকে? কতটুকু জানি স্বাধীনতার পেছনের সেই গল্প? আজকে আপনি আমাদের তরুণ প্রজন্মের কারো থেকে স্বাধীনতার সঠিক অর্থ এবং সঠিক ইতিহাস জানতে চান, তাহলে দেখবেন অধিকাংশই এর আশানুরূপ উত্তর দিতে পারছে না কারণ আমাদের কাছে স্বাধীনতার সঠিক অর্থ এবং সঠিক ইতিহাস জানেনা।

মোছাঃ স্মরণিকা ইসলাম জুঁই

 

৭১ এর তরুণ প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা আর বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার অর্থ কেমন ছিল? দুইটা প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার অর্থ সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিলো। তখনকার তরুণ প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার মানে ছিল একটি দেশ, একটি জাতি, নিজস্ব শাসনব্যবস্থা এবং একটি অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব। কিন্তু বর্তমান তারুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতা মানে নিজের খেয়াল খুশি মতো চলা, যা ইচ্ছা তা করা। আজকের প্রজন্ম জানেনা যা ইচ্ছা তা করাকে স্বাধীনতা বলেনা, যা ইচ্ছা তার করার জন্য ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করা হয়নি।

স্বাধীনতার বিকৃত রুপের দিকে ঝুঁকছে তরুণ প্রজন্ম। স্বাধীনতার মুলকথা এবং সঠিক ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের জানা উচিত এবং কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতাকে প্রাণ দিয়ে হলেও রক্ষা করা উচিত।

মোছাঃ স্মরণিকা ইসলাম জুঁই
ইতিহাস ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ।

প্রকৃত স্বাধীনতা এখনো অর্জিত হয়নি

এদেশের স্বাধীনতা অর্জন অনেকগুলো চিন্তার সম্মিলিত ফসল। জীবন যাত্রা থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পর্যন্ত স্বাধীনতা শব্দটি অনুপ্রেরণা যোগায়। পাকিস্তানি শোষকদের অত্যাচারে বাংলার আপামর জনসাধারণ যখন নিষ্পেষিত, তখন বাংলার তরূণ সমাজ দেশকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে রাস্তায় নেমে পড়ে, বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ট নেতৃত্বে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, জীবন দান করে। মাত্র নয়মাসের ব্যবধানে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম বর্ষপুর্তিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বলেছিলেন, ’শ্মশান বাংলাকে আমরা সোনার বাংলা করে গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলায় আগামী দিনের মায়েরা হাসবে, শিশুরা খেলবে। আমরা শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তুলবো। ক্ষেত-খামার, কল-কারখানায় দেশ গড়ার আন্দোলন গড়ে তুলুন। কাজের মাধ্যমে দেশকে নতুন করে গড়া যায়। আসুন সকলে মিলে সমবেতভাবে আমরা চেষ্টা করি যাতে সোনার বাংলা আবার হাসে, সোনার বাংলাকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলতে পারি।’

তাহমিদ আহবাব

 

আর সেই লক্ষ্যেই বর্তমান বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ অবস্থান এখন সুদৃঢ়। গার্মেন্ট শিল্প, রেমিটেন্স, ঔষধ শিল্প বাংলাদেশ বাজেটে ব্যপক ভুমিকা রাখছে। কৃষিখাতে উন্নয়নের মাধ্যেমে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণতা অর্জন করেছে। দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অবাধ দুর্নীতি। অপরাজনীতি, গুম, সুশাসনের অভাব, যানজট, মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থার অভাব, দক্ষ জনবলের সংকট দেশের উন্নতিতে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইসব সংকটের মধ্যেও তরুণ প্রজন্মই পারে দেশের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে।

বাংলাদেশের বিশাল জনসংখ্যার একটা বৃহৎ অংশ হলো তরুণ সমাজ। তরুণ প্রজন্ম নিজেদের দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করে, আত্মকর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে এই দেশকে সোনার বাংলাদেশে পরিণত করা সম্ভব। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান করে, নিজ স্বার্থচিন্তা থেকে বেরিয়ে দেশের স্বার্থচিন্তায় বিলিয়ে দিয়ে দেশ হবে সম্মৃদ্ধ।

তাহমিদ আহবাব
লোকপ্রশাসন বিভাগ।

ঢাকা, ২৬ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ