Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০
teletalk.com.bd
thecitybank.com
স্বাধীনতা: মুক্তি প্রজন্মের ভাবনা

বিভিন্ন প্রান্তে নিরবে, নিভৃতে নির্যাতিত হচ্ছে জাতির বীর সন্তানেরা

প্রকাশিত: ২৬ মার্চ ২০২২, ২২:৩২

আজ ২৬ মার্চ। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এ দিনটি বাঙ্গালী জাতীর জন্য এক গৌরবময় দিন। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের স্ফুলিঙ্গে উজ্জীবিত সশস্ত্র জনযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের মুক্তির ইতিহাস-স্বাধীনতার ইতিহাস। দীর্ঘ ৯মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে ৩০ লক্ষাধিক শহীদ ও ২লক্ষ মা-বোনের আত্মসম্ভ্রমের বিনিময়ের অর্জিত হয় আমার সোনার বাংলা। নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে লাল সবুজের এই ভূখণ্ড।

স্বাধীনতার পর দীর্ঘ সময় নানা চরাই উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে আর একটি নতুন পালক যোগ হয় স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ। স্বাধীনতার পঞ্চাশ পেরিয়ে একান্নতে অনেক প্রাপ্তি নিয়ে এবার স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হচ্ছে। স্বাধীনতার একান্ন বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মরা এ দেশকে নিয়ে কি ভাবছেন সে কথাগুলো তুলে ধরছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসলাইভ প্রতিনিধি মো. উমর ফারুক

জান্নাতুন নাঈমা আকন্দ জানা
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান

স্বাধীনতা' শব্দটি বাঙ্গালির প্রাণের শব্দ, কেননা এদেশের স্বাধীনতার সাথে জড়িয়ে আছে ৩০ লক্ষ শহীদের আত্নত্যাগ ও ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম হারনোর বেদনা। স্বাধীনতার রক্তিম সূর্যের উত্থানের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে স্বাধীনতার কবির মহান কবিতা তথা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বের ইতিহাস, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস,রনাঙ্গনের নায়কদের অসীম আত্নত্যাগের গাঁথা। তবু স্বাধীন দেশ পাওয়ার এতো বছর পরও কোথায় যেন জাতির জনকের স্বপ্নের পথে বাঁধা হয়ে রুখতে চায় নানা অপশক্তি।

নির্মলেন্দ গুণ যেন সঠিকই বলেছিলেন, 'জানি সেদিনের সব স্মৃতি মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত কালো হাত'। তারই উদাহরণ- এখনো দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিরবে, নিভৃতে নির্যাতিত হচ্ছে জাতির বীর সন্তানেরা। একাত্তোরের রণাঙ্গনের নায়কদের এই নিরাপত্তা হীনতা কোথাও একটা অশনি সংকেত বহন করে যা বুঝে নিতে হবে তরুণ প্রজন্মকেই। ঘাতকের কালো হাত ভেঙ্গে গুরিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের স্বপ্ন পূরণ করতে থাকতে হবে সর্বদা সতর্ক। এই স্বাধীনতা দিবসে আমাদের প্রতিবাদ্য হোক 'বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযোগ্য মর্যাদা নিশ্চিত করা'। যাদের রক্তের বিনিয়মে আজ আমরা স্বাধীন, সেই বীর সন্তানেরা স্বীকৃতি না পেলে আমাদের 'স্বাধীনতা' শব্দটি হারাবে তার তাৎপর্য, এদেশের যত উন্নয়ন তা হয়ে পড়বে অনর্থক।

অমর কুমার
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান

আজ মহান স্বাধীনতা দিবস। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি সেসকল মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ ও বীরমুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা জানাই। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে একটি অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশের প্রত্যাশা করি। আমাদের তরুণ প্রজন্মদের আমাদের গৌরবময় ইতিহাস হৃদয়ে ধারণ করে ভবিষ্যৎ বির্নিমাণে অংশগ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে আরে বেশী তুলে ধরতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধু ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে অনেক বেশী সহজ হয়ে যাবে।

নুসরাত জাহান আভা

মুক্তিযোদ্ধার নাতনী

এ বছরে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী:

কিন্ত ১৯৭১ সালে ৯মাস যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে প্রিয় স্বাধীনতার সৌরভ এলো সেই সৌরভ যেমন আমাদের আলিঙ্গন করে সামনে এগিয়ে হবে তেমনি ৩০ লক্ষ শহীদ দের আত্মত্যাগ ও হাজারো ঘর ছাড়া মা-বোন বীর মুক্তিযোদ্ধাদেদের বীরত্বগাথা আমাদের চলার পথের পাথেয়। স্বাধীনতার এই মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান আমাদের সাহসের প্রেরণা। তর্জনী উঁচু করা বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবব্ধুর সেই ভাষণ যেন মুক্তির বার্তা। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে বাঙালীর সেই রক্তক্ষয়ী বীরত্বের ইতিহাস।

সঠিক ইতিহাস জানা জরুরী তাই মুক্তিযোদ্ধা সন্তান প্রজন্মেরর দায়বদ্ধতার যায়গা অনেক। যদি একতাবদ্ধ হয়ে সামনের দিন গুলোতে মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণামুলক মনোভাব গঠন করতে পারি সবাই তাহলে এ দেশ সুসংগঠিত হয়ে যাবে। দেশপ্রেম এর নিদর্শন তৈরী করতে হবে পরিবার থেকেই। তাই প্রত্যেকে প্রত্যেকের যায়গা থেকে বড়দের কাছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যতটা পারি এখনি সংরক্ষনে রাখা উচিত যেন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে দেশের অভ্যুদয়ের সেই গাঁথালিপি টির তুলে দিতে পারি। মুক্তিযুদ্ধের ও মুক্তিযোদ্ধা দের শ্রেষ্ঠ মুল্যায়ন এভাবেই হবে।

মুহতাসিম বিল্লাহ মারুফ
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান

আমরা বাঙ্গালী পৃথিবীর বুকে একমাত্র জাতি যারা মায়ের ভাষা বাংলায় কথা বলার জন্য জীবন দিয়েছি, মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বুকের তাজা রক্ত দিয়েছি। নিজের গর্ব হয় একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে। মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গিয়েছিলেন জানতেন না জীবন নিয়ে ফিরবেন কি না। অনেক রক্ত, প্রাণ আর ত্যাগের বিনিময়ে এসেছে আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতা।

আমরা পালন করেছি স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। কিন্তু সে স্বপ্ন দেখে আমাদের পূর্বপুরুষরা কাধে অস্ত্র ধরেছিল সেই স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি। এখনো বাংলাদেশে পরিপূর্ণ দুর্নীতি মুক্ত হয়নি ধনী আর গরীবের বৈষম্য এখনো আকাশ পাতাল পার্থক্য এখনো দেশে একটি চাকুরীর জন্য শত শত জন লাইনে দাঁড়ায়। আমাদের এই স্বাধীনতা দিবসে শপথ নিতে হবে, দেশকে দূর্নীতি মুক্ত উন্নত সোনার বাংলায় পরিনত করতে যে যার অবস্থানে থেকে নিজের কাজটি সততা নিষ্ঠা আর দেশপ্রেমের সাথে করতে হবে, স্বাধীনতার সুফল বাংলার প্রতিটি ঘরে পৌঁছাবে, তবেই লক্ষ শহিদের আত্না শান্তি পাবে।

জিদনী রহমান
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান

দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাংলাদেশে পেয়েছিল স্বাধীন দেশ। তাই এই স্বাধীনতা দিবসে সকল শহীদদের কে স্মরণ করছি মনের গভীর থেকে। তাই এই স্বাধীনতা দিবস নিয়ে আমরা তুলে ধরেছি স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা বার্তা। এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্যালেন্ডারে, স্বাধীনতা দিবস সমস্ত বাংলাদেশিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় দিন গুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি মানুষকে সম্মোধন করে স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের জন্য জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। বাংলাদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানও সংগঠনে দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। টেলিভিশন ও রেডিও তে আমরা দেশাত্মবোধক অনুষ্ঠান এবং প্যারাডে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও দেশাত্মবোধক গান শুনতে পাই। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ছোট ছোট শিশুরা মুক্তিযোদ্ধাদের পোশাক পড়ে তাদের বিভিন্ন কর্মকান্ড উপস্থাপন করে।

পতাকা উত্তোলন করার সময় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় যা আমাদের হৃদয়কে অত্যান্ত গর্ব ও উদ্দীপনায় ভরিয়ে দেয়।স্বাধীনতা দিবসে সকল সাহসী মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াই করার ক্ষমতা আমাদেরকে সংগ্রামী হতে সাহায্য করে। সেই বিষয়ে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি দেশের প্রতি প্রতিটি মানুষকে সৈন্যর মতো রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন। স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যুদ্ধবিমান এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জিনিস আকাশে তৈরি করে দেখান। স্বাধীনতা দিবস আমাদের দেশের তরুণদের হৃদয়ে দেশপ্রেমও জাতীয়তাবাদকে পরিপূর্ণ করে। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

আজিম মোল্লাহ আজিম
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান

আমরা বাঙালি।২৬ মার্চ আমাদের জীবনে এক অবিস্মরণীয় দিন। আমাদের স্বাধীনতা দিবস।আজ আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহিদদেরকে। ৩০লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আজ এই দিনে মনে পড়ে যায় সেই ১৯৭১ সালের সেই ২৫ মার্চ কালো রাতের কথা। কি ভয়াবহ বা নরকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।

সেই কথা স্মরণ করতেই গা শিহরে ওঠে। পাকিস্তানি নরপিশাচরা রাতের আধারে নিরীহ বাঙালীদের উপরে শুরু করে গণহত্যা।আর এই রাতেই জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। পরে তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। সেই রাত থেকেই বাঙালীরা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং অস্ত্র হাতে ঝাপিয়ে পড়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে। ১৬ ই ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে।আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক। আমরা জানি স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে, স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করতে হবে। বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষে কাজ করে যেতে হবে।

বিশেষ করে আজকের তরুণদের কে সচেষ্ট থাকবে।তাদের কে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে এবং সর্বোচ্চ দিয়ে স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করার আহ্বান জানাই। জাতির পিতার আঙ্গুলী নির্দেশ এবং বাঙালির মুক্তির মুলমন্ত্রকে সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। জাতির পিতার সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যেতে হবে তরুণ প্রজন্মের।

ঢাকা, ২৬ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিআইটি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ