Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

এক মাসেও নিয়োগ হয়নি রাবির ভিসি, প্রো-ভিসি!

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৭, ০২:২০

 

রাবি লাইভ: এক মাস হতে পূর্ণ হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রশাসনের দুই পদ শূণ্য। গত ১৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি ও প্রো-ভিসি মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাসেও কাউকে নিয়োগ দেননি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর। বিগত এক মাসে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই পদে কেউ না থাকায় বিপর্যস্ত ও অচল হয়ে পড়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উচ্চ শিক্ষার বিদ্যাপিঠটির কার্যক্রম। এছাড়া কাউকে দায়িত্বভার না দেওয়ায় কর্মকর্তা কর্মচারীরা চলছেন নিজ খেয়াল খুশিতে।


তবে অভিভাবকহীন চলার অভিজ্ঞতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২১তম ভিসি প্রফেসর আব্দুস সোবহান ও ১১তম প্রো-ভিসি প্রফেসর নুরুল্লা হকের মেয়াদ ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার পর মোট ২৩ দিন ভিসি, প্রো-ভিসি ও কোষাধ্যক্ষ ছাড়াই ছিলো এই বিশ্ববিদ্যালয়। ওই ২৩ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক দায়িত্ব কে পালন করেছে তার সঠিক হিসেব এখন পর্যন্ত নেই বলে জানা গেছে।


বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি না থাকার সমস্যা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি দফতরের সাবেক একজন সচিব ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, পরীক্ষার ফল প্রকাশ থেকে মূল সনদপত্র উত্তোলন, ভর্তি কার্যক্রম থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন সবকিছুই থমকে আছে। গত এক মাসে যাবৎ হচ্ছেনা সিন্ডিকেট সভা, একাডেমিক কমিটির সভা, ফাইনান্স কমিটির সভা। দেশের বাইরে যে শিক্ষকগণ গবেষণাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে যাবেন তাদের নো অবজেকশন (এনওসি) সার্টিফিকেট আটকে আছে।


সংস্থাপন-শিক্ষক শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৩০ শিক্ষক গবেষণাসহ বিভিন্ন কাজে দেশের বাইরে যাওয়ার আবেদন করেছেন। দফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. শেখ সাদ আহমেদ বলেন, ভিসির স্বাক্ষর ব্যতিত তাদেরকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট প্রদান করতে পারছেন না তারা।


এদিকে মূল সনদপত্র পেতেও প্রায় ২ শতাধিক শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। কিন্তু সনদপত্র পাচ্ছেন না। এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. মো আসাবুল হক বলেন, ৪ শত ২০ টি মূল সনদ তৈরি হয়ে আছে। এগুলো ভিসির স্বাক্ষরের জন্য ঝুলে আছে। তাই শিক্ষার্থীদের প্রদান করতে পারছেন না। এছাড়া শতাধিক শিক্ষার্থীদের ফাইল আটকে আছে একাডেমিক শাখায়।


এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ দফতরগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। অফিসে সময় দিলেও হয়, না দিলেও হয়, এটা ইচ্ছা স্বাধীন হয়ে গেছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের। চায়ের দোকানের আড্ডায় ব্যস্ত তারা। অফিসটা যেন চায়ের দোকানেই।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, প্রশাসনের দুই পদে না থাকলে চাপ কম থাকে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের কোন জবাবদিহিতা থাকে না। এজন্য আড্ডায় সময় কাটানো ব্যাপারটা বাস্তব সত্য। নিজেও চায়ের দোকান থেকে এসেছেন বলে স্বীকার করেন তিনি।


জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার ড. এন্তাজুল হক ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, আমাদের যতটুকু কাজ তা আমরা শেষ করছি। ভিসি ও প্রো- ভিসির যে কাজ সেগুলো করা যাচ্ছে না। কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
কবে নাগাদ এ সমস্যার সমাধান হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা চ্যান্সেলরের এখতিয়ার। তিনি যখন নিয়োগ দেবেন সেটা তিনিই ভাল জানেন।


বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর সায়েন উদ্দিন আহমেদ ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, অচল অবস্থার মধ্য দিয়ে একমাস পার হতে চলেছে। বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে আছে এত বড় একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সকল ধরনের কাজ বন্ধ। উপর মহলে বার বার জানানো স্বত্ত্¦েও তারা বিষয়টি সমাধান করছেন না।


এদিকে ভিসি ও প্রো-ভিসি পদে নিয়োগ পেতে শিক্ষকদের অনেকে নিজেদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। একাডেমিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে যোগ্যতার ভিত্তিতে বেশ কয়েকজন শিক্ষকের নাম শীর্ষ দুই পদের জন্য আলোচিত হচ্ছে। এদের মধ্যে ভিসি পদে আছেন, সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয় ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. এম আব্দুস সোবহান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের বর্তমান আহ্বায়ক ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের শিক্ষক রকীব আহমেদ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি প্রফেসর আবুল কাশেম।


এছাড়া প্রো-ভিসি পদে শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক আনন্দ কুমার সাহা, ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা ও সমাজকর্ম বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সাদেকুল আরেফিন মাতিন প্রমুখ।


উল্লেখ্য, গত ১৯ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ও প্রো-ভিসি প্রফেসর  চৌধুরী সারওয়ার জাহানের মেয়াদকাল শেষ হয়। ফলে শূণ্য হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দুই পদ। তিন দিনের মধ্যে এই শূণ্যপদে ভিসি ও প্রো-ভিসি প্রফেসর  পদ পূরণের নিয়ম থাকলে গত এক মাসে এই দুই পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

 

ঢাকা, ১৯ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমএইচ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ