রাবি লাইভ: করোনায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর খুলেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস। এ সুযোগে ক্যাম্পাসে মাদকসেবীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বহুগুণ।
বিগত সময়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ফেনসিডিল, বিয়ারসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের খালি বোতল সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি সভা ডেকে ক্যাম্পাসকে মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স' ঘোষণা করেন। এখনো ক্যাম্পাসে কমেনি মাদকের ছড়াছড়ি। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ক্যাম্পাসকে মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে মাদকসেবীরা।
এতোদিন ক্যাম্পাসের সাবাস বাংলাদেশ মাঠ, শেখ রাসেল চত্বরের মাঠ (ইবলিশ চত্বর), পশ্চিমপাড়া, নবাব আব্দুল লতিফ হলের মাঠের হেলিপ্যাড, শহীদ হাবিবুর রহমান মাঠ, স্যার জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের পেছনে তুঁতবাগান এলাকায়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনের পশ্চিম পাশে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গোরস্তান এলাকা, কৃষি প্রকল্পের গবেষণা মাঠ, চারুকলা ও কৃষি অনুষদ সংলগ্ন মাঠ ও রাস্তার পাশেসহ বিভিন্ন স্থানে ফেনসিডিল, বিয়ারসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্যের খালি বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসমাইল হোসেন সিরাজী একাডেমিক ভবনের বাথরুম এবং বিল্ডিংয়ের পাশে গাড়ী পার্কিংয়ের টিনের ছাওনি ওপরে ফেলে রাখা হয়েছে এ ধরনের মাদকদ্রব্যের বোতল।
এ নিয়ে শনিবার “রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার” ফেসবুক গ্রুপে ফেনসিডিল বোতলের স্তুপ করা একটি ছবি পোস্ট করা হলে সেখানে শিক্ষার্থীদের মাঝে ওঠে সমালোচনার ঝড়।
শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম নাঈম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, 'পাঠ্যপুস্তকভিত্তিক শিক্ষা ও কেবল সনদ প্রদানই মূল উদেশ্য নয় বরং মেধাবিকাশ, উন্মুক্ত চিন্তা-চেতনার উন্মেষ, বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা প্রয়োগের শ্রেষ্ঠ কেন্দ্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি, গবেষণা ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে যাতে শিক্ষার্থীরা সম্পৃক্ত হতে পারে তার দ্বার উন্মোচন করাই হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
আমরা অনলাইন মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের বাথরুম থেকে অনেক গুলো ফেনসিডিল এর বোতল পাওয়া গেছে। এই ঘটনা আমাদের কাছে পীড়াদায়ক এবং উদ্বেগের। ক্যাম্পাস শাহ মাখদুম হলের পাশ থেকে শুরু করে হাবিবুর হলের সামনের মাঠ ও পুকর পাড় গুলোতে অনেক ফেনসিডিলের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়। শুধু ফেনসিডিল নয় অনেক হলে রীতিমত ইয়াবা, গাঁজা সেবনের মত ঘটনা ঘটছে।
গত ১৭ আগস্ট ২০২১, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বিবিসি এর এক বিবৃতিতে বলেছেন, মাদককে নিরুৎসাহিত করতে চাকুরীতে ঢোকার সময় এবং বছরে একবার সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা মাদক পরীক্ষা বা ডোপ টেস্টের আওতায় আসবেন। এবং এই টেস্টে যারা পজিটিভ হবেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্ট পদ্ধতি চালু করাসহ যারা এই সমস্ত মাদক সেবন এবং ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।'
মারুফ হাসান নামে আরেক শিক্ষার্থী ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী একাডেমিক নতুন ভবনের বাথরুমে দেখা মিললো বোতল গুলোর। আমরা মাদকমুক্ত রাবি ক্যাম্পাস চাই।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর লিয়াকত আলীর ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন,' এ ধরনের তথ্য এখনো আমরা পাইনি। কোথায় কোথায় ব্যবহার করছে এ তথ্যটা আসাটা প্রয়োজন। আমরা মাদকের ওপর জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছি।
এসময় তিনি আরো বলেন, তবে কেও যদি এসে ফেলে দিয়ে যায় কিংবা গোপনে কিছু করলে ত দেখতে পাব না। তবে আমরা চেষ্টা করছি সব জায়গায় বহিরাগত হোক কিংবা ভেতরের কেও এ ব্যাপারগুলো আমরা দেখার চেষ্টা করছি। যে যে জায়গায় এসব মাদক সেবন হয় আমরা মনিটরিং করছি।'
ঢাকা, ০৬ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: