পাবনা লাইভ : ক্লাসে সবসময় ফার্স্ট হতেন রিকাত আনযুম নাজিফা। বর্গাচাষীর ঘরে জন্ম নিয়েও এসএসসিতে সেরা সাফল্য দেখিয়েছেন তিনি। টানাটানির সংসারে খেয়ো না খেয়েই পড়াশোনা করতে হয়েছে। তবে অভাব তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। জেএসসি ও পিইসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ এর পর এবার এসএসসিতেও তিনি সেরা সাফল্য দেখিয়েছেন। কোচিং ছাড়াই পাবনার সুজানগর উপজেলায় ১৩শ’ নম্বরের মধ্যে ১২১৯ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় ২য় হয়েছেন নাজিফা। তবে এত ভালো ফল করেও পড়াশোনা নিয়ে শংকার মধ্যে আছেন নাজিফা।
নাজিফা বলেন, আমি আরো ভাল লেখাপড়া করে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। কিন্ত দরিদ্র পরিবারের পক্ষে ভবিষ্যতে আমার লেখাপড়ার খরচ জোগানো সম্ভব নয়। তাই এইচএসসিতে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন তিনি।
জানা গেছে, নাজিফা সুজানগর শহীদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। তিনি পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের কোলচুরী গ্রামের দরিদ্র আব্দুল কদ্দুস শেখের মেয়ে। এর আগে একই বিদ্যালয় থেকে জেএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং ৪০ নং ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন তিনি। নাজিফারা ২ বোন ১ ভাই। নাজিফার পিতা একজন দরিদ্র কৃষক। তাদের সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয় পিতার। আর তাই আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বর্তমানে মেয়ের পড়া লেখা নিয়ে শঙ্কিত মা-বাবা।
নাজিফার বাবা আব্দুল কুদ্দুস শেখ জানান, অভাবের সংসারে মাঠে সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করি এবং আমার স্ত্রী বাড়ীতে হাঁস মুরগী পালন করে সংসারের খরচ চালায়। মেয়ের লেখাপড়ার খরচ দিতে পারি না। নাজিফা মেধাবি এবং দরিদ্র পরিবারের হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সহযোগিতায় ভালো ফল করেছে।
সুজানগর শহীদ দুলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনসুর আলী জানান, নাজিফা তার বিদ্যালয়ের অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্রী। সকল পরীক্ষাতেই প্রথম হত নাজিফা। এসএসসি পরিক্ষায় মোট ১৩০০ মার্কসের মধ্যে ১২১৯ পেয়ে সুজানগর উপজেলার মধ্যে ২য় স্থান অর্জন করেছে সে।
ঢাকা, ০৯ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: