রাবি লাইভঃ ধিক্কার। বর্বর। একজন শিক্ষক হয়েও তার নৈতিক স্খলন ঘটেছে। রাখতে পারেননি তার মান-সম্মান। অবশেষে ধরা খেলেন নিজ ক্যাম্পাসেই। রইলো না কোন ইজ্জত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের এক শিক্ষককে নিয়ে এই অভিযোগ। নানান দেন দরবার। আলোচনা। কিছুই কাজে আসেনি। অবশেষে বিষয়টি গড়াল থানা পুলিশে। ওই শিক্ষকের নাম আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী।
তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির মামলা করেছেন বিভাগের এক ছাত্রী। শুক্রবার নগরীর চন্দ্রিমা থানায় ওই ছাত্রী মামলা করেন। চন্দ্রিমা থানার ওসি সিরাজুম মনির জানান আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। আমরা বিষয়টি আমলে নিয়ে তদ্ন চালাবো। ঘটনা সত্য হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো জানান, চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির মামলা করেছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। অভিযোগ কারী ১জন নয়। তার সঙ্গে আরোও অনেকেই আছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষকতা করছি। কাজের খাতিরেই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বলতে হয়। তবে কখনো অশালীন কিছু বলেছি বলে আমার মনে পড়ে না। আমি রাজশাহী অঞ্চলে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল সংক্রান্ত সব কাজ করেছি। এজন্য কোনো শিক্ষক তাদেরকে ইন্ধন দিয়ে, আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ করিয়েছে।
প্রসঙ্গত গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি নিপীড়ন নিরোধ সেলে ১৩ জন ভুক্তোভোগী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন। অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুষদের ১২ ছাত্রী যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গত বুধবার ২৬শে ফেব্রুয়ারী ২০ইং তারিখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন নিরোধ সেলে ভুক্তভোগীরা পৃথকভাবে এ অভিযোগ করেন। তাদের অভিযোগের সঙ্গে অনুষদের এক ছাত্রও তার বান্ধবী ও অনুষদের সিনিয়র ছাত্রীদের যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেলের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু। উপদেষ্টা বলেন, ছাত্রীরা অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের সঙ্গে তারা কিছু প্রমানও আমাকে দিয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগে ছাত্রীরা উল্লেখ করেন, অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী প্রায়ই অনুষদের ছাত্রীদের সঙ্গে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল কথাবার্তা বলেন। ছাত্রীদের শরীর নিয়েও বাজে মন্তব্য করেন। এমনকি ছাত্রীদেরকে ম্যাসেঞ্জারেও বিভিন্ন সময়ে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ভিডিও পাঠায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রীরা বলেন, অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী দ্বারা বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্তের শিকার হই।
তিনি আমাদেরকে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মন্তব্য করেন। ফ্রি মাইন্ডের কথা বলে নানা রকম ইঙ্গিতপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলেন। যার কারণে আমরা মানসিকভাবে অনেক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। কিন্তু পরীক্ষায় নম্বর কম দেবে এই ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পাই না। আরেক ছাত্রী বলেন, স্যার ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলার সময় শরীরে হাত দেন, গালে হাত দেন। কোনো ছাত্রী গোসল করে ক্লাসে আসলে তিনি বাজে মন্তব্য করে কথা বলেন।
ঢাকা, ০১ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: