হাবিবুল বারি হাবিব, শিবগঞ্জঃ খাদিজা খাতুন। একটি মেধা। একটি নাম। হতদরিদ্র পরিবারে থেকেও তার অদম্য স্পৃহার ঘাটতি ছিল না। ছোট থেকেই ডাক্তার হওয়ায় স্বপ্ন লালন করতেন হৃদয়ে। কিন্তু টানাপোড়েনের সংসার। বাবা- মাকে সব সময় সহযোগিতা করেছেন। ফাঁকে ফাঁকে পড়েছেন অত্যন্ত মনোযোগি হয়ে।
মুখ খুলে বলতে সাহস পাননি তিনি। কিন্তু মনের জানালা সব সময় খুলে রেখেছেন। তার স্বপ্ন-স্বাদের কথা তিনি হৃদয়ে একে রেখেছিলেন শক্ত করে। তাইতো তিনি এবার মেডিকেলে ভর্তি যুদ্ধে সফল হয়েছেন। চান্স পেয়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজে।
জানাগেছে শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের রানীবাড়ী গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান খাদিজা খাতুন। তিনি এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার মেধা তালিকায় ক্রমিক নম্বর -১৭৮১।
দিনমজুর পিতা জালাল উদ্দিন ও মাতা জোসনা বেগম সন্তানের লেখাপড়ার খরচ যোগানোর চিন্তায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। কিভাবে তিনি খরচ যোগাবেন, কিভাবে আসবে অর্থ এনিয়ে অনেকটাই বিব্রত। বাবা জালাল উদ্দিনের কোন জায়গা জমি নেই। খাস জমিতে আছে বাঁশের বেড়ার তৈরি বাড়ি নামের ক'খানা ঘর ।
বাবা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বর্তমানে ৭জনের এ পরিবারের অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরায় । খাদিজা খাতুন ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী । তিনি পিএসসি পরীক্ষাসহ সকল পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড জিপিএ পেয়েছেন।
জালাল উদ্দিন বলেন, রানীবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে খাদিজা। মানুষের কাছ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে এতদিন তার পড়ালেখার খরচ চালিয়েছি। কিন্তু এখন একসঙ্গে অনেক টাকা লাগবে। এ অবস্থায় আমার পক্ষে তার লেখাপাড়ার খরচ চালানো সম্ভব নয়।
খাদিজা খাতুন ক্যাম্পাসলাইভকে জানায়, ছোট থেকে তার ডাক্তার হওয়ার খুব ইচ্ছে। তার ইচ্ছে পূরণের জন্য লেখাপড়ার পিছনে অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছেন । সে তার লেখাপড়ার খরচ নিয়ে চিন্তিত।
খাদিজার এমন সাফল্যে আনন্দে ভাসছে পুরো পরিবার। শুধু পরিবারই নন, খাদিজার এমন সফলতায় খুশি গ্রামবাসীরাও। কিন্তু চিন্তায় পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাকে কীভাবে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করবেন? আর কীভাবে পড়াশোনার খরচ চলবে-এমন দুঃশ্চিন্তায় পরিবারের লোকজন। অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তার মেডিকেলে ভর্তি হওয়া নিয়ে।
যদি টাকা পয়সার অভাবে লেখাপড়া মাঝপথে থমকে যায়, তাহলে কি হবে? খাদিজার স্বপ্ন পূরণের জন্য লেখাপড়ার খরচ যোগানোর লক্ষ্যে দেশী-বিদেশী সাহায্য সংস্থা , এনজিও ও স্বহৃদয় দানশীল ব্যক্তিরা তার লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলে খাদিজার স্বপ্ন পূরণ হবে হয়ত ।
দানশীল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের দিকে তাকিয়ে আছেন এই হত দরিদ্র পরিবার। যদ কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ায় তাহলে তারা চির কৃতজ্ঞ থাকবেন।
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: