রাবি লাইভ: দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের অহিংস ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বার বার ছাত্রলীগের হামলা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষকরা। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২৩ নং কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের অবস্থানের কথা তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষকদের পক্ষে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি আ আল মামুন বলেন, গত মার্চ মাস থেকে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে দল মত নির্বিশেষে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে। তাদের এই জনসমর্থিত আন্দোলন অহিংস ও শান্তিপূর্ণ ছিল। নিজেদের স্বার্থ সংশিষ্ট দাবি দাওয়া নিয়ে তারা আন্দোলন সংগ্রাম করতেই পারে। এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।
কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সম্প্রতি কিছু ঘটনা আমাদেরকে বিপুলভাবে উদ্বীগ্ন করেছে। এই আন্দোলন শুরুর পর থেকেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নানাভাবে পুলিশি হেনস্থা ও হুমকি ধামকির শিকার হতে হয়েছে। গত শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে একটি শান্তি পূর্ণ জমায়েতের উপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নির্মমভাবে প্রহার করা হয়।
বক্তব্যে আরও বলা হয়, পরের দিন হামলার প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনকারীদের উপর ছাত্রলীগ দফায় দফায় সশস্ত্র হামলা চালায়। পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা করা হয়। ধারাবাহিক আন্দোলনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নাগরিক সমাবেশেও পুলিশের হামলা হয়।
সেখানে শিক্ষকসহ কয়েকজন অভিভাবক লাঞ্চিত হয়। কিন্তু হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও প্রশাসনের কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় নি। তবে আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার, মামলা দেওয়া ও রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় পরিসরে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্বাধীন মতামত প্রকাশ ও আত্মমর্যাদা ও জীবনের নিরাপত্তা আরও সংকুচিত করে তুলেছে বলে মনে করি।
এদিকে রাজশাহী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্দোলনকারীদের উপর হামলায় যারা যুক্তছিল তাদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা এবং যেসব শিক্ষার্থী গ্রেফতার হয়েছে তাদের ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান শিক্ষকরা।
নিপীড়নের বিরূদ্ধে অবস্থান নেয়া শিক্ষকরা হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সেলিম রেজা নিউটন, ড. মাহাবুবুর রহমান, আব্দুল্লাহ বাকী, কাজী মামুন হায়দার, শাতিল সিরাজ, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন, ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিরুল ইসলাম কনক, সুস্মিতা চক্রবর্তী, নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর বখতিয়ার আহমেদ, নাট্যকলা বিভাগের প্রফেসর কাজী শুসমিন আফসানা, ড. হাবিব জাকারিয়া, বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. সৌভিক রেজা এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর সৈয়দ মুহাম্মদ আলী রেজা।
ঢাকা, ০৬ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: