রাবি লাইভ: হলে সিট বাণিজ্যের নিউজ করার জেরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শাহ মখদুম হল প্রাধ্যক্ষ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে হুমকি দেয়ার মিথ্যা অভিযোগে দৈনিক ইত্তেফাকের রাবি সংবাদদাতার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। মতিহার থানায় সাংবাদিক মো. মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে এই জিডি করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বুধবার নগরীর মতিহার থানার ওসি শাহাদাত হোসেন ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, মঙ্গলবার প্রাধ্যক্ষ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম জিডি করেন। যার নম্বর ‘জিডি-১১৪৫’।
সাধারণ ডায়েরিতে প্রাধ্যক্ষ ড. জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, ‘মো. মেহেদী হাসান দীর্ঘদিন যাবত শাহ্ মখদুম হলের এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে অশোভন আচরণ করে আসছে। অতি সম্প্রতি সে এক প্রাধ্যাক্ষকে এক কোপে গলা কেটে নেয়া, দায়িত্বরত ব্লক সুপারকে অফিসিয়াল কর্তব্য পালনকালে পেটানো এবং প্রয়োজনে গলা কেটে নেয়ার হুমকি প্রদানসহ অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে চলেছে।
হলে অবৈধভাবে বসবাসকারী ও অ-ছাত্র এই ব্যক্তির আপত্তিকর আচরণ, মিথ্যাচারের কারণে বিগত সময়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, সম্প্রতি আরো বেশি অনিয়ম, মিথ্যাচার, হুমকি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ অফিস কার্যক্রমে বাধা প্রদান করছে।’ এছাড়া একই অভিযোগে বুধবার দুপুরে ড. জাহাঙ্গীর আলম ভিসি বরাবর একটি অভিযোগপত্রও দিয়েছেন।
শুধু হয়রানি করতেই এবং সাংবাদিকতায় বাধা সৃষ্টি করতেই এ জিডি করা হয়েছে উল্লেখ করে মেহেদী হাসান ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, গত তিন বছর আগে ‘হল প্রধ্যাক্ষকের প্রত্যক্ষ মদদে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্য’ শিরোনামে দৈনিক ইত্তেফাকে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর থেকেই হল থেকে বের করে দেয়ার জন্য তিনি আমার বিরুদ্ধে লেগে আছেন।
বিভিন্ন সময়ে প্রাধ্যক্ষ আমার রুমে পিয়ন পাঠিয়ে মানসিক চাপ দিয়ে আসছিলেন। এসব বিষয়ে অত্যন্ত বিনয়ের সাথে প্রাধ্যক্ষের সাথে সরাসরি ও মুটোফোনে কথা বলতে গেলে তিনি কথা বলতেন না। বরং শিক্ষকসুলভ আচরণ কখনোই দেখান নি।
আমি হলের আবাসিক ছাত্র। গত ০৪ জুন সকাল সাড়ে ৯টায় কোনো পূর্ব নোটিশ ছাড়াই হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। প্রাধ্যক্ষের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কোনো কথা না বলে হল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
ওইদিন এ বিষয়ে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহানকে মৌখিকভাবে জানালে তিনি হলে অবস্থানের জন্য অনুমতি দেন। কিন্তু হল প্রাধ্যক্ষ ভিসির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গত ২৫ জুন কোনো কারণ ছাড়াই হল ত্যাগের নির্দেশ দেন।
এরপর দিন তিনি দুইজন আবাসিক শিক্ষক, হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে আমার রুমে এসে বিছানাপত্রসহ সবকিছু নিয়ে চলে যায় এবং কক্ষে তালা দেয়। এছাড়াও আমাকে নানা রকম অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। যা একজন শিক্ষক কখনোই ছাত্রের সঙ্গে এমন ভাষায় গালিগালাজ করতে পারেন না। তিনি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই আমার সাথে এসব করছেন।’
উল্লেখ্য, এর আগেও হল প্রাধ্যক্ষের অনিয়ম, সেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করার জেরে দৈনিক সানশাইন ও পরিবর্তন ডট কমের রাবি প্রতিনিধি জাকির হোসেন তমালকে কোনো কারণ ছাড়াই হল থেকে বের করে দেন এই প্রাধ্যক্ষ।
এদিকে সম্প্রতি হলের প্রায় দুই বছর ধরে বিপ্লব নামে এক কর্মচারী পদে না থাকলেও তার নামে টাকা উত্তোলন করার অভিযোগে এই প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঢাকা, ২৭ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: