Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

রাবির ছাত্র লিপু হত্যা : ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ, তদন্তে ভাটা

প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বার ২০১৬, ২০:৫২

মনিরুল ইসলাম নাঈম, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোত্তালিব হোসেন লিপুর হত্যাকাণ্ডের একমাস হতে চলেছে। গত ২০ অক্টোবর সকালে বিশ্ববিদ্যালয় নবাব আব্দুল লতিব হলের নর্দমা থেকে লিপুর লাশ উদ্ধার করা হয়।

তবে নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন ক্লু বের করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে লিপুর রুমমেট মনিরুল ইসলামের (বোটানি দ্বিতীয় বর্ষ) নিকট থেকে তেমন কিছু বের করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। গত ৭ নভেম্বর তাকে জামিনে মুক্তি দেয় আদালত। ফলে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা অনেকটাই ভাটা পড়েছে।

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে অনেকটা হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। নৃশংস এমন হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আন্দোলন অব্যহত রেখেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ‘অপরাধীদের সণাক্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া না পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে’।

তবে লিপুর এমন হত্যাকাণ্ড নিয়ে রহস্যের গুঞ্জন থেকেই যাচ্ছে। লিপুকে তেমন কোন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকতে দেখা যায়নি। এছাড়াও আত্মহত্যার কোন আলামত পাওয়া যায়নি ময়না তদন্তে। মাথার ডান পাশে বড় ধরনের আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন রামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সিনিয়র লেকচারার ডা. এনামুল হক।

এদিকে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে প্রতিনিয়ত হলে বিভিন্ন পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে আনাগোনা করা হলেও এখন সেই আনাগোনা আর নেই। কয়েকদফায় হলের নৈশ্য প্রহরী মনির ও নয়নকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরেও এখনো কোন তথ্য বের করা পুলিশের পক্ষে সম্ভব হয়নি। লিপুর এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ মুখ খুলতেও অনেকটা নারাজ।

তবে ডিবির ওসি (তদন্ত) অশোক সোবহান ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, তাদের নিকট থেকে কিছু পাইনি এটা বললে ভুল হবে। কিছুতো অবশ্যই পাওয়া গেছে। তাদের কথার ভিত্তিতে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট করে কিছু বের করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের এক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন পরে পুলিশসহ ডিবির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা তদন্তের জন্য এসেছিল। রুমে রুমে এসে বিভিন্ন জিজ্ঞাসাবাদ করতো কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে কাউকে আর দেখা যাচ্ছে না।

লিপুর কয়েকজন সহপাঠী ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, প্রায় এক মাস হয়ে যাচ্ছে লিপু হত্যাকাণ্ডের। পুলিশ ইচ্ছা করলে তদন্ত করে সব কিছুই বের করতে পারে। আসলে তারা ইচ্ছা করে বের করছে না। যদি আমাদের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে বলা হয় তাহলে তারা কোন সঠিক জবাব দিতে পারে না। তারা বলে, তদন্ত চলছে কিন্তু এ তদন্ত আর কতো দিন চলবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত যতগুলো হত্যাকাণ্ড হয়েছে প্রশাসন কোন সুষ্ঠু বিচার করতে পারেনি।

এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন কবির ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে আমাদের কোন অবহেলা নেই। পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি অচিরেই সবকিছু বের করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি প্রদীপ কুমার পান্ডে ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, লিপুর পরিবার তেমন আর্থিভাবে স্বচ্ছল না যে তারা সর্বদা এই মামালা নিয়ে পড়ে থাকবে। আর বিভাগের পক্ষ থেকে যতটুক চেষ্টা করা যায় সেটা করা হচ্ছে। তবে প্রশাসন যদি সদয় না হয় তাহলে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব নয়।

উল্লেখ্য, গত ২০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নবাব আব্দুল লতিফ হলের পাশ থেকে লিপুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মহানগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার সরদার তমিজউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, ছাত্র উপদেষ্টা, জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রমুখ।

পরে বিকেলে লিপুর চাচা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। ঘটানর দিন রুমমেট মনিরুল ইসলামকে আটক করে পুলিশ। ৭ নভেম্বর আদালত তাকে জামিন দেয়। ৮ নভেম্বর জেল থেকে ছাড়া পায় মনিরুল।




ঢাকা, ১৬ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ