Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

শাবিতে হল প্রভোস্টের ‘দুই টাকা থিউরি’ নিয়ে তোলপাড়

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বার ২০১৭, ০৩:১৫

শাবি লাইভ : শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলের ডাইনিংয়ে ‘দুই টাকা থিউরি’ চালু করা হয়েছে। ওই হলের প্রভোস্ট এমন থিউরি চালু করেছেন। থিউরি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মিল প্রতি ২ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। ওই টাকা যাচ্ছে হল প্রভেস্টের ফান্ডে। কোন রশিদ ছাড়া ডাইনিং পরিচালক অনিল চন্দ্র সাহার কাছ থেকে হলের কর্মচারীদের মাধ্যমে ওই অর্থ আদায় করা হচ্ছে। অথচ এবিষয়ে জানেননা হলের দায়িত্বে থাকা চার সহকারী প্রভোস্ট। এনিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে শাবিতে।

অভিযোগ উঠেছে, ওই হলের প্রভোস্ট এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর শাহেদুল হোসাইন একাই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুই টাকা সরিয়ে নেয়ার বিষয়টিও জানেন না শাহপরাণ হলের সহকারী প্রভোস্ট আশিষ কুমার বণিক, কৌশিক সাহা, মোহাম্মদ জাবেদ কায়সার ইবনে রহমান এবং মো. ফেরদৌস আলম।

অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে শুক্রবার থেকে টোকেন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। মিল প্রতি ২টাকা যথাযথভাবে আদায় করতে দায়িত্ব দেওয়া হয় হলের ইলেট্রিশিয়ান আব্দুল আজিজকে। এসময় বিষয়টি শিক্ষার্থীদের নজরে আসলে তারা প্রতিবাদ করেন।

হলের ইলেকট্রিশিয়ান ও ঝাড়ুদার কেন ডাইনিংয়ের খাবার টোকেন দিচ্ছে, তার কাজ করবে কে? এমন বিষয় নিয়ে শিক্ষার্থীরা জটলা পাকালে এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের কথা শোনেন সহকারী প্রভোস্ট আশিষ কুমার বণিক। ডাইনিং পরিচালক অনিল চন্দ্র সাহার ভাষ্য মতে ডাইনিংয়ের দায়িত্ব নেওয়ার তিন দিন পর থেকে প্রভোস্ট মোহাম্মদ শাহেদুল হোসাইন তার কাছ থেকে প্রতি মিল বাবদ ২ টাকা নিয়ে নিচ্ছেন।

তিনি জানান, হলে খাবারের মিল প্রতি ২২ টাকা করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়। কিন্তু প্রতি মিলে ২ টাকা হল প্রভোস্টের ফান্ডে দিতে হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে প্রভোস্টকে টাকা না দিলে শুক্রবার থেকে হলের ইলেক্ট্রিশিয়ান এবং ঝাড়ুদারকে দিয়ে টোকেন সিস্টেম চালু করেন। যাতে মিলের সঠিক হিসাব রাখা যায় এবং হিসাব করে অতিরিক্ত দুই টাকা হল কর্তৃপক্ষ নিয়ে নিতে পারে। আমাকে প্রতি টোকেনে ২০ টাকা দিয়ে বাকী ২ টাকা হলের কর্মচারী নিয়ে প্রভোস্টের কাছে জমা দেবে বলে শুনেছি।

এসময়, এভাবে কত টাকা দেওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সাড়ে এগার হাজার টাকা হল কর্মচারিদের দিলেও আমাকে কোন রশিদ দেওয়া হয়নি। এমনকি বলা হয়েছে আমি সাড়ে নয় হাজার টাকা দিয়েছি। কর্মচারিদের হাতে আমি দুইধাপে টাকা দিয়েছি প্রথমবার সাড়ে সাত হাজার পরে চার হাজার। কিন্তু ওনারা দু’হাজার টাকার কথা অস্বীকার করছে। আগে থেকেই আমাকে পুরো বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে চেপে যেতে বলা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে শাহপরান হলে কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম চৌধুরী ও উচ্চমান সহকারী বদরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে প্রভোস্টের সাথে কথা বলতে বলেন। উভয়ে প্রভোস্টের উপর দায় চাপিয়ে গোজামিলের আশ্রয় নিয়ে ফোন রেখে দেন। হলের এই দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে সময়মত অফিস না করা ও বিকেলের আগেই অফিস ত্যাগ করার অভিযোগও রয়েছে। প্রভোস্টের সাথে সখ্যতার কারণে শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ কওে পার পেয়ে যায় এমন অভিযোগ অনেক শিক্ষার্থীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ছাড়া আর কোন কর্মকর্তার কক্ষে এসি না থাকলেও হলের এই দুই হল কর্মচারির বিলাসিতার জন্য তাদের কক্ষে এসি লাগানো হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থীর প্রশ্ন আবাসিক হলের কর্মচারিদের জন্য শীতের মধ্যেও এসি বিলাসিতার প্রয়োজন কতটুকু?

শাহপারণ হলের প্রভোস্ট এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর শাহেদুল হোসাইনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে এড়িয়ে যান। পরে উল্টো প্রশ্ন করেন আপনারা এখন ২টাকা নিয়ে রাজনীতি শুরু করবেন, তাই না?

বিষয়টি হলের সহকারী প্রভোস্টরা জানে কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তাদেরও জানা না জানার একটা সীমা আছে। যে দুই টাকা নেওয়া হচ্ছে সেটা দিয়ে পরবর্তীতে মিলের মান বাড়ানো হবে। টোকেন সিস্টেম চালু করা হয়েছে, সবাইকে এখন থেকে সিস্টেমের মধ্যে আসতে হবে। ডায়নিংয়ের মিলের টাকা কেন সহকারী প্রভোস্টেদের না জানিয়ে এভাবে রশিদ ছাড়া আদায় করতে হবে এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।

ঢাকা, ০২ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ