
এনইউ লাইভ: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনইউ) উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, আমাদের সকলের লক্ষ্য একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টি। সেই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টিতে লাইব্রেরি সায়েন্সের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জীবনের জন্য গোটা বিশ্বই এক গ্রন্থাগার। জীবনজুড়ে নতুন কোনো কিছু অনুন্ধানের জন্য লাইব্রেরিতে যেতে হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে লাইব্রেরির আবশ্যকতা রয়েছে। ঘর থেকে শুরু করে আকাশে, বিমানে, লঞ্চে, ট্রেনে জ্ঞান অন্বেষণের যে সোর্সগুলো রয়েছে তার প্রধানতম অনুষঙ্গ হচ্ছে লাইব্রেরি। তবে আধুনিক এই সময়ে এসে ভাবতে হবে বাংলাদেশের লাইব্রেরি সায়েন্স সনাতনী ব্যবস্থার মধ্যে আটকে আছে কিনা।
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর মধ্যে কোথাও কিছু বই-পুস্তক আছে সেটি লাইব্রেরি। নাকি একটি পরিবারে শিশু জন্ম লাভের পর থেকে ধীরে ধীরে তার ঘরের মধ্যে টেবিলে গড়ে ওঠে ছোট্ট লাইব্রেরি, স্কুলে লাইব্রেরি, একটি সভ্য সমাজে ট্রেনে চড়ে বসলে একজন যাত্রী সহজে বই পড়তে পারে। হাসপাতালে পড়তে পারে। এভাবে চলার প্রতিটি বাঁকে বাঁকে লাইব্রেরির যে সংযোগ সেটি নিশ্চিত করাই আধুনিক গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞানর লক্ষ্য হওয়া প্রয়োজন।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে সিনেট হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন-ক্যাম্পাস পিজিডি ইন লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স কোর্সের ৬ষ্ঠ ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্টিত হয়েছে। এ সময় ৫ম ব্যাচের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।
তথ্য-প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, জ্ঞান চর্চায় লাইব্রেরি সায়েন্সের পরিসর তখন অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও বিস্তৃত। এর মাধ্যমে আধুনিক, যুগোপযোগী, উদার, গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক ভাবধারায় সমৃদ্ধ মানস যদি জাগ্রত না হয়, তাহলে লাইব্রেরি শুধু ধূলোময় কিছু বইয়ের স্তুপে পরিণত হবে। একারণেই আধুনিক সমৃদ্ধ লাইব্রেরি প্রযুক্তি বান্ধব হওয়া আবশ্যক। আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা আছে। তা সত্ত্বেও লাইব্রেরিকে আধুনিক করতে যদি সফটওয়্যার দরকার হয়, ই-লাইব্রেরি, ই-জার্নাল দরকার হয়, তার সবকিছুই করতে আমরা প্রস্তুত। কারণ একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি হচ্ছে জ্ঞানার্জনের প্রধানতম স্থান।
গ্রন্থাগার বিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, আমি মনে করি আমাদের ৩৫ লক্ষ শিক্ষার্থীর হাতে একটি পাসওয়ার্ড থাকা উচিত। যেই পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ই-জার্নালে, ই-বুকে অধ্যয়নের সুযোগ পাবে। সেটি যদি আমরা না করতে পারি তাহলে আমরা একটি সনাতনী ব্যবস্থার লাইব্রেরির মধ্যে থাকবো, তা দিয়ে সমাজ পবির্তনের জায়গায় পৌঁছানো দুঃসাধ্য। সুতরাং শিক্ষা গ্রহণে যদি আমরা উৎকর্ষতা অর্জন করতে না পারি তাহলে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে পিছিয়ে থাকতে হবে। একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে আধুনিক লাইব্রেরি গড়ে তোলা জরুরি।
স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন ও লাইব্রেরি অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স বিভাগের কোর্স সমন্বয়কারী প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিন কাশেম, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরুজ্জামান, জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মো. আতাউর রহমান, পরিবহন দপ্তরের পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন, অর্থ ও হিসাব দপ্তরের পরিচালক মো. সাজেদুল হক, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা দপ্তরের পরিচালক মু. আখতারুজ্জামান, প্রকাশনা ও বিপণন দপ্তরের পরিচালক আ. মালেক সরকার, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক সুমন চক্রবর্তীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধানগণ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিসহ প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী।
ঢাকা, ০৯ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: