জাককানইবি লাইভ: নিয়ম ভেঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পরিচালনার নিয়ম অনুযায়ী বার্ষিক মৌখিক পরিক্ষার সময় বহিঃস্থ শিক্ষকের উপস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণের নিয়ম থাকলেও ওই বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষায় পরীক্ষা বিধি মানা হয়নি।
এছাড়াও বিভাগটির প্রধান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে বিভাগ পরিচালনা করে পরীক্ষার ফলাফলে ধস নামানোর অভিযোগও তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গতকাল বুধবার প্রফেসর নজরুলের বিরুদ্ধে নাম্বার টেম্পারিংয়ের অভিযোগ এনে সমাধান চেয়ে ভিসির কাছে অভিযোগপত্র জমা দেন।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৭টি সমস্যার কথা জানিয়ে ভিসি কাছে অভিযোগপত্র জমা দেয়। অভিযোগে উল্লেখিত সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে- অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ না করা, স্নাতকোত্তর শ্রেণীর মৌখিক পরীক্ষায় বহিঃস্থ শিক্ষকের অনুপস্থিতি, একজন শিক্ষকের একাধিক কোর্স গ্রহণ, স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অনভিজ্ঞ শিক্ষকদের ক্লাস গ্রহণ, থিসিস ও গবেষণা প্রদানে বিভাগের শিক্ষকদের অনীহা, শিক্ষকদের অসহিষ্ণু আচরণ এবং মাত্রাতিরিক্ত সেশনজট।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী তুষার ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, স্যার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। খাতা পূনমূল্যায়ন সম্ভব নয় বলে জানান স্যার। তবে খতিয়ে দেখে যদি কোন সমস্যা পাওয়া যায় সেবিষয়ে আইনের মধ্য থেকেও ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছে স্যার।
ভিসি প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠকে বিভাগ প্রধানের স্বেচ্ছাচারিতার কথা জানিয়ে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করতে অনুরোধ জানায় সমাধান চাওয়া শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্টির কথা শুনে আমি তাদের সঙ্গে বসে আলোচনা করেছি। তাদের সংকট গুলো জানার চেষ্টা করেছি। খুব দ্রুতই সমস্যা সমাধানে আমি কাজ করবো। ৭দিন পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমি আবার বসবো। আইনের মধ্যে যা করার থাকবে সেটিই করা হবে।
এদিকে অর্থনীতি বিভাগের সাবেক প্রয়াত শিক্ষক হাবীবুর রহমানের সঙ্গে বর্তমান বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. নজরুল ইসলামের দ্বন্দের বলি হয়েছেন প্রয়াত হাবিবুর রহমান মেয়ে জারমিনা রহমান। স্নাতক শ্রেণীতে বিভাগের সর্বোচ্চ রেজাল্ট ৩.৮২ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের জন্যে মনোনিত হলেও সেই শিক্ষার্থীর স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ফলাফলে নেমেছে ধস। শিক্ষক হতে চাওয়া জারমিনের সুযোগ বন্ধ করতেই পরিকল্পনা করে এমন কাজ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।
ভিসির সঙ্গে সাক্ষাতের পর শিক্ষার্থী জারমিনা রহমান বলেন, আমি কখনোই বাবার পরিচয় দিয়ে চলিনি। পড়াশোনা করেছি আর স্বপ্ন দেখেছি বাবার মতো আমিও শিক্ষক হবো। বাবা প্রয়াত হবার পরও আমি আমার পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। বিভাগের স্যারকেও আমি বাবার মতোই শ্রদ্ধা করি। আমি এমন ক্ষতিগ্রস্ত হবো তা কখোনই ভাবিনি। আমি খাতার পুনরায় মূল্যায়ন চাই।
অর্থনীতি বিভাগের পরীক্ষা সংক্রান্ত নিয়ম নিয়ে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আব্দুল হালিম ক্যাম্পাসলাইভকে বলেন, বার্ষিক মৌখিক পরীক্ষায় নিয়ম অনুযায়ী একজন বহিঃস্থ শিক্ষক থাকার বিধান রয়েছে। খাতা মূল্যায়নের জন্যেও বাইরের এক্সপার্টের কাছে প্রেরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে করোনাকালীন সময়ের জন্যে ভিতরের শিক্ষক দিয়েও মূল্যায়ন করার নিয়ম করা হয়েছিলো।
এদিকে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও অর্থনীতি বিভাগ প্রধান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা, ৩১ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেজে//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: