Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

যৌন হয়রানি : শাবিতে সেদিন যা ঘটেছিল

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০১৭, ১৯:১২

লাইভ প্রতিবেদক : শনিবার বিকেল বেলা। শান্ত ক্যাম্পাসের পড়ন্ত বিকেলের ওই ক্ষণটা বেশ উপভোগ্যই ছিল। ক্লাস নেই, পরীক্ষা নেই। বিকেলের আড্ডাটা বেশ জম্পেশ ছিল। শান্ত ক্যাম্পাসে হঠাৎ হৈ-চৈ আর হট্টগোল। ছাত্রলীগ নামধারী কিছু বখাটে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি গরম করে দিয়েছে। প্রথমে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও পরবর্তীতে এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবেকবান সাংবাদিকদের প্রতিবাদ ঘিরে শুরু হয় উত্তেজনা।

সেই উত্তেজনাকে আরো বাড়িয়ে দেয় রাতের আধাঁরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সাংবাদিকের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা। পেটাতে পেটাতে অজ্ঞান করে দেয়া হয় শাবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে। সহ-সভাপতিকে এসময় ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে শাবিতে একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়। শান্ত ক্যাম্পাস থেকে হঠাৎ অস্থিরতা ভর করে। ন্যাক্কারজনক ওই হামলার ঘটনা এখন দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সমালোচনার ঝড় বইছে চারিদিকে।

ছবি : যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় ছাত্রীর গালে চড় মারে মাহমুদুল হাসান রুদ্র (গোল চিহ্নিত)

জানা গেছে, শনিবার বিকেলে ঘুরতে আসেন সিলেটের সদ্য এসএসসি পরীক্ষা দেয়া এক ছাত্রী। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ফুফাতো ভাই। ক্যাম্পাসে এসে তিনি ছাত্রলীগ নামধারী কতিপয় বখাটেদের কবলে পড়েন। আজেবাজে মন্তব্য, মুখে সিগেরেটের ধোঁয়া ছাড়াসহ নানা অকথ্য ভাষা। এর প্রতিবাদ করার সঙ্গে সঙ্গে ওই ছাত্রীর গালে চড় বসিয়ে দেন ছাত্রলীগ নামধারী মাহমুদুল হাসান রুদ্র। পাশে থাকা পরিসংখ্যান বিভাগের সাজ্জাদ রিয়াদের মুখে তখন অকথ্য ভাষা। এসময় বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নামধারী বখাটে ওই ছাত্রীকে গালাগালি ও অসৈন্যমূলক আচরণ করে। ওই ছাত্রীর চোখ তখন ছলছল করছিল। চোখে-মুখে ঘৃণা আর ক্ষোভের চিহ্ন। সঙ্গে থাকা ওই ছাত্রীর ফুফাতো ভাইকেও তখন মারধর করা হয়েছে। পরে তারা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের জানান।

এসময় শাবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সরদার আব্বাস আলী, সহসভাপতি সৈয়দ নবীউল আলম দিপুসহ কয়েকজন সাংবাদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা উত্তম কুমার দাসের কাছে আসেন। তিনি চিহ্নিতদের খুঁজে বের করার কথা বলেন। তাদের চিহ্নিত করা হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন।

পরে ওই ছাত্রীর ইশারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টারের সামনে যৌন হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে পান সাংবাদিকরা। এসময় তাদের যৌন হয়রানির বিষয়টি জানতে চাইলে শুরু হয় উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। একপর্যায়ে ছবি তোলা হলে এনিয়ে হাতাহাতি শুরু হয়। ওই ছাত্রলীগ কর্মীরা শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থর অনুসারি ও তার নিয়ন্ত্রিত হলের কক্ষে থাকেন। বিষয়টি পার্থকে জানালে সেখানে আসেন পার্থ। তিনি এসে ছাত্রলীগ কর্মীদের পক্ষ নেন। তিনি সাংবাদিকদের মোবাইল কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলিট করে দেন। শুধু তাই নয় যৌন হয়রানির বিষয়ে তার কিছু করার নেই বলেও জানিয়ে দেন। এনিয়ে সাংবাদিকরা অনেকটা ক্ষোভ নিয়েই সেখান থেকে চলে আসেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের কাছে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী, তার ফুফাতো ভাই ও তার মামা।

এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সন্ধ্যার পর পার্থের নির্দেশেই সাংবাদিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালায় ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা। এসময় সরদার আব্বাসকে পিটিয়ে অজ্ঞান করে দেয়া হয়। নবীউল আলম দিপুকে ব্যাপক মারধর করা হয়। পরে তাদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  

এঘটনার প্রতিবাদে শাবি, সিলেট তথা দেশজুড়ে সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।


ঢাকা, ১০ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ