লাইভ প্রতিবেদক : বখাটেরা আমার মুখে সিগারেটের ধোঁয়া ছুড়ে। আজেবাজে মন্তব্য শুরু করে। এর প্রতিবাদ করায় নাজেহাল হয়েছি। আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শনিবার বিকেলে ঘুরতে এসে যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীর বক্তব্য এটি।
এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সহসভাপতিকে পেটানো হয়েছে। এমন অপকর্মেও ছাত্রলীগের নাম আসছে ঘুরেফিরে। অভিযোগ উঠেছে শাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থর অনুসারীরা ওই অপকর্ম ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ছাত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় শাবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি অবজারভারের সিলেট প্রতিনিধি সরদার আব্বাস আলী এবং সহ-সভাপতি, ক্যাম্পাসলাইভ ও দৈনিক সকালের খবরের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সৈয়দ নবীউল আলম দিপুকে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
পরে অজ্ঞান অবস্থায় সর্দার আব্বাস ও গুরুতর অবস্থায় নবীউল আলম দিপুকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওই ছাত্রী তার অভিযোগে বলেন, শনিবার ক্যাম্পাসে আসলে তার পিছু নিয়ে শহীদ মিনার পর্যন্ত আসে কয়েকজন বখাটে। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন জানার পর আজেবাজে প্রশ্ন ছাড়াও মুখে সিগারেটের ধোয়া ছাড়ে বখাটেরা।
আমি তাদেরকে ‘এরকম কেন করতেছেন’ এ প্রশ্ন করলে একজন আমাকে চড় মারে। এছাড়া ক্যাম্পাসে আমি আবার আসলে তারা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এসময় তারা অামার সঙ্গে থাকা ফুফাতো ভাইকেও তারা মারধর করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকসংবাদকর্মী এর সত্যতা জানতে চাইলে মারধরকারী শিক্ষার্থীরা নিজেদেরকে ছাত্রলীগকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থের অনুসারী পরিচয় দেয়। এসময় তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয় এবং ঐ ছাত্রলীগকর্মীরা সাংবাদিকদেরও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন তাকে মারধরকারী ও হুমকি প্রদানকারী দুজন হলো সমাজকর্ম বিভাগের ২য় বর্ষ ১ম সেমিস্টারের মাহমুদুল হাসান রুদ্র এবং পরিসংখ্যান বিভাগের সাজ্জাদ রিয়াদ।
ঘটনাটি মিমাংসা করতে এসে বিষয়টি নিয়ে নিজের কিছুই করার নেই বলে সাংবাদিকদের জানান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ।
সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ফুডকোর্টে চা খেতে গেলে দেশীয় অস্ত্রসাজে সজ্জিত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এসময় সাংবাদিকদের বেধড়ক পিটুনী দেয় লোকপ্রশাসন বিভাগের অনিরুদ্ধ দেব রায় অমিয়, নৃবিজ্ঞান বিভাগের রাহাত সিদ্দীকি, গণিত বিভাগের নজরুল ইসলাম রাকিবসহ আরো বেশ কয়েকজন। এতে ঘটনাস্থলেই জ্ঞান হারান সাধারণ সম্পাদক ও ডেইলি অবজারভারের সিলেট প্রতিনিধি সরদার আব্বাস। গুরুতর আহত হন সহ সভাপতি সৈয়দ নবীউল আলম দিপু। চেতনাহীন অবস্থায় সরদার আব্বাসকে ওসমানী মেডিকেলের তিন তলার এগারো নাম্বার ওয়ার্ড ও সৈয়দ নবীউল আলমকে নয় নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়েছে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বড়ি বরাবর অভিযোগ দিয়েছে ওই ছাত্রী, তার ফুফাতো ভাই ও মামা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সামিউল ইসলাম বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ বলেন, ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। আমি বরং সাংবাদিকদের বাঁচিয়ে দিয়েছি। সাংবাদিকদের মারধরের বিষয়ে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকা, ০৯ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: