Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শুক্রবার, ১০ই মে ২০২৪, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

বাকৃবিতে সাদ হত্যার ৩ বছর : আসামিরা সরকারি চাকরি-ব্যবসায়!

প্রকাশিত: ২ এপ্রিল ২০১৭, ০৮:১০

ময়মনসিংহ লাইভ : তিন বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল সাদ ইবনে মমতাজ হত্যাকাণ্ড। ২০১৪ সালে ছাত্রসমিতির নির্বাচনে বিরোধের জের ধরে আলোচিত ও জনপ্রিয় ছাত্রলীগের ওই নেতাকে নিজ দলের সদস্যরা নির্মমভাবে নির্যাতনে হত্যা করে। নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডের ৩ বছর পার হয়ে গেলেও খুনিরা এখনও রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। হত্যাকারীদের কেউ কেউ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে ঘুরছে। আবার কেউ কেউ চাকরিতে ঢুকে গেছেন। কেউ কেউ আবার সরকারি চাকরিও করছেন। এদের কেউ আবার বিসিএসে চান্স পেয়েছেন। রয়েছেন রিটেন পরীক্ষার অপেক্ষায়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বর্তমানে সাদ হত্যার বিচার কার্যক্রম অনেকটা হিমাগারে চলে গেছে। ঝুলে গেছে তৎপরতা। সাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা না করায় বিষয়টি নিয়ে তেমন একটা মাথা ঘামায় না। পুলিশ প্রশাসন।

বাকৃবি ক্যাম্পাসে সাদের সহপাঠীদের অনেকেই এখন চাকরিতে ঢুকে গেছেন। আবার অনেকে চাকরি খুঁজছেন। সব মিলিয়ে বাকৃবি ক্যাম্পাসে সাদকে নিয়ে তেমন একটা আলোচনা হয় না।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশরাফুল হক হলের ২০৫ নং কক্ষে সাদকে আটকে রেখে নির্মমভাবে নির্যাতন করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কার্পেট দিয়ে মুড়িয়ে লোহার রড, লাঠি, হকিস্টিক দিয়ে পেটানো হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ এপ্রিল সকালে মারা যান সাদ।

এ ঘটনার পর ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বাকৃবি। সেই উত্তাল দিনের সাক্ষী ক্যাম্পাসলাইভ। ক্যাম্পাসলাইভের একের পর এক আপডেটের পাশাপাশি অনুসন্ধানমূলক সংবাদ আন্দোলনকারীদের অনুপ্রেরণা যোগায়। আন্দোলনে গতি নিয়ে আসে।

প্রায় এক মাস তীব্র আন্দোলনের একপর্যায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাদের খুনিদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বর্তমানে সাদ হত্যা মামলার আসামিদের অধিকাংশই জামিনে মুক্তি পেয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এদের কয়েকজন ক্যাম্পাসেই আছেন।

সাদ হত্যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করে। এতে পুলিশি তদন্তে ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়।

অভিযুক্তরা হলেন সুজয় কুমার কুণ্ডু, রোকনুজ্জামান, সাদেকুর রহমান স্বপন, রোকন, রেজাউল করিম রেজা, নাজমুল সাদাত, দেওয়ান মো. মুনতাকা মুফরাদ, অন্তর চৌধুরী, সুমন পারভেজ, মিজানুর রহমান, ফয়সাল ইসলাম জয়, মনোয়ারুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ এবং প্রশান্ত দে। তারা সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

আসামীদের মধ্যে হাসান মাহমুদ, প্রশান্ত দে, মনোয়ারুল ইসলাম ও অন্তর চৌধুরী বর্তমানে ক্যাম্পাসে আছেন। তারা এখনও বাকৃবিতে পড়াশোনা করছেন। এদের মধ্যে অন্তর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই বছর বহিষ্কারের শাস্তিভোগ করেছেন।

মাৎস্যবিজ্ঞানের মাস্টার্সের ছাত্র প্রশান্ত ৩৭তম বিসিএসে প্রিলিতে টিকেছেন। তিনি লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন।

মনোয়ারুল ইসলাম হল থেকে বিড়ারিত হয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করছেন। হাসান মাহমুদ মাৎস্যবিজ্ঞানের শেষ বর্ষের ছাত্র।

বাকী আসামীরা ক্যাম্পাসের বাইরে অবস্থান করছে। এদের মধ্যে বর্তমানে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন মিজানুর রহমান।

রোকনুজ্জামান শেরপুরে ডিপ্লোমা করছেন। সাদের আরেক বন্ধু সুজয় কুমারও জামিনে মুক্তি নিয়ে তার নিজ গ্রামের বাড়ি নাটোরে অবস্থান করে বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করছেন।

তবে সাদ হত্যার মূল হোতা বলে পরিচিত স্বপন ও রেজাকে ক্যাম্পাসে তেমন একটা দেখা যায় না। যদিও ক্যাম্পাসের বাইরে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ান বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদের মধ্যে রোকন ঢাকায় চাকরি খুঁজছেন বলে জানা গেছে। সুমন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে চাকরি পেয়েছেন।
ফয়সাল ইসলাম জয় মাঝে মাঝে ক্যাম্পাসে আসেন। এর মাঝে তিনি ছাত্রলীগের পদ পেতেও ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি সুবিধা করতে পারেননি।


ঢাকা, ০২ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ