শাবিপ্রবি লাইভ: শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। ইতোমধ্যে পদোন্নতির জন্য সকল দাফতরিক কাজ শেষ করে সাক্ষাৎকারের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে এমন পদোন্নতির পাঁয়তারাকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সিন্ডিকেট সদস্যরা। ভিসির আস্থাভাজন বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার তোষামোদে এ পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে নির্ভযোগ্য সূত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুইজন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দিতে আগামী ১৬ অক্টোবর বিকেল ৩টায় সাক্ষাৎকারের সময় দেয়া হয়েছে। সেখানে আবেদনকারী তিনজনের মধ্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আফজালুর রহিম চৌধুরী এবং কামরান আহমেদ চৌধুরীকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়ার জন্য সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয়েছে।
অথচ ৬ মে ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৫২তম সভায় কামরান আহমেদ চৌধুরীর অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতিই সর্বশেষ পদোন্নতি বলে উল্লেখ করা হয়। সিন্ডিকেটের এ সিদ্ধান্ত অমান্য করে তাকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়ার জন্য সাক্ষাৎকারের প্রবেশপত্র দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পেতে অন্যান্য যোগ্যতার বা শর্তের কোনটিই তার পূরণ হচ্ছেনা বলে জানা যায়।
কর্মকর্তা নীতিমালা-২০১৪ অনুযায়ী অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তা থেকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে চার বছর মেয়াদী স্নাতক (সম্মান)/ স্নাতোকোত্তর ডিগ্রীসহ অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তা (দশম গ্রেড) পদে চার বছরের অভিজ্ঞতা অথবা স্নাতক ডিগ্রীসহ ছয় বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কোনো ক্ষেত্রে দুইটির অধিক তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য হবে না।
কিন্তু কামরান আহমেদের এসএসসি, এইচএসসি এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেয়া বিতর্কিত বিএ সার্টিফিকেটসহ সবগুলোতেই তৃতীয় বিভাগ রয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী পদ শূন্য থাকলে ওই পদে পদোন্নতি দেয়া যায় না কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দফতরে প্রশাসনিক পদের চারটি পদ শূন্য রয়েছে।
অন্যদিকে, আফজালুর করিম চৌধুরী ২০১০ সালে তৎকালীন উপ-হিসাব পরিচালক সাকের আলীর স্বাক্ষর জালিয়াতির কারেন। বিষয়টি নিয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট তার শাস্তি হিসেবে দুইটি ইনক্রিমেন্ট কেটে দেয়। তাকেও পদোন্নতি দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে সাবেক সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, যে বিষয়গুলো সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় সে বিষয়গুলোতে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে হলে সিন্ডিকেটেই যেতে হবে। অন্যথায় এ টা নিয়ম বহির্ভূত হবে। সাম্প্রতিক সময়ে বারবার এ ঘটনা ঘটছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ভিসি, সিন্ডিকেট ও পদোন্নতি বোর্ডের সদস্য প্রফেসর ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।
ঢাকা, ১২ অক্টোবর, (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)// আইএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: