লাইভ প্রতিবেদক : বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার পর থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে। বেরিয়ে এসেছে বুয়েটের হলে হলে নির্যাতনের ভয়ংকর চিত্র। এ অবস্থার মধ্যে বুয়েটের হলে আর নিজেদের সন্তানদের রাখতে চান না অভিভাবকরা। বুয়েটে চান্স পেলেও নিজের আদরের সন্তানদের বাসায় রেখে পড়াশোনা করাবেন বলে অভিভাবকদের অভিমত। আর তাও যদি না তবে প্রয়োজনে মেসে রেখে পড়াশোনা করাবেন। তবুও হলে আর সন্তানদের রাখবেন না তারা। সোমবার বুয়েটে অনুষ্ঠিত হয় ভর্তি পরীক্ষা। এসময় পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের চোখে–মুখে ছিল ভয় আর কষ্টের ছাপ। বুয়েটে দলীয় ছাত্ররাজনীতি বন্ধের পক্ষে তারা ছিলেন উচ্চকণ্ঠ। সেই সঙ্গে সাংবাদিকদের কাছে তারা এ অভিমতও জানিয়েছেন বুয়েটে চান্স পেলেও সন্তানকে হলে রাখবেন না তারা।
জানা গেছে, আবরার হত্যাকাণ্ডের পর আলোচনায় আসা র্যাগিং এবং নির্যাতনের ঘটনায় আতঙ্কিত ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তান বুয়েটে পড়ার সুযোগ পেলেও হলে রাখবেন না বলে জানান কয়েকজন অভিভাবক। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস-হানাহানির অবসান চান তারা।
কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও অভিভাবক বলেন, বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ভালো প্রস্তুতি নিলেও শেষ মুহূর্তে ছাত্রহত্যার ঘটনায় তাদের মনে বেশ ভয় তৈরি হয়েছে। আবরার হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েট কর্তৃপক্ষ ও সরকারের পক্ষ থেকে এই ভয়ের কারণগুলো দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তারা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাদের আশঙ্কা, আবরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে চলমান আলোচনা থেমে গেলে ক্যাম্পাস পরিস্থিতি আবার আগের অবস্থাতেই ফিরে যাবে।
সন্তানকে নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় আসা অভিভাবক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, আবরার হত্যার পর ভেবেছি ছেলেকে বুয়েটে ভর্তি করাব কিনা। ছেলের ইচ্ছাতেই পরীক্ষায় আসতে হয়েছে। তবে ওকে হলে রেখে পড়াশোনা করাবো না। আমি আমার আদরের সন্তান হারাতে চাই না।
আরেক অভিভাবক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তারেক আহমদ বলেন, বুয়েট স্বপ্নের জায়গা। এখানে এভাবে আমার সন্তানের স্বপ্ন বিনাশ হতে দিতে পারি না। বুয়েটে চান্স যদি হয় তবে হলে নয় বাসায় রেখে আমার সন্তানকে পড়াশোনা করাবো।
ভর্তি পরীক্ষায় আসা অধিকাংশ অভিভাবকেরই একই অভিমত।
উল্লেখ্য, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আবরার ফাহাদ বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যকার চুক্তি নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন। ওই স্ট্যাটাসের কারণ জানতে শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে আবরার ফাহাদকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে আবরারকে বেধরক পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
ঢাকা, ১৫ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: