যবিপ্রবি লাইভ: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অন্তর দে শুভ এবং ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স (এফএমবি) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমে আজম শুভকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর পিইএসএস বিভাগের ১ম বর্ষের ২য় সেমিস্টারের পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ওই দুই শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা উল্লেখ্য করা হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০১ এ অর্পিত ক্ষমতাবলে যবিপ্রবির ভিসি ওই দুজন ছাত্রকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেন।
এ ছাড়া তাদেরকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও মদদ দেওয়ায় পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি (এনএফটি) বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী গোলাম রাব্বানী ও পিইএসএস বিভাগের আসিফ আল মাহমুদকে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করা হয়।
তাদের এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডে পরবর্তী সিদ্ধান্তের জন্য পেশ করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট যেন করতে না পারে এ জন্য বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদ্বয়কে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থান করতে পারবে না বলেও ভিসি নির্দেশ দেন।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ১ম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাময়িক বহিষ্কৃত ছাত্র অন্তর দে শুভ পরীক্ষা দেওয়ার শর্ত পূরণ না করায় নিজে পরীক্ষা দিতে পারেনি বিধায় তাঁর অন্য সহপাঠীদেরকেও পরীক্ষা দিতে বাধা দেয়।
পরীক্ষা শুরুর আগে অন্তর দে শুভ, ইসমে আজম শুভ, আসিফ আল মাহমুদ ও গোলাম রব্বানী পিইএসএস বিভাগের অফিস কক্ষে এসে কর্মচারিদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন। তারা উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
বিভাগীয় চেয়ারম্যান তাদের জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থীর ক্লাসে উপস্থিতি ৫০ শতাংশ না হলে কেউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। এ প্রেক্ষিতে অন্তর দে শুভসহ মোট তিনজন পরীক্ষা দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
তখন অন্তর দে শুভ ‘আমাকে যদি পরীক্ষা দিতে না দেওয়া হয়, তবে কেউ পরীক্ষা দেবে না’ বলে হুমকি দেয়। পরে অন্তর দে শুভ, ইসমে আজম শুভ, গোলাম রব্বানী ও আসিফ আল মাহমুদ ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে নিয়ে রাস্তায় অবস্থান নেয়। ওই সময় সেখানে সহকারী প্রক্টর ড. মো: আমজাদ হোসেন সেখানে গেলে তাঁর সঙ্গে রাস্তায় অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা অশোভন আচরণ করে।
পরে মঙ্গলবার ১ম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে খবর পাওয়া যায় যে, অন্তর দে শুভ ও ইসমে আজম শুভর নেতৃত্বে পরীক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ আমবটতলা বাজারে আটকে রাখা হয়েছে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই ওই দুজন ১ম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষার্থীদের যশোর শহরস্থ হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনালে নিয়ে আটকে রাখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এ ঘটনার সত্যতা পায়।
এর আগে গত ১৮ জুলাই, ২০১৮ খ্রি. তারিখে উক্ত শিক্ষার্থীরা চাঁদা দাবি করে ‘বিডিরেন’র কিছু মালামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশে বাধা দেয়। ওই সময় তাদেরকে চূড়ান্ত সতর্কীকরণের নোটিশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও তারা সংশোধিত হয়নি।
বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক বিভিন্ন বিষয়ে তার অর্জনের জন্য সুশীল সমাজ তথা জনগণের মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করে, এ ধরনের ঘটনা সেই গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অক্ষুন্ন রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো ।
ঢাকা, ২৩ অক্টোবর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআই
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: