Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | বুধবার, ১৫ই মে ২০২৪, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়ন,অবসরে শিক্ষক রুহুল (অডিও)

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বার ২০১৮, ০২:৫০

মেহেদি জামান লিজন,জাককানইবি: হায়রে মানুষ গড়ার কারিগড়। হায়রে শ্রদ্ধেয় শিক্ষক। একি কান্ড ঘটালেন। শিক্ষক পেশার মান-সম্মান ডুবিয়ে তিনি বাধ্যতামূলক অবসরের তকমা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। নানান আন্দোলন আর দরকষাকষির পর অবশেষে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাকে দেয়া হয়েছে বাধ্যতামূলক অবসর। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) নাট্যকলা বিভাগের তিনি সহকারী অধ্যাপক। তার নাম মুহাম্মদ রুহুল আমিন।

তারই হাতে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার হন ওই বিভাগের তিন নারী শিক্ষকসহ অনেক শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষকরা ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি।

দুই মেয়াদের পর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। ২২ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেট সভায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষক রুহুল আমিনকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে অবগত করতে গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে চিঠি ইস্যু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর আগে অভিযোগ দেওয়ার পর সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ রুহুল আমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ওই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হককে প্রধান করে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক একেএম জাকির হোসেন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবা কানিজ কেয়াকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটিকে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে ব্যর্থ হয়ে ৮ কর্ম দিবসের সময় চেয়ে নেয় কমিটি।

সিলগালা করে রাখা তদন্ত প্রতিবেদনটি ২২ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৬১তম সভায় খুলে দেখা হয়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী শিক্ষক রুহুল আমিন অপরাধী প্রমাণিত হয়েছেন।

'উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন নিরোধ নীতিমালা ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী নৈতিক স্খলনের দায়ে ওই শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সমস্ত বিষয় পর্যালোচনা করে শিক্ষক রুহুল আমিনকে বাধ্যতাম‚লক অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেয় সিন্ডিকেট বোর্ড।

মুহাম্মদ রুহুল আমিন

 

এদিকে ওই ঘটনার পর থেকে শিক্ষক রুহুল আমিনের স্থায়ী বহিস্কারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে উত্তাল ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এ আদেশের খবর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে যৌন নিপীড়ন ও হয়রানির শিকার ভুক্তভোগী নারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তুস্ত প্রকাশ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. হুমায়ুন কবির ক্যাম্পাসলাইভকে জানান, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ওই শিক্ষককে অবগত করার জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত নাট্যকলা বিভাগের এক নারী শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি (রুহুল আমিন) আমাদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। তার অঙ্গভঙ্গিও নোংরা। ‘প্রায় দেড় মাস আগে আমরা রেজাল্টের কাজ করছিলাম। তিনি (রুহুল আমিন) নম্বর বলছিলেন, আমি পোস্টিং দিচ্ছিলাম। তখন একজন ডেমনোস্ট্রেটরও সেখানে ছিলেন। হঠাৎ তিনি আমার চুল ছুঁয়ে বলেন, ম্যাডাম চুলগুলো অনেক সুন্দর। তাৎক্ষণিক আমি তাকে সাবধান করি।’

তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে একাডেমিক সভা শেষে পরীক্ষা কমিটির কাজ করার সময় শিক্ষক রুহুল আমিন আমার দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে টিপ্পনি কাটেন। আমি সবার সামনেই এই ঘটনার প্রতিবাদ করি। তিনি ক্ষমা চান।

‘‘এর কিছুক্ষণ পরই ওই শিক্ষক বিষয়টি আপোস-মিমাংসা করতে এসে আমাকে বলেন, ‘আমি রিয়েলি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি। এজন্যই বারবার এমন হয়ে যায়। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় আমার ছবি এডিট করে কুরুচিপূর্ণভাবে পাঠান এবং অশ্লীল কথাবার্তা টেক্সট করেন।

তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গেও তিনি একই রকম কান্ড ঘটানোর পর আমরা তিন নারী শিক্ষক তার বিরুদ্ধে ভিসির কাছে মঙ্গলবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ করেছি।’

অডিও:

 

 

ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ