লাইভ প্রতিবদেক : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই বিভাগের ৩ শিক্ষিকার সঙ্গে আপত্তিকর কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে ওই তিন শিক্ষিকা শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তাদের যৌন হয়রানির অডিও ফাঁস হয়ে গেছে। এনিয়ে ইউটিউবে একটি অডিও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ওই শিক্ষক তার আচরণের জন্য শিক্ষিকাদের কাছে ক্ষমা চাইতে শোনা গেছে। অন্যদিকে শিক্ষিকাদের অভিযোগ ওই শিক্ষকের যৌন হয়রানিতে অতিষ্ট হয়ে তারা অভিযোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন ওই বিভাগের তিন শিক্ষিকা। এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে যৌন নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা গেছে, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর রুহুল আমিনের আচরণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তার সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়া থেকেও বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে তারা এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সমালোচনার পর বুধবার ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঘটনাটি তদন্ত করতে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নাট্যকলা বিভাগের এক নারী শিক্ষক জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি (রুহুল আমিন) আমাদের নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। তার অঙ্গভঙ্গিও নোংরা। তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড় মাস আগে আমরা রেজাল্টের কাজ করছিলাম। তিনি (রুহুল আমিন) নম্বর বলছিলেন, আমি পোস্টিং দিচ্ছিলাম। তখন একজন ডেমনোস্ট্রেটরও সেখানে ছিলেন। হঠাৎ তিনি আমার চুল ছুঁয়ে বলেন, ম্যাডাম চুলগুলো অনেক সুন্দর। তাৎক্ষণিক আমি তাকে সাবধান করি।’
তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে একাডেমিক সভা শেষে পরীক্ষা কমিটির কাজ করার সময় শিক্ষক রুহুল আমিন আমার দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে টিপ্পনি কাটেন। আমি সবার সামনেই এই ঘটনার প্রতিবাদ করি। তিনি ক্ষমা চান।
এর কিছুক্ষণ পরই ওই শিক্ষক বিষয়টি আপোস-মিমাংসা করতে এসে আমাকে বলেন, আমি রিয়েলি আপনার প্রেমে পড়ে গেছি। এজন্যই বারবার এমন হয়ে যায়। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময় আমার ছবি এডিট করে কুরুচিপূর্ণভাবে পাঠান এবং অশ্লীল কথাবার্তা টেক্সট করেন।
তিনি বলেন, আমাদের বর্তমান বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গেও তিনি একই রকম কান্ড ঘটানোর পর আমরা তিন নারী শিক্ষক তার বিরুদ্ধে ভিসির কাছে মঙ্গলবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ করেছি।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত রুহুল আমিনের সঙ্গে মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হুমায়ুন কবির বলেন, শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে তিন নারী শিক্ষকের লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এ অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এ অভিযোগ তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা, ১৯ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: