Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ১৩ই মে ২০২৪, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

রাবিতে ফেল ঢাবিতে মেধায় ৫ম, ৯ লাখে চুক্তি!

প্রকাশিত: ৩ ডিসেম্বার ২০১৬, ১৭:৫৬

ঢাবি লাইভ : তাজরিন আহমেদ খান মেধা। রাজশাহী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষায় মাত্র ১৪ দশমিক ০৬ পেয়ে ফেল করেছেন। ‘জি’ ইউনিটেও তিনি ফেল। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইউনিটে মেধার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন তিনি। ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৫ম স্থান অর্জন করেছেন। যদিও ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে মাত্র ১৮ এবং ‘চ’ ইউনিটে ১২০ এর মধ্যে মাত্র ২৪ পেয়ে উভয় পরীক্ষায়ই ফেল করেছেন তিনি।

তবে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় তিনি অস্বাভাবিক ফল করেছেন। ১২০ নম্বরের মধ্যে ১০০ নম্বর পেয়ে কেবল উত্তীর্ণই হননি, মেধা তালিকায় পঞ্চম স্থান পেয়েছেন তাজরিন। অথচ ‘ক’ ইউনিট ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময়ের ব্যবধান মাত্র এক সপ্তাহ!! তার পরেও কিভাবে এমন ফল করেছেন তাজরিন এনিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাজরিন ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে মাত্র ১৮ নম্বর পান। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও ‘ক’ ইউনিটে রসায়নে পান (০) শূন্য নম্বর। পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে ৩০ মধ্যে পেয়েছেন ৩ দশমিক ৭৫। জীববিজ্ঞানেও একই অবস্থা। আর বাংলায় পেয়েছেন ১১ দশমিক ২৫।

আর ‘চ’ (রোল নং- ৫০২৭৭২) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সর্বমোট ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন মাত্র ২৪ দশমিক ২৫  নম্বর।

তবে ‘ঘ’ ইউনিটে (রোল নং-১৬৪০৬৯) তাজরিনের ফল অন্য সবগুলোর থেকে আলাদা। এই পরীক্ষায় তিনি বাংলা বিষয়ে ৩০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ২৭। ইংরেজিতে পেয়েছেন ২৪, সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ বিষয়াবলী) বিষয়ে পেয়েছেন ২৪ দশমিক ৯০ এবং সাধারণ জ্ঞান (আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী) বিষয়ে পেয়েছেন ২৪ দশমিক ৩০ নম্বর।

জানা গেছে, ৯ লাখ টাকার চুক্তিতে তাজরিন এ ফলাফল অর্জন করেছেন। ওই চক্রেরও সন্ধান মিলেছে। অর্ণব চৌধুরী নামে ঢাকা মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রের সঙ্গে নয় লাখ টাকার বিনিময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাইয়ে দেয়ার চুক্তি হয় তাজরিন আহমেদ খান মেধার পরিবারের। চুক্তি অনুযায়ী পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই তাজরিনকে অনলাইনে প্রশ্নপত্র ও উত্তরমালা পাঠিয়ে দেন অর্ণব চৌধুরী। এরপর উত্তর মুখস্থ করে পরীক্ষা কেন্দ্রে বৃত্ত ভরাট করে দিয়ে আসেন এ ছাত্রী। তবে তাজরিনের রেফারেন্সে অপর এক ছাত্রীকেও চান্স পাইয়ে দেয়া হয়েছে। টাকা পরিশোধ নিয়ে গণ্ডগোলের কারণে শুরু হয়েছে বিপত্তি। আর এনিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেছে।

জানা যায়, অর্ণব চৌধুরীর সঙ্গে একই রকম চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল তাজরিন আহমেদের আত্মীয় নিপু। একই উপায়ে জালিয়াতি করে ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৭৮ তম স্থান পেয়েছেন নিপু।

তবে চান্স পাওয়ার পর অর্ণবকে নিপুর পরিবার নয় লাখ টাকা পরিশোধ করতে রাজি না হলে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। নিপুর পরিবার টাকা পরিশোধ না করায় তাজরিনের পরিবারকে অর্ণব চাপ দিতে থাকেন। কারণ নিপুর সঙ্গে তার যোগাযোগ তাজরিনের পরিবারের মাধ্যমেই হয়েছিলো।

তাজরিন আহমেদের মা আইরিন আহমেদ টাকা পরিশোধের বিষয়টি স্বীকার করলেও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত নয় বলে সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন।

অর্নব চেীধুরীও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেন। তবে তাজরীন তার আত্মীয় বলে স্বীকার করেন তিনি। অর্নব চৌধুরীর ফেসবুকের তথ্যমতে তিনি একটা ভর্তি কোচিংয়ের সাথে সম্পৃক্ত।

তাজরিনের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে জানা যায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর এক পোস্টে তিনি লিখেছিলেন ঢাবি ও জবির চারুকলায় কোন প্রিপারেশন ছাড়া টিকে গেছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঢাবির ‘চ’ ইউনিটে তিনি অকৃতকার্য হয়েছেন।


ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ সূত্রে জানা গেছে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আ আ মস আরেফিন সিদ্দীক জানান, জালিয়াতির এমন বেশ কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।



ঢাকা, ০৩ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ