রংপুর লাইভ : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) চলতি শিক্ষাবর্ষে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। দুই থেকে তিন লাখ টাকার চুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। জালিয়াত চক্রের মাধ্যমে ওই সুযোগ দেয়া হয়েছে। ভর্তির জন্য আসা ৬ ছাত্রকে গ্রেফতারের পর ওই জালিয়াতির তথ্য ফাঁস হয়েছে। তারা লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসে আটক হন। তাদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষক, দুই ছাত্রলীগ নেতা ও বহিরাগত একজন নারী জড়িত বলে জানা গেছে। আটকৃতরা জনপ্রতি ২ থেকে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে ওই ভর্তি জালিয়াতির মাধ্যমে ভর্তির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়।
ভর্তি জালিয়াতির সাথে জড়িত সন্দেহে পুলিশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২জন ছাত্রকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
ভর্তি পরীক্ষার সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী ৬টি বোর্ডের বেরোবির শিক্ষক সদস্যদের আটককৃত শিক্ষার্থীদের আচরণে সন্দেহ হয়। সে সময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনা স্বীকার করে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত জবানবন্দি দেন। তারা জানান, বহিরাগত এক নারী যাকে তারা ‘আন্টি’ সম্বোধন করতেন। তার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার মাধ্যমে ওই ভর্তি জালিয়াতির মাধ্যমে উল্লেখিত অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ভর্তির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। সে চুক্তির জন্য তারা ‘আতিক ভাইয়া’ নামে একজনের সহযোগিতা নিয়ে এ কাজ করে। পরীক্ষার্থীদের অভিবাবকদের সাথে দেখা করে ওই জালিয়াত চক্র নগদ টাকা গ্রহণ করে। আটকৃক ভর্তি পরীক্ষার্থীরা এ তথ্য জানান।
জালিয়াত চক্রের সাথে মোবাইলের তাদের কথোপকথনের ‘অডিও রেকর্ড’ ও ফাঁস হয়েছে। ওই অডিও রেকর্ড সূত্রে আরও জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে ওই ভর্তি জালিয়াত চক্রের সদস্যরা ভর্তি পরীক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছিল। একজন আকটকৃত ছাত্র লালমনিরহাটের বাসিন্দা সামস বিন শাহরিয়ার জানান তার কাছে নগদ ২লাখ টাকা না থাকায় তিনি জালিয়াত চক্রের সদস্য ‘আন্টির’ কাছে তার মোটর সাইকেল বন্ধক রেখেছেন।
এক লাখ টাকা বাকি থাকায় তিনি তার মোটরসাইকেলটি তার জিম্মায় রাখেন। নগদ টাকা শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে দেন কথিত ‘আন্টি’।
বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মহিব্বুল ইসলাম মুন জানান, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের ভর্তি কমিটির সদস্যরা আটক করে তাদের কাছে সোপর্দ করেছেন। তারা হলেন, ভর্তি পরীক্ষার্থী রিফাদ সরকার, সামস বিন শাহরিয়ার, সাহাদ আহমেদ, রোকসানুজ্জামান, আহসান হাবিব, শাহরিয়ার আল সানি।
তারা ভর্তির জন্য জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন ইউনিটে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে রোববার সাক্ষাতকার দিতে এসে আটক হয়। এদের সাথে আরও দুই ছাত্রকে পুলিশ আটক করেছে। তারা হলেন, ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান সজল ও ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য গোলাম মোস্তফা (মোস্তফা বিন ইসলাম)।
সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুর রহমান জানান, ভর্তিজালিয়াতির ঘটনায় যাদের আটক করা হয়েছে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঢাকা, ১৮ ডিসেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: