Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com
বাবা অত্যাচারী-রেপিস্ট: কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর ‘সুইসাইড নোট’

প্রকাশিত: ২৮ আগষ্ট ২০২২, ২১:২৪

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর আত্মহত্যা

লাইভ প্রতিবেদক: চিরকুটে তার বাবাকে ‘পশু’ ও ‘রেপিস্ট’ বলে উল্লেখ করে ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে দক্ষিণখান মোল্লারটেক এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ছাত্রী শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকাল ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লেখে গেছেন ওই ছাত্রী। চিরকুটটি উদ্ধার করেছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ''আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সাথে থাকা যায়। কিন্তু অমানুষের সাথে না। একজন অত্যাচারী রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।''

ওই তরুণীর মা বলেন, ওর বাবা দুটি বিয়ে করেছে। এ নিয়ে আমাদের পরিবারে অশান্তি লেগেই ছিল। একপর্যায়ে তার বাবার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে অবশেষে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুল হক মিঞা বলেন, ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ওই ছাত্রীর হাতে লেখা একটি চিরকুটও উদ্ধার করা হয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

ওসি মামুনুর বলেন, ‘পরিবার জানিয়েছে, সানজনার বাবা গাড়ি ভাড়া দেওয়ার (রেন্ট–এ কার) ব্যবসা করেন। পরিবারের ভরণপোষণ দিতে হিমশিম খাওয়ায় স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো তাঁর। মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচও চালাতে পারছিলেন না তিনি। কোনো কারণে বাবার প্রতি রাগ–ক্ষোভ থেকে সানজনা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

ওসি আরও বলেন, ‘তবে, নিহত সানজনার বন্ধু-বান্ধব ভিন্ন কথা বলছেন। তাঁরা বলছেন, সানজনার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন—এমন খবর জানার পর ঝামেলা তৈরি হয়। বন্ধুদের দাবি, সানজনাকে হত্যা করা হতে পারে। আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। কোনটা সত্য, তা বের হয়ে আসবে।’

সুইসাইড নোটে কী লেখা ছিল জানতে চাইলে এসআই রেজিয়া খাতুন বলেন, “ওই সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সাথে থাকা যায়, কিন্তু অমানুষের সাথে না। একজন অত্যাচারী এবং রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।’”

রেজিয়া খাতুন বলেন, ‘সানজনার বাবার নাম শাহিন ইসলাম। তাঁকে আসামি করে শনিবার দিবাগত রাতে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন তাঁর স্ত্রী উম্মে সালমা মনি। যদিও তিনি শুরুতে অভিযোগ করতে চাননি। তবে, মেয়ের খালা উম্মে কুলসুম মামলা করতে চান। একপর্যায়ে সালমা মামলা করতে রাজি হন।’

ঘটনার সূত্রপাত কীভাবে, এমন প্রশ্নে রেজিয়া খাতুন দাবি করেন, ‘প্রায় এক বছর আগে শাহিন ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করেন। শুনেছি নতুন স্ত্রী ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বেশ কিছুদিন আগে এ খবর মেয়ে জেনে যায়। এরপর থেকেই মূলত তাদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। মেয়েকে মারধর করা হতো নিয়মিত। যদিও শাহিন ইসলামের স্বভাব-চরিত্র নিয়ে মাঝেমধ্যে তাদের পরিবারে কলহ চলতো। সর্বশেষ কয়েকদিন ধরে সানজনা তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার খরচের জন্য এক লাখ ২৪ হাজার টাকা চাচ্ছিলেন। গতকালও এ টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু, শাহিন ইসলাম টাকা না দিয়ে মারধর করেন। এরপরই এ ঘটনা ঘটেছে।’

এসআই রেজিয়া খাতুন আরও বলেন, ‘মেয়ের খালা উম্মে কুলসুম আমাকে বলেছেন, শাহিনের স্বভাব ভালো ছিল না। বাসায় কাজের মেয়ে রাখতেও ভয় পেতেন তাঁর স্ত্রী। এ ঘটনার পর থেকে শাহিন পলাতক। তাঁকে ধরার চেষ্টা করছি আমরা।’

ঢাকা, ২৮ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ