এনএসইউ লাইভ: নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (এনএসইউ) "ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ: যুদ্ধের সময়ে কূটনীতির সম্ভাবনা" শীর্ষক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এনএসইউ'র সাউথ এশিয়ান ইন্সিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি)’র অধীন সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) এবং জার্মানির লিবনিজ পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফ্রাঙ্কফুর্ট (পিআরআইএফ) যৌথভাবে এই ওয়েবিনার আয়োজন করে।
ওয়েবিনারে বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে ছিলেন পিআরআইএফ’এর সহ-পরিচালক প্রফেসর ড. ক্রিস্টোফার ডেস, এবং পিআরআইএফ’এর জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. ক্যারোলিন ফেল, বাংলাদেশ সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও বর্তমানে এনএসইউ’র এসআইপিজির প্রফেসরিয়াল ফেলো রাষ্ট্রদূত শহীদুল হক, এসআইপিজি’র সিনিয়র ফেলো এবং বাংলাদেশের সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. সাখাওয়াত হুসেন। ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন- ড. স্টেফান ক্রোল, হেড অফ কমিউনিকেশনস এবং জ্যেষ্ঠ গবেষক, পিআরআইএফ, জার্মানি।
ড. ক্যারোলিন ফেল তার বক্তব্যে বলেন, যে যুদ্ধটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র এবং নিরাপত্তা নীতিতে অবস্থান পরিবর্তন করেছে, যা ট্রাম্প থেকে বাইডেন প্রশাসনের রূপান্তরের সাথে সম্পর্কিত। তিনি আরও বলেন যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলি বিভিন্ন রকম নিষেধাজ্ঞা দ্বারা রাশিয়ার উপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এবং এই যুদ্ধের পরে আন্তর্জাতিক সংহতির পুনরুজ্জীবন আর তেমনভাবে স্থায়ী হবে না।
ড. ক্রিস্টোফার ডেস বলেছেন, এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া শক্তিশালী এবং একীভূত হয়েছে। তবে এই যুদ্ধের কারণে ইউরোপ এবং আশেপাশের অঞ্চলে স্থায়ী নিরাপত্তা কাঠামো আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও মতামত দেন যে এই যুদ্ধ কোন পক্ষের বিজয় আনবে না। তিনি মনে করেন এই যুদ্ধটি আলোচনার মাধ্যমে শেষ হওয়া উচিত যেখানে ইউক্রেনীয়দের প্রধান ভূমিকা থাকবে।
ড. সাখাওয়াত হুসেন জানান, পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন এই যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করবে। তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ দক্ষিণ এশীয় দেশগুলো রাশিয়ার সাথে ঐতিহাসিক ও সামরিক সম্পর্কের কারণে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে ভোটদানে বিরত থাকে। আর রাশিয়া এখন সস্তা জ্বালানি দিয়ে এসব দেশকে কাছে টানছে। তাছাড়া ইউরোপকে শুধুমাত্র ন্যাটোর উপর নির্ভর না করে তাদের নিরাপত্তা কৌশল পুনর্গঠন করতে হবে।
রাষ্ট্রদূত শহীদুল হক বলেন, এই যুদ্ধ নতুন বিশ্বব্যবস্থার রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করেছে। এটি এশিয়ায় একটি অস্থির, জটিল এবং অস্পষ্ট রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। বাজারের অস্থিরতা এবং বিশেষ করে জ্বালানি খাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশে যুদ্ধের প্রভাব ইতিমধ্যেই অনুভূত হয়েছে।
সিপিএসের সমন্বয়ক ও এনএসইউ’র রাষ্ট্র ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. আব্দুল ওহাবের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে ওয়েবিনার শুরু হয়। ওয়েবিনারে শিক্ষাবিদ, গবেষক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, কূটনীতিক, সাংবাদিক, এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা, ১২ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: