লাইভ প্রতিবেদক : একইদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুইজন ছাত্র ও একজন ছাত্রী। নিহত ৩ জনই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিহতের মধ্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্র সৈকতে ডুবে ও ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র নদীতে ডুবে মারা গেছেন। বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে গিয়ে নির্মম পরিণতি হয়েছে তাদের। এছাড়া নিহত আরেক শিক্ষার্থী নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির। তাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি অন্য কোন কারণে তার মৃত্যু হয়েছে এনিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার সৈকতে শনিবার সমুদ্রস্নানে যান ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্র ইফতেখারুল আলম আবিদ। একপর্যায়ে পানিতে ডুবে তিনি মারা যান। নিহত আবিদ ফেনী জেলার ধুলসরদা এলাকার মো. ইউনুছ আলীর ছেলে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় লাবণী পয়েন্টে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে যান আবিদ। সকালে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে তারা সবাই গোসল করতে নামলে এক পর্যায়ে পানিতে ডুবে যান আবিদ। পরে তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
একই দিনে শনিবার বন্ধুদের সঙ্গে নদীতে গোসলের সময় প্রাণ গেছে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভুলী বাঁধ এলাকায় নদীতে গোসল করতে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
জেলেরা নদীতে জাল ফেলে ওই ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে। তার নাম নওশাদ আলী। তিনি ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন।
জানা গেছে, শনিবার দুপুর ৩টায় উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের কুমারপুর গ্রামের ভুলী থেকে ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র নওশাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঠাকুরগাঁও সদর থানার এসআই রবিউল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। নওশাদ আলী স্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। ঠাকুরগাঁও শহরের শাহপাড়া এলাকার নবাব আলীর ছেলে তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে এসআই রবিউল বলেন, দুপুরে বন্ধুরে সঙ্গে গোসল করতে যান নওশাদ। গোসল করার এক পর্যায়ে পানিতে তলিয়ে যান তিনি। সঙ্গে থাকা বন্ধুরা তাকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। স্থানীয় জেলেরা জাল ফেলে ওই ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া রাজধানীর বেইলি রোডে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ওই ছাত্রীর নাম ফাইজা রহমান অনন্যা। পারিবারিকভাবে একে আত্মহত্যা বলা হলেও পুলিশ বলেছে, তার মৃত্যু রহস্যজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ওই ছাত্রীর লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন বলেন, পুলিশ প্রথমে সংবাদ পায় অনন্যা আত্নহত্যা করেছে। তবে তার মৃত্যুর ব্যাপারে স্বজনদের দেওয়া তথ্যে যথেষ্ট সন্দেহ থাকায় ময়নাতদন্তের পর এর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে মনে করছি।
জানা গেছে, শনিবার সাড়ে ৪টার দিকে স্বজনরা অনন্যাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে মনোয়ারা হাসপাতাল নিয়ে যান। সেখানে তার অবনতি হলে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এসময় চিকিৎসক অনন্যাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত অনন্যার চাচা আবুল মনসুর জানান, অনন্যা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র ছাত্রী ছিল। ৭/৮ মাস আগে মোহাম্মদপুরে বাসিন্দা ব্যবসায়ী নাবিদের সঙ্গে পারিবারিকভাবে কাবিন হয়। কাবিনের পর থেকে ওই বাসায় যাতায়াত ছিল অনন্যার। সামনে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। বেইল রোডে একটি ভবনের আটতলায় মা নুসরাত জাহানের সঙ্গে থাকতো অন্যনা। তার বাবা মাসুদুর রহমান পাঁচ বছর আগে মারা যান। দুই বোনের মধ্যে অনন্যা ছিল বড়।
অন্যনার মামা রফিকুল জানান, শনিবার সকালে অনন্যাকে বাসায় রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে ছোট মেয়ে ফারিয়াকে নিয়ে বাইরে যান মা। পরে বাসায় ফিরে দেখতে পান, অন্যনা বিছানায় অচেতন হয়ে পড়ে আছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক জানিয়েছে অনন্যা মারা গেছে। তবে কি কারণে এমনটি হয়েছে তা জানা যায়নি।
ঢাকা, ১৯ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: