Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | মঙ্গলবার, ১৪ই মে ২০২৪, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

‘আমরা কোন মুখে যাবো বিশ্ববিদ্যালয়ে’

প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০১৮, ০৮:২৯

ব্রাহ্মণবাড়িয়া লাইভ : অামরা ওদের বাবা-মাকে কী জবাব দেব। কোন মুখ নিয়ে যাবো বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমাদের সহপাঠীরা ঘুমিয়ে গেছে চিরদিনের জন্য। মেঘনায় ঘুরতে গিয়ে সব শেষ হয়ে গেছে। এভাবে সেদিনের দুঃসহ স্মৃতি মনে করে হাউমাউ করে কাঁদছেন নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থী। চোখের সামনে দুই বন্ধুর মৃত্যুর স্মৃতি এখনো তাড়া করে ফিরছে। স্বাভাবিক হতে পারছেন না তারা। অনেকটা অস্বাভাবিক আচরণ করছেন তারা। এ অবস্থাতেই তাদের পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন আশুগঞ্জের ইউএনও মৌসুমী বাইন হীরা। সহপাঠীদের এমন আহাজারিতে তার চোখেও জল গড়িয়েছে।

আশুগঞ্জে মেঘনা নদীতে ঘুরতে এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ বন্ধু। এদের মধ্যে দুই বন্ধু বাদে বাকী ৫ জন ঢাকায় ফিরে গেছেন। ওই দুই বন্ধুও ফিরেছেন, তবে লাশ হয়ে। এব্যাথা, এ শোক যেন সইবার নয়।

ইউএনও মৌসুমী বাইন জানান, সহপাঠীদের হারিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করছেন ওই ৫ শিক্ষার্থী। এ অবস্থাতেই তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তাদের কাউন্সিলিং প্রয়োজন বলে মনে করেন ইউএনও।

মেঘনা নদীতে বেঁচে যাওয়া রোদেলা আক্তার বলেন, আমরা প্রাপ্তি ও মেহরাবের মা, বাবা আর আমাদের পরিবার কী জবাব দেব। আমরা কোন মুখ নিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবো। আমাদের সহপাঠী আর শিক্ষকদের কি বলবো। কিছুই ভাবতে পারছি না। এসময় একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাফসান, আলভী, সৌরভ ও রিফাত এসময় হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন। নদীতে দুই সহপাঠী তানজিবা প্রাপ্তি বিনতে তানভীর ও ইশরাক মাহবুবকে হারিয়ে বিদায় বেলায় এমন দৃশ্যের অবতারণা হয় মেঘনা পাড়ে।

জানা গেছে, শনিবার বিকেলে নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ বন্ধু ভৈরব থেকে একটি নৌকা নিয়ে মেঘনা নদীতে ঘুরতে আসেন। এই সময় তারা ভৈরব রেলসেতু ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুসহ আশপাশ এলাকা ঘুরে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনার বুকে জেগে উঠা চর সোনারামপুরে যান। সেখানে নৌকায় দাঁড়িয়ে সবাই মিলে ছবি তুলতে গেলে পাটাতন ভেঙে নিচে পড়ে যান তানজিবা। বন্ধু বিপদে পড়েছে তাই কোন কিছু না ভেবেই তানজিবাকে বাঁচাতে পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন ইশরাক মেহরাব। যদিও তিনি সাঁতার জানেন না। হাবুডুবু খেতে খেতে দুজনেই তলিয়ে যান মেঘনায়। অন্য বন্ধুরা এ দৃশ্য দেখছিলেন আর চিৎকার করছিলেন। একপর্যায়ে স্থানীয়রা এসে তাদের উদ্ধার করেন। মেঘনায় বন্ধু তানজিবাসহ নিখোঁজ হয়ে যান ইশরাক।

শুরু হয় উদ্ধার অভিযান। শনিবার রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের উদ্ধার সম্ভব হয়নি। রোববার সকালে মেঘনায় ভেসে উঠে তানজিবার নিথর দেহ। অন্যদিকে দিনভর ডুবুরি আর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযানেও খোঁজ মেলেনি ইশরাকের। রাতে উদ্ধার করা হয় ইশরাক মেহরাবের লাশ।

বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও লাশ হয়েছেন। বন্ধুত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তিনি। এভাবে চলে যাওয়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তানজিবা-ইশরাকের সহপাঠী ও স্বজনরা।

বি:দ্র : ছবিতে সর্বডানে তানজিবা প্রাপ্তি বিনতে তানভীর ও ইশরাক মেহরাব (কালো ফ্রেমে)

ঢাকা, ১৭ জুলাই (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ