লাইভ প্রতিবেদক : আইন মেনে না চলায় বেসরকারি ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করা হয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে সতর্কতা জারি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ বিষয়ে দ্রুত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কার হবে বলে জানা গেছে।
এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে,
১. ইবাইস ইউনির্ভাসিটি
২. সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
৩. ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
৪. প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি
৫. সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
৬. আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি
৭. দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা
৮. কুইন্স ইউনিভার্সিটি
৯. ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি, ঢাকা)
১০. পিপলস ইউনিভার্সিটি (উত্তরা)
১১. ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া
১২. অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
১৩. গণবিশ্ববিদ্যালয় (মামলা চলমান)
এমন ২২ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করেছে ইউজিসি। উল্লিখিত ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় নতুন।
সূত্র জানায়, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কয়েকটির বিরুদ্ধে অবৈধ ক্যাম্পাস চালানোর অভিযোগ রয়েছে। কোনোটির বিরুদ্ধে রয়েছে অননুমোদিত প্রোগ্রাম চালানোর অভিযোগ, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশপ্রাপ্ত, সনদ বাণিজ্যসহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত এবং বন্ধ ঘোষিত। তবে উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে এগুলো পরিচালিত হচ্ছে। আবার মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের অভিযোগ রয়েছে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে।
ইউজিসি থেকে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ১০১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে ৯২টি কার্যক্রম শুরু করেছে। এর মধ্যে ২২টির ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। এর মধ্যে অবশ্য ৯টি নতুন। এগুলো এখনও কার্যক্রম শুরু করেনি। ভর্তি হয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে প্রতারিত না হয় সেজন্য সতর্ক করতে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ইউজিসিকে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। এর আলোকে গণবিজ্ঞপ্তি দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে ভিসি, প্রো-ভিসি ও কোষাধ্যক্ষ না থাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ব্যাপারেও সতর্ক করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি হলো ইবাইস ইউনির্ভাসিটি। এটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের (বিওটি) বা মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। বিওটি নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে আরও চারটিতে। এগুলো হলো- সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি এবং সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। নানা অভিযোগে ২০০৬ সালে সরকার ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। এ সংক্রান্ত আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলার পর প্রাপ্ত রায়ের আলোকে চলছে আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি এবং দি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, কুইন্স নামে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করা হয়েছিল।
অন্যদিকে, কয়েকটি অননুমোদিত ক্যাম্পাসে কার্যক্রম চালানোর দায়ে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। এ সংক্রান্ত ইউজিসির চিঠির বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়টি চালু রাখা হয়েছে। গত বছরের এপ্রিলে হাইকোর্টের নির্দেশে দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয় সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি সূত্র জানায়, চারটি বিশ্ববিদ্যালয় অননুমোদিত ক্যাম্পাস চালাচ্ছে। এগুলো হলো- ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি) ঢাকায়, পিপলস ইউনিভার্সিটি উত্তরায়, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া বনানীর ১৭ নম্বর রোডে, অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরে দুটি বাড়িতে অননুমোদিত ক্যাম্পাস চালাচ্ছে।
এগুলোর মধ্যে ইউএসটিসির এমবিসিএসে শিক্ষার্থী ভর্তি সংক্রান্ত নানা অভিযোগ আছে। এই ইস্যুতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে দিনের পর দিন আন্দোলন হয়েছে। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকার ক্যাম্পাস বন্ধ করেছে বলে ১৪ মে ইউজিসিকে জানিয়েছে। এ ছাড়া ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ার বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ কোটি টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। গণবিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে উচ্চ আদালতে একাধিক মামলা চলমান। এমন ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা উল্লেখ করে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হতে নিশেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেন, আইন অমান্যকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ ভর্তি হয়ে প্রতারিত হোক আমরা তা চাই না। এজন্য সে সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে ভর্তি হতে আগ্রহী না হয় তাই আমরা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত ক্যাম্পাস বা প্রোগ্রাম বা কোর্সে ভর্তি হলে তার অর্জিত সেই সনদ কাজে লাগে না বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।
ঢাকা, ১৯ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: