লাইভ প্রতিবেদক: যুবদের ঢল। চারদিকে নানান ফেস্টুন। ব্যানার। একেক রঙ্গের টিষার্ট পড়ে যুবরা মিছিলে স্লোগানে মুখর করে রখেছে গোটা উদ্যান। যেন মিলন মেলা। এবার যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত যুব সমাবেশ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এরপর কবুতর উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসমাবেশ শুরু হয়। এ সময় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল উপস্থিত ছিলেন। আসন গ্রহণ করার পরে বঙ্গবন্ধু কন্যা যুবলীগের ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন বলে জানাগেছে।
সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে মহাসমাবেশ ঘিরে মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠেছে ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকা। বেলা আড়াইটায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও সকাল ৯টা থেকেই যুব নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করেন। সমাবেশ ঘিরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল প্যান্ডেল।
এ ছাড়া, পুরো ঢাকা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি যুবলীগের পতাকা দিয়েও সাজানো হয়েছে। মাবেশে যোগ দিতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকেও নেতা-কর্মীরা আসছেন। গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট, মৎস্যভবন, শাহবাগ, কাকরাইল, সেগুণ বাগিচা, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বরসহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চার দিক দিয়েই নেতা-কর্মীরা এসে জড়ো হচ্ছেন। তাদের মুখে শোনা যাচ্ছে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান। কোনো কোনো মিছিলে ‘নৌকা নৌকা’ স্লোগানও দিচ্ছেন তারা।
মমতাজের গানে মাতোয়ারা যুব মহাসমাবেশ:
এবার মঞ্চে কণ্ঠশিল্পী মমতাজ এমপি। গাইছেন মুজিব শতবর্ষের থিম সং ‘তুমি বাংলার ধ্রুবতারা, তুমি হৃদয়ের বাতিঘর, আকাশে বাতাসে বজ্রকণ্ঠ, তোমার কণ্ঠস্বর...’। মঞ্চের সামনে নেতাকর্মীরা এ গানের তালে তালে দোলাচ্ছেন জাতীয় পাতাকা। উচ্ছ্বসিত দেখা যায় মঞ্চে বসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও। পরক্ষণে তিনি গেয়ে ওঠেন শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে ‘তুমি ফিরে এসেছিলে...’। শিল্পীর কণ্ঠে কণ্ঠ মেলান নেতাকর্মীরাও। সত্যিই উপভোগ্য এক দৃশ্য।
কণ্ঠশিল্পী মমতাজের এমন গানে মাতোয়ারা ঐতিহাসিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের যুব মহাসাবেশ। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে শুরু হয় মহাসমাবেশ। বিকেলে শুরু হয় সাংস্কৃতির অনুষ্ঠান। এ পর্বে মঞ্চ কাঁপিয়েছেন মমতাজ। তার গানে মেতে ওঠে যুব মহাসমাবেশে নেতাকর্মী ও যুবকরা। এর আগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই যুবলীগের প্রতিষ্ঠা থেকে বর্তমানের ক্রমধারা বর্ণনা ও তার সঙ্গে নৃত্যানুষ্ঠানও মনোমুগ্ধকর।
এদিকে, দুপুর ২টা ৩৬ মিনিটে যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত যুব মহাসমাবেশে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার উপস্থিতির আনন্দে স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে মহাসমাবেশস্থল।
এসময় প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে ও শ্রদ্ধা জানাতে মঞ্চসহ মহাসমাবেশে আসা নেতাকর্মী ও যুবকরা উঠে দাঁড়ান। অনেককে মোবাইল ফোনে ছবি তুলতে ও ভিডিও করতে দেখা যায়।
বৃহৎ যুবসংগঠন যুবলীগের উৎসবমুখর এ আয়োজনে এরইমধ্যে সারাদেশ থেকে লাখ লাখ যুবক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিলিত হয়েছেন। কেউ লাল-সবুজ, কেউ হলুদ রঙের টিশার্ট ও ক্যাপ পরে এসেছেন। মিছিলে মিছিলে ঢাকঢোল পিটিয়ে সোওহরাওয়ার্দী উদ্যানে মিলিত হন তারা। আনন্দঘন এ আয়োজনে আনন্দের অংশীদার হতে এরইমধ্যে যোগ দিয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের নায়ক রিয়াজ ও ফেরদৌস।
১১ নভেম্বর আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবর্ষিকী। ১৯৭২ সালের এ দিনে দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ এ যুবসংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রথিতযশা সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। গত প্রায় পাঁচ দশক ধরে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারও নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে বলে দাবী সংশ্লিস্টদের।
ঢাকা, ১১ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএল
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: