লাইভ প্রতিবেদক: করোনাকালীন সময়ে নারীরা আছেন নানান সমস্যায়। তারা বলতেও পারছেন, সইতেও পারছেন না। অনেকটা এমন সমস্যায় জর্জরিত তারা। করোনাভাইরাসের প্রভাব শুধু খাদ্য বা কর্ম জীবনে নয় প্রতিটি ক্ষেত্রে পড়েছে। এর থাবা থেকে বাঁতে নানান উদ্যোগ সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী ভাবেও চলছে। এই অবস্থায় নারী ও কন্যা শিশুদের পিরিয়ড বা মাসিকের সময় অনেক কিশোরী ও মা এর জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনা এখন দুঃসাধ্য হয়ে পরেছে ।
অন্যদিকে লকডাউনের কারণে অনেকের হাতে টাকা থাকলেও বাইরে গিয়ে কিনতে পারছেন না। অনেক ক্ষেত্রে পণ্যটিও পাওয়া যাচ্ছে না। এই সমস্যার সমাধানে কাজ করছে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক তরুণদের সংগঠন ইয়ুথ হাব এর ত্রিকোণমিতি প্রকল্প।
ইয়ুথ হাব স্কুল পর্যায়ে বিশেষভাবে সকল শিক্ষার্থী বিশেষভাবে ছাত্রীদের মাঝে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও উদ্যোক্তা তৈরি করতে কাজ করছে। মালয়েশিয়া ছাড়া বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, সিয়ারিলিয়ন, ইন্ডিয়া, নেপাল ও আফ্রিকায় ইয়ুথ হাবের “ স্কুল কোডার্স” ‘স্কুল প্রিউনিয়ার’ “ গার্স ইন আইসিটি” কার্যক্রম চালু আছে।
ইয়ুথ হাবের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও ত্রিকোণমিতি প্রকল্পের সমন্বয়ক, রাদিয়া রাইয়ান চৌধুরী জানান- সরকার, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই সহায়তা দিচ্ছেন । কিন্তু এসব সহায়তায় প্রথমত খাবার, শিশুখাদ্য, ওষুধ গুরুত্ব পেয়েছে। এসব সহায়তা প্যাকেজেও স্যানিটারি ন্যাপকিনের বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায়নি।
তিনি আরো জানান, পিরিয়ডী নারীদের অতি স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা তাদের শারীরিক সুস্থতার সাথে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। কিন্তু আমাদের দেশে পিরিয়ড বা মাসিক ব্যাপারটা উপেক্ষিত। বিষয়টি এতোই গোপনীয়তায় রাখা হয় যে পরিবারের একজন নারীর মাসিক হলে অন্য নারী সদস্যারাও টের পান না। আর পুরুষরা তো না-ই।
আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীই তাদের পরিবারের পুরুষদের অতিপ্রয়োজনীয় এই জিনিস গুলো কিনতে বলতে সংকোচ করে থাকে। অনেকে বলতে না পারার কারণে অস্বাস্থ্যকর ভাবে পিরিয়ডের সময়টা অতিবাহিত করে। বাংলাদেশের মাত্র ১৪% নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন। স্যানিটারি ন্যাপকিনের অভাবে বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন, এমনকি ক্যান্সারে পর্যন্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশেষ করে, করোনা ভাইরাসের এই লকডাউনে অনেক নারীই স্যানিটারি ন্যাপকিন, হেয়ার রিমুভার, ওমেন রেজার ও প্রেগনেন্সি টেষ্ট স্ট্রিপ সঠিক সময়ে পাচ্ছেন না। এতে করে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি আরও বাড়ছে।
এ কারণে আমরা স্যানিটারি ন্যাপকিন সহ অন্যান্য নারীদের জরুরি আইটেম গুলো সচ্ছলদের বাজারমূল্যে কোন সার্ভিস চার্জ ছাড়াই বাসায় পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি, পাশাপাশি অসচ্ছলদের বিনামূল্যে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।
ইতোমধ্যে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঈশ্বরগঞ্জ, নরসিংদী সহ বিভিন্ন স্থানে ৩০০ জন নারীর মাঝে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করেছে সংগঠনটি। এই সপ্তাহে আরও ৫০০ জন নারীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ঘরে বসে স্যানিটারি ন্যাপকিন, হেয়ার রিমুভার ক্রিম, ওমেন রেজার ও প্রেগনেন্সি টেষ্ট স্ট্রিপ পেতে আপনাকে যেতে হবে trikonomiti.com ওয়েবসাইটে। অর্ডার করার পর আপনাকে কল দিয়ে কনফার্ম করে অতিদ্রুত আপনার বাসায় পৌঁছে দিবে স্বেচ্ছাসেবকরা। এ ছাড়া শুধু মাত্র নারীদের জন্য এই ফেইসবুক গ্রুপটিতে https://www.facebook.com/groups/trikonomiti/ নিয়মিত নারী সাস্থ্য সেবা নিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন বিশিষ্ট নারী চিকিৎসকগণ।
ইয়ুথ হাবের সাথে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে ওয়ান ফ্রন্টিয়ার, ডোনেট ফর বাংলাদেশ, জ্যাশ ইন্টারন্যাশনাল, ইন্সপাইরিং বাংলাদেশ, টারটেল ভেঞ্চার ও ভার্চুয়াল ডাক্তার ।
ঢাকা, ১২ জুন (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: