লাইভ প্রতিবেদক: ২৮শে সেপ্টেম্বর পত্রিকার শেষের পাতায় ২য় কলামে ‘ভয়ঙ্কর নাশকতার ছক’ উল্লেখ করে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন খবর প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে অবৈধ সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে যুগান্তরের মত দলকানা কিছু গণমাধ্যম। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে অবৈধ সরকারকে ফায়দা হাসিলের সুযোগ করে দিতেই শিবিরের নামে গায়েবী অভিযোগ রটনা করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুগান্তর।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের মনোবল ভেঙ্গে দিতে শিবির টার্গেট করে হামলা ও হত্যা পরিকল্পনা করছে, অর্থ সহায়তা করছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৬ সেপ্টেম্বর ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার হওয়া শিবির নেতা শফিউল আলমসহ ৫জনকে বিষ্ফোরকসহ গ্রেপ্তারের পর তারা এসব তথ্য দিয়েছে। যুগান্তরের এ প্রতিবেদন স্ববিরোধী।
কেননা ১৬ তারিখের যুগান্তরের শেষ পৃষ্ঠায় তাদের গ্রেপ্তারের পর গুম হওয়ার নিউজটি বিস্তারিত ভাবে প্রচার হয়েছিল। এর পরও যুগান্তরের মত একটি গণমাধ্যম কিভাবে এমন স্ববিরোধী ও পুলিশের জলজ্যান্ত মিথ্যাচারকে পুঁজি করে একটি নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচার করতে পারে তা দেখে আমরা হতবাক। আসল ঘটনা হলো, গত ১২ই সেপ্টেম্বর কোন কারণ ছাড়াই শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্ধর থেকে হজ ফেরত মা ও বড় ভাইকে নিয়ে ফেরার পথে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতিসহ ৫জনকে গ্রেপ্তারের পর বেআইনি ভাবে আদালতে হাজির না করে গুম করে রাখে পুলিশ।
যা যুগান্তরসহ প্রায় সব গণমাধ্যমে গ্রেপ্তারের পর গুমের বিষয়টি ফলাও করে প্রচার হয়েছে। ১৬ দিন গুম করে রাখার পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিষ্ফোরকের মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। মামলায় পুলিশ উল্লেখ করেছে ৫জনকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অথচ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আরো ১৬ দিন আগেই। এমনকি আজও গ্রেপ্তারের পর ১৬দিন গুম রেখে ৫জনকে আদালতে হাজির করার বিষয়টি উল্লেখ করে দৈনিক উত্তেফাক, মানবজমিন, ইনকিলাবসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর ১৬দিন ধরে পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তারা বিষ্ফোরকের সাথে জড়িত থাকতে পারে এমন কথা ভারসাম্যহীন ছাড়া কারো পক্ষে বিশ্বাস করা সম্ভব নয়।
অন্যদিকে নাশকতার ছক, হামলার পরিকল্পনা, বিদেশী সংগঠন থেকে অর্থ পাওয়ার তথ্য গুলোও অবাস্তব ও প্রতিবেদকের বিকৃত মস্তিকের দায়িত্বহীন আবিস্কার। প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে গায়েবী তথ্যের উপর ভিত্তি করে সুকৌশলে প্রতিবেদক শিবিরকে জড়িয়ে রাজনৈতিক বিদ্ধেষমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
পুরো প্রতিবেদনটিই উদ্ভট, অবাস্তব, কাল্পনিক ও বায়বীয় উপাদানে তৈরী করা হয়েছে। নিরপরাধ শিবির নেতাকর্মীরা অবৈধ সরকার ও পুলিশের গুম, খুন, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও অবিচারের শিকার হয়ে চলেছে। আর দু:খজনক ভাবে সরকারের সকল অপকর্মে সহযোগির ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে যুগান্তরের মত কিছু একপেশে দায়িত্বহীন গণমাধ্যম।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এর আগেও ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে বহুবার এমন দায়িত্বহীন উদ্ভট প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। যার বাস্তবতা জাতি কখনো দেখেনি বরং বানোয়াট প্রতিবেদনের কারণে তারা মিথ্যাবাদী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যুগান্তরসহ কিছু গণমাধ্যমের প্রশ্নবিদ্ধ ও অনৈতিক কর্মকান্ড দেশবাসীর মনে নানা প্রশ্ন এবং বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। আর এই রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক প্রতিবেদন বিভ্রান্তিকে আরো প্রকট করবে।
আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ছাত্রশিবির সাংবিধানিক ও নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রদেরকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কোন প্রকার নাশকতার সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। নেতৃবৃন্দ বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা ও জাতির বিবেক সমতুল্য। কিন্তু এই বিবেকেই যদি পচন ধরে তাহলে জাতি গন্তব্য অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠির ক্রীড়ণক হয়ে মিথ্যাচার করা পবিত্র দায়িত্বের প্রতি চরম প্রতারণা।
এমন দায়িত্বহীন ভূমিকা অব্যাহত রাখলে জনগণের অনাস্থা ছাড়া তারা আর কিছুই অর্জন করতে পারবে না যুগান্তর। যা কোন ভাবেই কাঙ্খিত নয়। আমরা আশা করি, যুগান্তর কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে এই মিথ্যা প্রতিবেদনের জন্য দু:খ প্রকাশ করবেন এবং যে পৃষ্ঠায় প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে সেই পৃষ্ঠাতেই আমাদের প্রতিবাদটি ছাপিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন করবেন।
নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকতার মত পবিত্র পেশার দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে মিথ্যাচার না করতে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানান
ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: