আরাফাত আবদুল্লাহ : গল্পের শুরুটা এভাবে... ৫ বছর রিলেশন করার পর একটা কাপল মোটামুটি হ্যাপি এন্ডিংয়ের দিকে গেল। যদিও ছেলের চাকরি হয়নি, তথাপি পারিবারিক পরিচিতি আর রিলেশনটাকে গুরুত্ব দিয়ে উভয় পরিবার তাদের এনগেজমেন্ট করে নিল। অর্থাৎ মেয়েটা হচ্ছে ছেলেটার বাগদত্তা স্ত্রী। মেয়ের পরিবার শর্ত জুড়ে দিল ছেলেকে আগামি দুই বছরের মাঝেই সরকারি চাকরি খুঁজে নিতে হবে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবেই ছেলেটা প্রথম বিসিএস দিয়ে টিকল না। মেয়ের পরিবার থেকে চাপ আসতে থাকে। মেয়েও চাপ দিতে থাকে। এভাবে বেকার থাকবা কয়দিন? প্রাইভেট জব কী মানুষে করে? তুমি করবা সরকারি চাকুরী। এটা আমাদের ফ্যামিলির খানদান। দুঃখের ব্যাপার হল ওই ছেলে ঢাবির ছাত্র হওয়ার পরেও দ্বিতীয়বার সরকারি চাকরির জন্য এপ্লাই করেও কোন কূলকিনারা করতে পারেনি।
সঙ্গত কারণে মেয়ের পরিবার ওই এনগেজমেন্ট ভেঙ্গে দিয়ে চলে গেল। তাদের সরকারি চাকরি করা জামাই লাগবে। নইলে হবে না। বলাই বাহুল্য এই নিয়ে দুই পরিবারে এতই তিক্ততা সৃষ্টি হয়েছিল যে মেয়েটা কটাক্ষ করে ছেলেটাকে বলেছিল, অক্ষম মায়ের অক্ষম সন্তান।
ইদানিংকার একটা জালিয়াতি শুনলাম যে, এক লোক নাকি ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে পাঁচটা মেয়ের সাথে প্রতারণা করেছে। ক্যাডার আইডেন্টেটি দিয়ে সে পাঁচটা মেয়ের সাথে সংসার করেছে। আপনার কি মনে হয় না এই জালিয়াতির সুযোগ নারী সমাজ এবং তাদের অভিভাবকরাই করে দিয়েছেন?
তোমার বিসিএস ক্যাডার জামাই লাগবে? ওকে... ফাইন, কোন সমস্যা নাই। নিজের পছন্দ মতো কাউকে খুঁজে নাও। কিন্তু একটা বেকার ছেলের সাথে প্রেম করার দরকার কি?
তোমার কোটিপতি বিজনেসম্যান দরকার ? ঠিকাছে সমস্যা নেই। কিন্তু কেন একটা মধ্যবিত্ত ছেলেকে মিথ্যা স্বপ্ন দেখিয়ে ব্রেকআপ করে চলে যাও? ওই ছেলেতো কোন শর্ত মেনে স্বপ্ন দেখেনি।
তোমার ঋত্বিক লুকের কাউকে দরকার ? সমস্যা নেই। খুঁজে নাও। কিন্তু এভারেজ লুকের ছেলেটার সাথে এতো টাইম পাস কিসের জন্য?
মানসিক সাপোর্ট পাওয়ার জন্য তুমি একজনকে ইউজ করবা। সময় শেষ হলে তাকে ছুড়ে ফেলে দিবা। এরকম আনফেয়ার কাজ করে তুমি কি করে জীবনে ফেয়ার কোন কিছুর আশা করতে পারো?
যে মেয়ে কোন কোটিপতি ছেলেকে বিয়ের জন্য পছন্দ করে তাকে আমি লোভী বলি না। বরং নিজের ক্রাইটেরিয়া অনুযায়ী জামাই পছন্দ করা হল তার অধিকার। লোভী হচ্ছে সেই মেয়েটা যে কিনা সুযোগ বুঝে ২০ হাজার টাকা বেতন পাওয়া বয়ফ্রেন্ডকে ছেড়ে বিনা নোটিশে কোন কোটিপতির গলায় ঝুলে পড়ে।
নিজের প্রেমিকের সাথে জীবনটাকে এনজয় করতে তুমি পরোয়া কর না। পরোয়া কর না তার সাথে মেসে যেতেও। শুধু বিয়ের সময় এলেই শর্ত জুড়ে দাও, আমার এই টাইপের পাত্র লাগবে। তোমাকে আমার ফ্যামিলি মেনে নেবে না। ব্লা ...ব্লা ...ব্লা...। এইগুলা হিপোক্রেসি নয় কি?
তোমার এই হিপক্রেসিগুলা ধরায় দিলেই তুমি বলবা, নারী দুর্বল।
আমি ইমোশোনের কারণে এসব করেছিলাম।
এইসব কি জালিয়াতি নয়?
আজকাল বিয়েটা হল একটা বাণিজ্য।
আর সেই বাণিজ্যে সব থেকে হট আইটেম হল বিসিএস ক্যাডার।
এত্তো হট যে ধরাই যায় না!!!
Arafat Abdullah (মধ্যরাতের অশ্বারোহী)
University Of Chittagong
ঢাকা, ১২ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: