Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসিখুশি ছেলেটির গলায় দড়ি, এ আর এমনকি!

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৭, ০৪:২৯

অারাফাত আবদুল্লাহ : ঘটনার সূত্রপাত ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে। ঝলমলে এক বিকেলে স্থানীয় মেস থেকে একজন ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়। সিলিংয়ের সাথে ঝুলে থাকা লাশ দেখে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয় এটা আত্মহত্যা কেস।

হাসিখুশি একটা ছেলে কেন গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়লো এই বিষয়টা কেউ জানতেও পারলো না। ব্যাপারটা আসলেই হত্যা নাকি আত্মহত্যা এই ব্যাপারটা রহস্যই রয়ে গেলো। ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে অন্যরকম একটা বিষয় বেরিয়ে এলো।

ছেলেটা হলে থাকতো। গ্রাম থেকে আসা সাদাসিধে ছেলেটা রাজনীতির মারপ্যাচ বুঝে উঠতে পারেনি। হলে থাকতে গেলে নগদ রাজনীতি করে থাকতে হয় এই ব্যাপারটা তার কাছে অজ্ঞাত।

বিনা নোটিশে তাকে হল থেকে বের করে দেয়া হলো। বোকা ছেলে বুঝতে পারলো না কি হতে যাচ্ছে। ন্যায় বিচার চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করলো। হলের প্রভোস্ট বরাবর নিজের নিরাপত্তা চেয়ে দরখাস্ত করলো।
লাভ হলো না কিছুই।

যারা তাকে হল থেকে বের করে দিয়েছিল ব্যাপারটা তাদের কানে গেলো। এইবার ছেলেটাকে শায়েস্তা করতে তার মেসে হামলা করা হলো। প্রথম বর্ষ পরীক্ষার মার্কশিট থেকে শুরু করে যাবতীয় কাগজপত্র জব্দ করে নিলো কিছু রাজনৈতিক ছেলেপেলে। আল্টিমেটাম দিলো নগদ টাকা না দিলে এই কাগজ ফেরত দেবে না। মেসের বাইরে এনে জনসমক্ষে তাকে জুতাপেটা করা হলো। প্রশাসন নীরব। তারা কিছু বলে না।

পুলিশ চুপ। তারা কম্প্রোমাইজ করতে বলে। মিথ্যা তদন্তের নামে ব্যাপারটাকে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছিলো। ছেলেটা আশায় থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত করছে। এইবার হয়তো ন্যায়বিচার পাবে। তদন্ত প্রকাশ হলো।

ছেলেটার বিরুদ্ধে অভিযোগ এলো হলের রুমে ইয়াবা রাখার অপরাধে তাকে রুম থেকে বের করে দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা। সব দোষ ছেলেটার। ইয়াবা রাখার অপরাধে তাকে ক্যাম্পাস থেকে বহিস্কার করা হলো আজীবন। সেদিন রাতে ঘুমালো না সে।

রাত জেগে ভেবে নিলো তার অপরাধ কি? যে ছেলে জীবনে সিগারেট মুখে নেয়নি সে কিভাবে ইয়াবা রাখবে? কিছুই মেলাতে পারে না। একে ওকে ফোন করে। লাভ হয় না কিছুই।

বৃদ্ধ বাবা ফোন করে জানতে চায়, তুই কি নেশা করিস? তোকে ইয়াবা রাখতে পাঠিয়েছি ক্যাম্পাসে?

ছেলেটা আর সহ্য করতে পারে না। এক দুপুরে গলায় দড়ি নিয়ে নেয়। দুনিয়াকে বিদায় জানায় কিছু না বলেই। লাশটা যখন সিলিং থেকে নামানো হচ্ছিল তখন সেই লাশটা হয়তো নীরবে বলছিল, আমি ইয়াবা রাখিনি। আমি নির্দোষ। কিন্তু কে শুনবে লাশের কথা।

প্রগতিশীল রাজনীতির গলা চড়তে থাকে। স্লোগানে স্লোগানে তারা ছাত্রদের অধিকার আদায় করতে থাকে। আর ওদিকে এক বাবা তার ছেলেকে হারায়। একটা নির্দোষ ছেলে ফাঁদে পড়ে হয়ে যায় ইয়াবা ব্যাবসায়ি।
জানি... বিচার হয় না এসবের।
একটাই তো আত্মহত্যা। এ আর এমন কি? এভাবেই না হয় চলুক।

(গল্প)

Arafat Abdullah (মধ্যরাতের অশ্বারোহী )
University Of Chittagong


ঢাকা, ১৯ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ