মারুফ আল আসকারী : গরুর গোশত খাওয়া হিন্দুদের যতটা না ধর্মীয় বিধান তারচেয়ে বেশি এটা শিবসেনার রাজনৈতিক বিষয়। ভারতেও সবরাজ্যে গরুর গোশত নিষিদ্ধ না। যেসব রাজ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেটাও ইদানিংকালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে। বিজেপি ও শিবসেনার রাজনৈতিক এজেন্ডা কেন বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করা হবে?
হিন্দুরা যারা গরুর গোশত খেতে চান না তারা খাবেন না। আমরা কখনো প্রশ্ন তুলিনি যে, জগন্নাথ হলে গরু রান্না হয় না কেন? জগন্নাথ হলে গরুর গোশত রান্না না হওয়াই উচিৎ। কারণ জগন্নাথ হল বিশেষায়িত হল।
এখন প্রশ্ন হল, চারুকলা কী বিশেষায়িত হিন্দু অনুষদ? যদি সেটা না হবে তাহলে সেখানে গরুর গোশত রান্না করা নিষিদ্ধ হবে কোন যুক্তিতে? কাউকে যেমন জোর করে গরুর গোশত খাওয়ানো মৌলবাদীতা তেমনি কাউকে বল প্রয়োগ করে কিছু খেতে না দেয়াও মৌলবাদিতা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় পহেলা বৈশাখে গরুর গোশত রান্না করার কারণে একজনকে মারধর করা হল। এটা কী জঙ্গীবাদ বলে বিবেচিত হবে না?
যদি না হয় তাহলে এই মারধরের পাল্টা মারধরকেও জঙ্গীবাদ বলা যাবে কী?
আমাদের সমাজে আমরা হিন্দু মুসলিম শতশত বছর ধরে বাস করে আসছি। হিন্দু প্রধান এলাকার হোটেলে গরুর গোশত রান্না করা হয় না সেখানে শূকর রান্না হচ্ছে। আবার মুসলিম প্রধান এলাকাতে গরুর গোশত রান্না হচ্ছে। এটা নিয়ে কোথাও কোন সমস্যা হয়নি। কেউ কাউকে মারধর করেনি।
...... গরুর গোশত নিয়ে মারধরের সমালোচনা ভারতেও প্রচুর হয়েছে। এটা নিয়ে হৈ-হুল্লোড় সম্পূর্ণ শিবসেনার রাজনৈতিক ফাজলামি।
চারুকলায় যারা শিবসেনাদের মত ‘উগ্রবাদী’ কার্যক্রম ঘটিয়েছে তাদের বিচার কামনা করছি।
বিষয়টাকে আইনের আওতায় এনে এখানেই সমাধান করার দাবি করছি। অন্যথায় এটা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করবে।
লেখক : শিক্ষার্থী ও সমাজকর্মী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ১৫ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: