Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ভার্সিটিতে চান্সের পর নতুন স্বপ্ন, ভালোবাসার সম্পর্কে অবনতি!

প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল ২০১৭, ১৮:৪৬

শামসোজ্জোহা বিপ্লব : মেয়েটা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার পরেও ছয় মাস রিলেশনটা ভালোই চলছিল। বিপত্তি শুরু হয় কিছুদিন পর, ছেলেটার তখন ফোর্থ ইয়ার, পরীক্ষা সামনে। হঠাৎ করেই মেয়েটার আচার আচরণ অভাবনীয় পরিবর্তন হতে শুরু করে। ফোন দিলে আগের মতো আর রেন্সপন্স পাওয়া যেতো না।

আগে যেখানে মেয়েটা একমুহুর্ত কথা না বলে থাকতে পারতো না। সেখানে মেয়েটা এখন ছেলেটার কোনো খোঁজখবর নেওয়ারই প্রয়োজনবোধ করে না। বারবার ফোন দিলে বলে, এতো ফোন দেওয়ার কি আছে?  বারবার বিরক্ত করছো কি জন্য, তুমি আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছো কি জন্য। এরকম নানা কথার বাহানা শুরু হয়ে যায়। রিলেশনটার একপ্রকার ভেঙ্গে যাওয়ার মতো অবস্থা!

ভালবাসার মানুষের অবহেলায় আর নির্মম কথার আঘাতে ছেলেটার পড়াশোনাও একসময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। কাঠের শেষ পেরেক ঠোকাটা মনেহয় কেবল বাকি ছিলো। মেয়েটা একদিন ফোন করে জানিয়ে দেয়। ছেলেটার পড়াশোনা বন্ধ হলে তার কিছু আসে যায় না, সে একা থাকতে চায়।

সে পড়াশোনা করবে, তার অনেক স্বপ্ন আছে। ছেলেটার জন্য সে অপেক্ষা করতে চায় না। কোনো বাধা গন্ডির মধ্যে সে থাকতে চায় না। ছেলেটাকে তার নিজের পথ খুঁজে নিতে বলে। ছেলেটার তখন পরীক্ষার ঠিক কয়েকদিন বাকী ছিলো। পড়াশোনাও তেমন হয়ে ওঠে না। মেয়েটাকে শেষবারের মতো অনুরোধ করে পরীক্ষার কয়েকটা দিন পাশে থাকার জন্য কিন্তু মেয়েটা তাতেও সায় দেয় না।

ছেলেটার সঙ্গে অনেকদিন যোগাযোগ না হওয়ায় এতো কিছু জানতাম না। শুধু জানতাম একটু আধটু নাকি এখন মাঝেমাঝে অভিমান হয় কিন্তু জল এতো ঘোলা হয়েছে তা আমার ধারনার বাইরে ছিল। পরীক্ষার কয়েকদিন আগে ছেলেটা আমার কাছে এসে বললো, ভাই! আমি এখন কী করবো? ছেলেটাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা আমার কাছে ছিল না।

শুধু বললাম, এতো চিন্তা করিস না। পরীক্ষা সামনে এই ধাপটা পার হতে হবে, যে করেই হোক। ভালবাসার মানুষ চলে গেছে কিন্তু পরীক্ষায় পাশ না করলে সার্টিফিকেটাও পাবি না। যা নিজেকে একটু স্থির রাখার চেষ্টা কর। জীবন কারো জন্য কখনো থেমে থাকে না। ছেলেটা বারবার বলছিলো, একটা মেয়ে কিভাবে পারে ভাই, এরকম করতে, কিভাবে? আমার মাথায় আসে না, ভাই।  

ছেলেটার চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়তে থাকে। এ প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। ছেলেটাকে বুঝানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু আমার কথায় কাজ হলো কি না বুঝতে পারলাম না। আসলে এই পরিস্থিতিতে যতকিছুই ভালবাসার মানুষটাকে বোঝানো হোক না কেনো? কোনো কথাই ঠিক মাথায় ঢুকতে চায় না। ছেলেটে অঝরে কাঁদছে, মন খুলে একটু কাঁদুক। কেঁদেও যদি কষ্ট কিছুটা কম হয়। তাও ভালো।

ভালবাসায় গড়া তিলেতিলে একটা গড়া সম্পর্ক মুহুর্তেই মধ্যে যারা ভেঙ্গে দিতে পারে, আর যাই হোক তাদের সম্পর্কের প্রতি কোনো সম্মান বা ভালবাসা থাকে না। ভালবাসায় কেউ কাউকে ছেড়ে দিতে চাইলে, আপনি কাকে অপরাধী করবেন? ভালবাসাকে, নাকি যে ছেড়ে যেতে চায় তাকে। একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন। তাদের ভালবাসার পথটা কিন্তু ঠিকই একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু হঠাৎই কেনো মেয়েটা এরকম বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো? ব্যাখ্যাটা আসলে আপনি কিভাবে দাঁড় করাবেন? ভার্সিটিতে চান্স হওয়ার পর পরিবেশের সাথে খাওয়াতে, নিজের স্বপ্নের পথে পা বাড়াতেই হয়তো মেয়েটা আর সম্পর্ক রাখতে চাইছে না? ভালবাসার মানুষকে হয়তো কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় কিন্তু ভালবাসাকে নয়। মেয়েটা ইচ্ছে করলে সম্পর্কটা রাখতে পারতো কিন্তু তার ইচ্ছে হয়নি। যাস্ট ইচ্ছে হয়নি। নয়তো নিজের জীবনের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে সে আর সম্পর্কটাকে নিয়ে আর সামনে আগাতে চায়নি। আমি কিন্তু বলছি না মেয়েটা ভালবাসার প্রথম থেকেই এরকম প্রতারণা করবে বলে ভেবেছিলো।

আসলে সময়ের সাথেসাথে মানুষের মন পরিবর্তনশীল। মনকে জোর করে বেঁধে রাখা যায় না। হয়তো মেয়েটাও সেই পরিবর্তেনের জোঁয়ারে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। ভালবাসাকে যারা খেলনা ভেবে দু'পায়ে পদদলিত করে, আসলে অপরাধটা শুধু তারই, সেই অকৃতজ্ঞ মানুষগুলোর। ভালবাসায় কোনো অপরাধ নেই, থাকে না। আমরা নিজেরাই স্বার্থের জন্য ভালবাসাকে কলুষিত করি। মানুষের হৃদয়ে অবিশ্বাসের বীজ বুনে দেই। আমি বিশ্বাস করি, ভালবাসার মানুষগুলো ফিরে আসবে বারবার। শুদ্ধতম ভালবাসা বেঁচে থাকবে স্বর্গে মর্তে, বিশ্বাসীদের হৃদ মাঝারে, আমার আপনার বুকের ভিতর।।



লেখক : শামসুজ্জোহা বিপ্লব
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়


ঢাকা, ০৭ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ