এক তরুণী তার বাবাকে সাথে নিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছিলো। কিছুক্ষণ পর আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে গেলো এবং তুমুল ঝড় শুরু হলো।
তরুণীটি ভয় পেয়ে বাবাকে জিজ্ঞাসা করলো,বাবা কি করবো!
পাশের সিট থেকে বাবা মেয়েকে সাহস যোগালেন,
''তুমি ড্রাইভ করতে থাকো। থেমো না"।
তরুণীটি গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগলো,কিন্তু ঝড়ের প্রচন্ডতা আরো বেড়ে যাওয়াতে গাড়ি ড্রাইভ করা কঠিন হয়ে পড়ছিলো।
কিছুক্ষণ পর গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠলো।
তরুণীটি আবারো তার বাবার কাছে জানতে চাইলো থামবে কিনা।
বাবা আগের মতই ড্রাইভ করতে বললেন।
কিছুদুর ড্রাইভ করার পরে তরুণী লক্ষ্য করলো তার পথের
কিছুসামনে ষোলো চাকার একটা লরি রাস্তার পাশে সাইড করে থেমে যাচ্ছে।
তার সামনে আরো কিছু গাড়ি রাস্তার একপাশে পার্ক করে থেমে আছে।
দৃশ্যটি দেখে তরুণীটি বাবাকে বললো,
"বাবা এবার আমাদের থামতেই হবে। আশেপাশের সবাই দেখো গাড়ি ড্রাইভ করা বন্ধ করে পথের পাশে থেমে যাচ্ছে"।
কিন্তু বাবা সেই আগের মতই তার সিদ্ধান্তে অটল। হাল ছেড়োনা।
তুমি ড্রাইভ করতে থাকো।
বাবার কথা শুনে মেয়েটি সাহস পেলো এবং প্রচন্ড ঝড়ের মধ্যেও আস্তে আস্তে সামনের দিকে আগাতে লাগলো।
এভাবে কয়েক মাইল যাবার পরে তরুণীটি আবিস্কার করলো,
ঝড় থেমে গেছে এবং সূর্য উঠে গেছে।
এবার বাবা বললেন,
'এবার গাড়ি থামিয়ে বাইরে বেরোতে পারো।'
তরুণীটি অবাক হয়ে বাবাকে জিজ্ঞাসা করলো, এখন কেন বলছো?
বাবা বললেনঃ
"এখন এজন্যই বের হতে বলছি যাতে তুমি পেছনের দিকে তাকাতে পারো এবং সেই সব মানুষদের দেখতে পারো যারা হাল ছেড়ে দিয়েছিলো এবং থেমে গিয়েছিলো।
ওরা এখনো ঝড়ের মধ্যেই আছে।
কিন্তু তুমি হাল ছাড়নি এবং থেমে যাওনি,
তাই তোমার ঝড় এখন শেষ!..."
জীবনের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার প্রযোজ্য।
জীবনে চলার পথে আমরা অর্থনৈতিক, আবেগিক, পারিবারিক, সামাজিক ক্ষেত্রে নানা ধরণের ঝড়ের মুখোমুখি হই এবং ভয় পেয়ে থেমে যাই।
থেমে থাকার ফলে সেই ঝড়ে আমাদের জীবনগাড়ি নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় যা আত্নবিশ্বাসে ঘাটতি এনে দেয়।
জীবনের রাস্তা রেসিং ড্রাইভের মত মসৃণ নয়। জীবনের পথ বড় বন্দুর। চলার পথে নানা ধরণের বাধা-বিপত্তি আসবেই,
কিন্তু থেমে থাকলে ক্ষতির পরিমাণই শুধু বাড়বে। কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে আশেপাশের মানুষগুলো কিংবা সবচেয়ে কঠিন লোকটিও হাল ছেড়ে দিয়েছে বলেই যে আপনাকেও হাল ছাড়তে হবে এমন নয়।
পরিস্থিতি যত কঠিনই হোক না কেন, ধীরে-ধীরে সামনের দিকে অগ্রসর হতে থাকুন।
ইনশাআল্লাহ দেখবেন সাফল্যের ঝলমলে সূর্যটা আবারো আপনার মাথার উপর হেসে উঠবে।
কার্টেসি : আফরিন সূর্য
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ০৫ এপ্রিল (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: