মুরশিদুল ইসলাম সৌরভ: করোনা মহামারীর কারণে যেখানে জীবন ও জীবিকা দূর্বিষহ হয়ে দাঁড়ায়, সেখানে আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা একরকম স্থবির হয়ে যায়। এমতাবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলো অনলাইনে শিক্ষা কর্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
যদিও গ্রামের স্কুল-কলেজ গুলোতে অনলাইনে পাঠদান তেমন একটা বেগবান ছিল না। বিশেষ করে শহরের স্কুল-কলেজ গুলোতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইনে ক্লাস পাশাপাশি অ্যাসাইনমেন্ট নেওয়া শুরু হয়। এর ফলে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী অনলাইনে ক্লাস করলেও অনেকে ডিভাইস, নেটওয়ার্কের সমস্যা এবং ইন্টারনেটের উচ্চ মূল্যের কারণে অনলাইন ক্লাসে সংযুক্ত হতে পারেনি।
এসব শিক্ষার্থী কিছুটা পিছিয়ে পড়ে,ফলে এক ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়। বর্তমানে যখন স্কুল কলেজ খুলে দেওয়া হলো তখন কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী পিছিয়ে পড়ার কারণে তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরে এবং তাদের মাথায় বিশাল চিন্তার ভাঁজ পরে।
এমতাবস্থায় কিভাবে তারা পূর্বের ঘাটতি পুষিয়ে নিবে? এবং সেই সাথে যারা অনলাইনে ক্লাস করে এগিয়ে গিয়েছে তাদের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার এর মধ্যেই সামনে পরীক্ষা এসে দরজায় কড়া নাড়ছে। পরীক্ষা হবে অফলাইনে মানে সশরীরে কেন্দ্রে গিয়ে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি বলেছেন, এসএসসি পরীক্ষা হবে নভেম্বরে আর এইচএসসি ডিসেম্বরে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় গুলো খুলে না দিলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র সশরীরে পরীক্ষা নিচ্ছে, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার রুটিনও প্রকাশ করেছে। এ অবস্থায় পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর উচিত হবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে পর্যাপ্ত টিউটোরিয়াল ক্লাসের ব্যবস্থা করা।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ সপ্তাহ টিউটোরিয়াল ক্লাস নিয়ে ৬-৭ মাসের স্কুলে না আসার শিখন ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব। এছাড়া শিক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করা। যার ফলে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার সামগ্রিক প্রস্তুতিটা মোটামুটি সম্পন্ন হবে। এভাবে কিছুটা হলেও শিক্ষা ব্যবস্থায় বিরাজমান বৈষম্য কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
লেখক: মোঃ মুরশিদুল ইসলাম সৌরভ
শিক্ষার্থী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//এমআইএস//এমজেড
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: