আরাফাত আবদুল্লাহ : পাবলিক ভার্সিটির ধারে কাছে ঘেঁষার যোগ্যতা নেই এমন অনেক ছেলে মেয়েও প্রশ্ন কিনে পাবলিকে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পেয়ে যায়।
একজন ছাত্রের ন্যূনতম এটেন্ডেন্স নাই। শুধুমাত্র রাজনীতি করে, এই সুবাদে তাকে পরীক্ষা দিতে দেয়া হয়। এই ঘটনা পাবলিক ভার্সিটিতে নিয়মিত ঘটে।
এই পাবলিক ভার্সিটির ছেলে মেয়েরাই ভিসির গাড়ি ভেঙ্গে ফেলে। বাস ভাঙার প্রতিযোগিতায় নামে তারা।
প্র্যাক্টিকাল না করেও শুধুমাত্র "চেহারা সুন্দর" এই উসিলায় অনেক সুন্দরী রমনী পাবলিক ভার্সিটিতে এসে একটা হ্যান্ডসাম জিপিএ নিয়ে চলে যায়।
পাবলিক ভার্সিটির একজন শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস না নিয়ে সভা-সমিতি করে বেড়ান। স্টুডেন্টগুলা কেমন পড়াশোনা করছে এই খবরটা পর্যন্ত তারা রাখেন না।
কিন্তু এরপরেও বাংলাদেশে পাবলিক ভার্সিটিগুলো একটা ব্র্যান্ড। এই সমস্যাগুলো ছোট পরিসরে প্রায় সকল ক্যাম্পাসেই আছে। অনিয়মের বাইরে কেউই নেই। খোদ ঢাবির ডি ইউনিটের প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে গত বছরের ভর্তি পরীক্ষাতেই।
এই সমস্যা আগেও ছিল। এখনো আছে। কিন্তু এসবের মাধ্যমে আমি একটা ক্যাম্পাসের মানকে বিবেচনা করতে পারি না। কারণ জব সেক্টর ভিন্ন কথা বলছে। জব সেক্টর বলছে সরকারি -বেসরকারি চাকরিতে যারা ঢুকছে তাদের বেশিরভাগই কোন না কোন পাবলিক ভার্সিটির স্টুডেন্ট।
মানে হইলো, পাবলিক ভার্সিটিতে এখনো ভালোর সংখ্যাটা বেশি। তাই এখনো মানটা ঠিক আছে। কিন্তু সমস্যাগুলোকে অস্বীকার করা যাবে না।
বাইরের স্কলারশিপের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তবে এই জায়গাতে প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোও এখন সমানতালে ভালো করছে। কাউকে ছোট করে দেখার কিছু নেই।
সম্মানিত ঢাকা ভার্সিটির ভিসি স্যার জাতীয় ভার্সিটির শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। উনি যা বলেছেন সেটা ভুল নয়। কিন্তু উনি যে জায়গায় থেকে যে এপ্রোচে কথাটা বলেছেন সেটাকে ঠিক সমর্থন করতে পারছি না।
don't take me wrong !!
খাতা না দেখে রেজাল্ট দিয়ে ফেলাটা আসলেই ভয়ংকর ব্যাপার। আমরা যারা পাবলিকে পড়ছি তাদের ক্ষেত্রে এরকম হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের খাতা ২-৩ বার করে দেখা হয়।
ঘাটতি সব জায়গাতেই আছে।
কিন্তু এটাও ঠিক আমরা জাতীয় ভার্সিটি নিয়ে মজা নেয়ার চেষ্টা করি আর নিজেদের সমস্যাটার কথা দিব্যি ভুলে বসে আছি।
নিজ মেধা দিয়ে টিকে যে ছেলেটা জাতীয় ভার্সিটিতে পড়ছে সে অন্তত ওই ছেলেটা থেকে মেধাবী যে কিনা প্রশ্ন কিনে কোন পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছে। জাতীয় ভার্সিটি যদি এতোই ফেলনা হতো তাহলে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, আনন্দমোহন কলেজ, ভিক্টোরিয়া কলেজের মতো নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলো আমরা দেখতাম না।
পাবলিক ভার্সিটি অবশ্যই তার জায়গায় সেরা।
কিন্তু এর মানে এই নয় যে বাকিগুলা বাতিল হয়ে গেছে। নিজ যোগ্যতা এবং পরিশ্রমে যে কোন ছাত্র যে কোন জায়গা থেকে পড়াশোনা করেই টপ পজিশনে যেতে পারে। জ্বলন্ত প্রমাণ আমাদের সম্মানিত ঢাবির ভিসি স্যার। তিনি ঢাকা কলেজের ছাত্র ছিলেন। সমস্যা সব জায়গাতেই থাকে। আমাদের উচিত পজিটিভ বিষয়গুলোকে হাইলাইট করা।
আসুন, কাউকে ছোট না করে, সবাইকে উৎসাহিত করি...
আরাফাত আবদুল্লাহ
( মধ্যরাতের অশ্বারোহী )
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ২৪ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: