আরাফাত আবদুল্লাহ : ভার্সিটিতে যে প্রেমগুলো হয় সেগুলোর কোনটাই অপরিপক্ব নয়। বুঝে শুনে দুইটা ম্যাচিউরড মানুষ একজন আরেকজনের প্রেমে পড়ে। একটা শক্ত কমিটমেন্ট নিয়ে যাত্রা শুরু হয় দুজনের। অতএব এই সম্পর্কগুলোতে যে ব্রেকাপ ঘটে সেটার কষ্টটাও হয় অনেক বেশি।
প্রথম কিছু দিন খুব ভালভাবেই সব কিছু চলে। এরপর শুরু হয় অবহেলা। একজন আরেকজনের উপর ডোমিনিটিং মনোভাব দেখাতে শুরু করে।
অনেক ছেলেকে দেখেছি প্রথম প্রেমের সম্পর্ক শেষ হওয়ার পর আস্তে আস্তে বহুগামী হয়ে গেছে। একসাথে ৪/৫ টা রিলেশন মেন্টেইন করে।
আবার কিছু মেয়েও আছে প্রথম প্রেম ভেঙ্গে যাওয়ার পর অনেক খোলামেলা হয়ে যায়। প্রচুর ছেলের সাথে টাইম পাস করে।
ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলানোর অধিকার কারোরই নাই। কিন্তু প্রতিটি ক্যাম্পাসেই এরকম কিছু ছেলে মেয়ে পাবেন যারা পার্মানেন্ট রোমিও কিংবা জুলিয়েট হিসাবে ক্যাম্পাসে মার্ক হয়ে আছে। খেয়াল করলে দেখবেন এদের একটা বিরাট অংশ হইলো প্রথম প্রেমে ছেঁকা খাওয়া পাবলিক।
অনৈতিক সম্পর্ক কোন নীতিমালা মেনে চলে না।
অনার্স ফাস্ট ইয়ার পড়ুয়া ছেলে তার থেকে ৪/৫ বছরের বড় একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক করেছে। এরা নাকি জেনে বুঝেই একজন আরেকজনের সাথে টাইম পাস করে। অনুভূতিগুলো কতো অসাড় হয়ে গেছে ভাবতেই অবাক লাগে।
ডার্ক রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় যে সকল কাপলের অবাধ বিচরণ দেখা যায় তাদের একটা বড় অংশই অনৈতিক সম্পর্কের জেরে শুধুমাত্র "টাইম পাস" নামক সংস্কৃতিতে আবদ্ধ।
রিকশায় ঘোরা, গাড়িতে করে লং ড্রাইভে যাওয়া কিংবা বড় শপিং কমপ্লেক্সে গিয়ে এটা সেটা কিনে দেয়াটাই মূলত এই সকল সম্পর্ক মেইন্টেইন করার প্রধান উপায়।
আমাদের হলেই এক সিনিয়র ভাই থাকতেন যিনি তার বিয়ে হয়ে যাওয়া প্রেমিকার সাথে রাত বিরাতে ফোনে কথা বলতেন। ওই মেয়েটার স্বামীও কিন্তু একজন ব্যাংকার। ভালো বেতনই পায়। কিন্তু এরপরেও কী বউকে সামলায় রাখতে পারলো?
অশান্তি কাকে বলে, কতো প্রকার, কি কি সেটা বুঝা যায় বিয়ের পর। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই উচ্চশিক্ষিত। প্রচুর বেতন পায়। ফ্ল্যাট বাড়িতে থাকে। নিজেদের সাজানো সংসার আছে। কিন্তু কারো সাথে কারো এডজাস্ট হয় না। একটু পর পর ঝগড়া লাগে। স্ত্রী ঝগড়া করে স্বামী থেকে আলাদা হয়ে তার এক্স প্রেমিকের সাথে টাইম পাস করে। স্বামীও কম যায় না। চলে যায় এক্স প্রেমিকার কাছে। সেই এক্স প্রেমিকাও এখন কারো না কারো স্ত্রী।
সম্পর্কগুলোর সমাপ্তি হয় খুব বিশ্রীভাবে। দেখা যাচ্ছে, কারো বউ পালিয়ে গেছে। নয়তো কোন স্বামী তার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে। অথবা স্ত্রী তার স্বামীকে খুনের চেষ্টা করছে। এইসব ঘটনা কিন্তু একদিনে ঘটে না। এসবের সূত্রপাত হয় অনেক আগে থেকেই ।
আজকাল তাই "প্রেম করে বিয়ে করবো" -এই টাইপ বিলাসিতা কাজ করে না। খুব সাধারণ একটা মেয়েকে নিয়ে একেবারে সাধারণ ছাপোষা শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন করাটাই এখন একটা অসাধারণ চাওয়া হয়ে গেছে।
একটা সাধারণ আনস্মার্ট মেয়ের মাঝেই হয়তো একটা অসাধারণ মন আছে। শান্তিটা হয়তো সেখানেই আছে ।
ভালোবাসা বেঁচে থাকুক।
আরাফাত আবদুল্লাহ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ১৩ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: