শরিফ আহমেদ : কেউ কী Raging এর শিকার হয়েছ...। তিনবছর আগের কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার প্রথম দিন। খুব ভাব নিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। কয়েকটা বড় ভাই আর আপু এক জায়গায় বসে আড্ডা দিচ্ছিল। আমি তাদের খেয়াল করিনি। আমি আমার মত হেঁটে যাচ্ছি। হঠাৎ ওদের একজন আমাকে ডাক দিলেন। আমি গেলাম।
নাম জিজ্ঞেস করল, বললাম। আমি বুঝতে পারছিলাম এবার কিছু একটা হবে। আমি মোটামুটি প্রস্তুত। এবার শুরু হল Raging...। এক বড় ভাই আমাকে গান গাইতে বললেন। আরে এটা কোন ব্যাপার নাকি, যদিও ভাল গাইতে পারিনা তবু কেউ বললে আমি উৎসাহ নিয়েই গাই।
.
.
পড়েনা চোখের পলক, কি তোমার রুপের ঝলক
.
.
দুইটা লাইন শুনিয়ে দিলাম। যাই হোক বড় ভাইদের ইচ্ছা পুরণ হলনা। তারা আমাকে ঘাবড়ে যেতে দেখতে চান। আমিও কম না। এবার এক আপু নাচতে বললেন। আমিও "চাম্মাক চাল্লো " বলে দুটো লাফ দিলাম। বড় ভাইদের আশা এবারো পূরণ হলনা। এবার আমাকে
সিগারেট অফার করলেন। আমার বাপ দাদা কখনো সিগারেট খায়নি, আমি কেন খাব। আমিও সিগারেট খাওয়ার ক্ষতি সম্পর্কে ছোটখাট একটা ভাষণ দিয়ে দিলাম। বড় ভাইরা বিরক্ত হয়ে গেল। হঠাৎ এক বড় আপু আমার জন্য সবচেয়ে কঠিন কাজটার কথা বলে বসলেন।
আমি ওটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। সেটা হল "প্রপোজ"। উনাদেরই এক বান্ধবীকে আমার প্রপোজ করতে হবে। উনারা নাকি সেটা আবার ভিডিও করবেন। মনে মনে ভাবছি কি করা যায়।
ভাবলাম একটা মেয়ে যদি এ ব্যাপারটায় লজ্জা না পায় তাহলে আমি কেন পাব? আর উনি তো সমবয়সীও নন। আমার মাথায় দুষ্টুমির বুদ্ধি চলে এল, একটা গোলাপ ফুল নিয়ে সরাসরি হাঁটু গেড়ে বসে বললাম, Will you marry me?? সবাই সেই হাততালি। আপুটাও দেখি হাসছে.. উনিতো জানেননা কি অপেক্ষা করছে সামনে। সেদিনের মত ভাইরা আমাকে চা নাস্তা খাইয়ে বিদায় করে দিলেন।
.
.
.
এরপরদিন থেকেই আপুটাকে যেখানেই দেখি ওই কথাটা বলি আর ক্ষ্যাপাই। এমন অবস্থা আমাকে দেখলেই আপু পালিয়ে যান। আমিও ছেড়ে দেবার পাত্র নই, আমাকে র্যাগিংয়ের মজা টের পাক। এভাবে প্রায় টানা কয়েকমাস বিরক্ত করেছি।
আমার কথা হল সেদিন যেহেতু ওরা প্রপোজ করিয়েছে এখন আমি নিজে করতে সমস্যা কি। তারপর একদিন বড়ভাই আপু সবাই এসে সরি টরি বলে আরেকটা বড় করে নাস্তা করালেন।
আমিও বিরক্ত করা বাদ দিলাম। এখন আমার যত দরকারি নোট সব ওই আপুই দেন। আজও ভুলতে পারিনা সেদিনের সেই স্মৃতি।
শরিফ আহমেদ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ১২ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: