শাহরিয়ার নিহাল : বাস্তবতা ছোটবেলা থেকেই বাসায় সন্ধ্যায় হালকা খাবার খেয়ে পড়তে বসার একটা অভ্যাস ছিল। অভ্যাসটা ভার্সিটি লাইফেও পরিবর্তন হয়নি। বেশকিছু দিন আগে আমি আর আমার বন্ধু বের হলাম সন্ধ্যায় পুরি-সিঙাড়া খাওয়ার জন্য। পথিমধ্যে বন্ধুর ক্লাসের এক ছেলের সাথে দেখা। এই ছেলের সাথেই বেশ কিছুক্ষণ কথা হল।
কথার সারমর্ম হচ্ছে এই যে, তার কাছে ১০ দিনেও ১০ টাকা হাতখরচ করার মতো থাকে না, তাই ডিপার্টমেন্টের বড় ভাইদের কাছে একটা টিউশনির ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য সাহায্য চাচ্ছে।
অভাবের কারণে বাসায় ও টাকার জন্য বলতে পারছে না। অথচ সে দেশের অন্যতম সেরা ভার্সিটির BBA এর স্টুডেন্ট। যেখানে সবাই নতুন ক্যাম্পাসে নতুন বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা, ঘুরাঘুরিতে ব্যস্ত সেখানে সে দারিদ্রতার সাথে সংগ্রাম শুরু করে দিয়েছে। চিন্তা করা যায়!!!!
আসলে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি পাবলিক ভার্সিটিগুলোতে আপনি এমন ছাত্রদের অহরহ দেখতে পাবেন। আপনার ক্লাসেই হয়তবা আছে বেশ কয়েকজন। যখন কলেজে পড়তাম তখন সাইফুল স্যার বলত আমরা পাবলিকিয়ানরা হচ্ছি একেকটা ব্র্যান্ড। আমরা রাস্তায় লুঙ্গি পড়ে বের হলেও প্রাইভেটের স্যুট প্যান্ট পড়া স্টুডেন্টদের চেয়ে আমাদের আলাদাভাবে দেখবে। তখন হয়ত কথাটা বুঝে উঠতে পারিনি তবে এখন নিজের চোখেই দেখি যে বেশিরভাগ পাবলিকিয়ানদেরকে ভার্সিটি লাইফের প্রত্যেকটা দিন কঠোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
এরা হয়ত প্রাইভেটের স্টুডেন্টদের মতো দিনে ১০/১২ টা ছবি ফেসবুকে আপলোড করতে পারে না, বারবিকিউ পার্টি, hangout এসবের ধারে কাছেও যেতে পারে না তবে এরা জীবনের আসল মানে টা জানে, জানে বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও কিভাবে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হয়। আর সফলতার জন্য এটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি।
শাহরিয়ার নিহাল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ০৬ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: