শামসুজ্জোহা বিপ্লব : ভার্সিটির ভাইভাগুলো হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের জন্য অফিসিয়াল র্যাগিং, না আছে কিছু বলার, না আছে কিছু করার। স্যারেরা আমাদের প্রশ্ন করে আমরা চুপসে যাই, চুপসাতে চুপসাতে একসময় দুমড়ে মুচড়ে যাই। তবুও আমরা সরি বলার হাল ছাড়ি না।
নানা কৌশলে ইনিয়ে বিনিয়ে আমরা সরি বলি। স্যার যাই বলুক আমাদের উত্তর একটাই সরি স্যার। স্যাররাও আমাদের এ অভিনব কৌশলের সরি বলার স্টাইল দেখে কখনো মনে মনে হাসেন কখনো হালকার উপর ঝাপসা ঝাড়ি দেন, আমাদের মৃদু বাক্যবাণে শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমরা সে শিক্ষা অবশ্যই মেনে চলবো বলে ভাইভা রুম থেকে অঙ্গীকার করে বের হয়ে আসি কিন্তু ভাইভার রুম থেকে কোনোমতে বের হতে পারলেই। সেই অঙ্গীকারনামার কথা আমাদের আর মনে থাকে না।
ভাইভা বোর্ডের স্যারের প্রশ্ন না পারলে আমি যেভাবে স্যারের হাত থেকে এড়িয়ে যাওয়া/ নিস্তার পাওয়ার বৃথা চেষ্টা করি।
১। মাথা একটু হেলিয়ে বলি, সরি স্যার।
২। আমতা আমতা করে বলি, স্যার একটু নার্ভাসনেস কাজ করছে।
৩। স্যার! এই বিষয়টা এখন মনে করতে পারছি না।
৪। সরি স্যার। টপিকসটা মাথা থেকে এখন বের হচ্ছে না।
৫। স্যার। এই মুহুর্তে টপিকসটা কেমন জানি ভুলে গেছি।
৬। সরি স্যার। বিষয়টা মাথায় আসছে কিন্তু স্যার মুখে আসছে না।
৬। স্যার! আমাকে যদি স্যার অন্য একটা টপিকস থেকে প্রশ্ন করতেন, মনে হয় পারতাম।
৭। সরি স্যার! থিউরি পরীক্ষায় শুধু এই টপিকসটাই বাদ দিয়েছিলাম। এটা খুব কঠিন ছিলো স্যার।
৮। স্যার! বিষয়টা কেমন জানি মাথায় আসছে আসছে করে, আসছে না। টপিকসটা একসময় পারতাম স্যার আমি।
৯। সরি স্যার!
১০। সরি স্যার!
একসময় ভাইভা বোর্ডের টিচার আমাদের সরি শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে বলে, বাবা! কিছুই তে পারলে না। পড়াশোনা একটু ভালভাবে করো। মাঝেমাঝে কোনোকোনো স্যার আমাদের ভালবেসে গাঁধার সাথেও তুলনা করেন কিন্তু আমরা কিছু মনে করি না। কারণ স্যারেরা আমাদের অনেক ভালবাসেন। যখন দেখি এক স্যারের প্রশ্ন অন্য স্যার আমাদের কৌশলে উত্তর বলে দিচ্ছেন। অফিসিয়াল র্যাগিং শেষ হলে আমরাও স্যারের দিকে চেয়ে একটু হাসিমুখ করে ধন্যবাদ দিয়ে ভাইভা রুম থেকে বের হয়ে আসি। আর ভাবি যা হয়েছে ভালই হয়েছে, বেঁচে গেছি এটাই বড় কথা। বাইরে বের হয়ে এসে বন্ধুদের বলি এবারের ভাইভা ফাটিয়ে দিয়েছি।
শামসুজ্জোহা বিপ্লব
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ০১ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: