Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

লাস্ট বেঞ্চ থেকে বলছি স্যার...

প্রকাশিত: ২৭ আগষ্ট ২০১৮, ১৮:৪২

আরাফাত আবদুল্লাহ : উৎসাহ, অনুপ্রেরনা, এই কথাগুলো কখনোই একজন ব্যাক বেঞ্চারের জন্য খাটে না। ব্যাকবেঞ্চার মানেই ৯ টা এক্সামের মধ্যে তিনটায় সাপ্লি, বাকি দুইটায় ইম্প্রুভ। পরের বছর জুনিয়রদের সাথে বসে পাঁচটা এক্সামের বোঝাসহ চলমান বছরের এক্সাম দিয়ে ইয়ার ড্রপের সমুহ সম্ভাবনা। নাহ এই বছর ড্রপ খেলো না। কিন্তু 2.5 এর নিচে। তাতে কি? এই রেজাল্ট নিয়েই মানুষটা সবাইকে ট্রিট দিয়ে উদযাপন করছে। দেখেন নাই কখনো? এরকম আছে না?

একদিন দেখলাম এক সিনিয়র ড্রপার কাটা পাহাড় দিয়ে চলে যাচ্ছে। তখন তার এক্সাম টাইম। ডেকে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই আপনার না এক্সাম চলে? ভাইয়ের হাসি মুখে উত্তর, প্রশ্ন উত্তর পারি না। খাতা ১ ঘন্টার মধ্যে জমা দিয়ে চলে আসছি। আমি বললাম, ভাই ড্রপ খেয়ে যাবেন তো! উনার উত্তর, মইরা তো যাই নাই। ড্রপইতো খেয়েছি। পরের বছর দেখতাম সে আবার এক্সাম দিতে আসে। সবার শেষ বেঞ্চে গিয়ে বসে স্যাররা গিয়ে করুণা দেখায়, আর কতো দিন থাকবা? বেচারা কিছু বলে না। খাতায় লিখতে থাকে। কি যে লেখে সেটা কেউ জানে না।

সেই বছর কোন রকমে পাশ। ইয়ার ক্রাশ খাওয়া ছেলেটাকে এইবার দেখা যায় জিরো পয়েন্টে। পাশ করা উপলক্ষে সবাইকে ট্রিট। ক্যাম্পাসের সিনিয়র জুনিয়র যাকেই পাচ্ছে খুশি হয়ে বলছে, ভাই সেকেন্ড ক্লাস নিয়ে অনার্স পাশ করেছি। দোয়া রাখবেন। এক সময় সন্ধ্যা নেমে আসে। বেচারা আর কাউকে ট্রিট দেয়ার জন্য পায় না। সবাই জানে ও পাশ করেছে। নিজের রেজাল্টগুলোর দিকে তাকায়। কি চমৎকার রেজাল্ট ছিল। আর এখন পাশ নিয়ে টানাটানি। নিজের অজান্তেই বুকটা কেমন খালি খালি লাগে। মাথাটা কিছুক্ষণের জন্য ফাঁকা হয়ে যায়। জীবন তাকে কোথায় এনে দাঁড় করিয়েছে। বেচারা মোটিভেশনাল স্পিচ শোনে। অথচ সে নিজেও জানে না তাকেই ক্লাসে একটা মোটভেশন হিসাবে উপস্থাপন করা হয়।

স্যাররা কথায় কথায় তাকে উদাহরণ করে। "দেখো কতোদিন ধরে ক্যাম্পাসে আছে। ওর থেকে শেখো কিভাবে ক্যাম্পাসে পড়ে থাকতে হয়" ক্লাসে হাসির রোল পড়ে যায়। সেকেন্ড ক্লাস পেয়ে পাশের আনদন্টা আর থাকে না। ড্রপার বলে কথা। এতো লজ্জা শরম থাকলে হয় নাকি? লাস্ট বেঞ্চ মানে লাস্ট বেঞ্চই। নাই চাইলেও তাকে সবাই ওইভাবেই ট্রিট করে। এটা কিন্তু ওই মানুষটা জানে। জীবন কাকে কখন কিভাবে খেলায় সেটা কেউ বলতে পারে না। শাটল ছেড়ে দিচ্ছে। খেয়াল করলে দেখবেন একটা ছেলে কোনরকম দৌড়ে এসে ট্রেনের শেষ বগিটা ধরে ঝুলে পড়েছে। ট্রেন কিন্তু মিস করে নাই। শেষ টাইমে হলেও এসেছে। মানে হইলো ওরা ফুরিয়ে যায়নি। শেষ ঝলকটা এখনো বাকি আছে। দেখেন কি হয় হাজার হোক ড্রপইতো খেয়েছে। মরে তো যায়নি।

Arafat Abdullah (মধ্যরাতের অশ্বারোহী)

University Of Chittagong

[ছবি : সংগৃহিত]

ঢাকা, ২৭ আগস্ট (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ