আশিকুর রহমান : প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল আছে বলেই শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় আছে। মানে শাবির পরিচিতিটা জাফর স্যারকে ঘিরেই। মনে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ভর্তি হয়েছিলাম তখন তাকে কাছ থেকে দেখবো বলেই আকর্ষণটা একটু বেশি ছিল। তবে আফসোস ছিল কারণ আমি স্যারের বিভাড়ের ছিলাম না। তাই তাকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ কম হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি
তিনিই শাবিকে অলংকৃত করেছেন।
জাফর স্যার আছেন বলেই শাবি গ্ল্যামার পেয়েছে। সেটা আইটি সেক্টরেই হোক, বিজ্ঞান, গণিত কিংবা অন্য সেক্টরে। তিনি আছেন বলেই স্বপ্ন দেখেন তরুণরা।
যতদূর মনে পড়ে ড. জাফর স্যার শাবিতে ডিজিটাল ভর্তি পরীক্ষা চালু করেছেন। ভর্তি পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তরুণ আইটি স্পেশালিষ্টদের কাজে লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলেছেন শাবিকে।
শাবিতে কাগজবিহীন ডিজিটাল ভর্তি পরীক্ষা চালু করে দেশজুড়ে অালোড়ন তৈরি করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও শাবির প্রযুক্তি চালু হয়েছে।
সে যাই হোক। জাফর ইকবাল স্যার যতদিন শাবিতে ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন ততদিন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে
ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কেউ সাহস পায়নি। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে শাবিতে ভর্তি পরীক্ষা হয়েছে।
তবে যতদূর শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন অন্যায় আবদারের সঙ্গে আপোস করতে না পারায় তিনি এখন অনেকটাই নিশ্চুপ হয়ে আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন বিষয়ে তিনি আর নাক গলান না। ক্ষোভ কিংবা অভিমান যাই হোক না কেন তিনি
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার কোন দায়িত্বে
নেই। আর এ সুযোগের বর্তমানে শাবিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড শুরু হয়েছে। দুর্বৃত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কলঙ্ক লেপন করে দিয়েছেন। শুরু হয়েছে ভর্তি জালিয়াতি। যেটা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা কখনও কল্পনাও করতে পারতাম না।
চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০১৬-১৭) শাবিতে ভর্তি নিয়ে যা হচ্ছে তা আমাদের জন্য লজ্জার। আমাদের উঁচু মাথা হেট করে দেয়া হয়েছে। একসময় আমরা গর্ব করতাম শাবিতে ভর্তি নিয়ে জালিয়াতি সম্ভব নয়। আর এখন এটা স্বাভাবিক বিষয় হয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা শাবিতে ভর্তি জালিয়াতির তকমা লাগিয়ে দিয়েছে। শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশসনও ওই দুবৃত্তদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। যদি বিষয়টি সত্য হয়, তাহলে এটা শাবির জন্য ভয়ানক বিপদ ডেকে আনবে।
শাবিতে বর্তমানে জাফর ইকবাল স্যার নিশ্চুপ বলেই দুবৃত্তরা এমন সাহস পাচ্ছে বলে আমি মনে করি। তিনি নেই বলেই শাবির আজ এমন অবস্থা। আশা করছি এঅবস্থা থেকে শাবি শিগগিরই উত্তোরণ হতে পারবে। না হয় আমরা সাবেক শিক্ষার্থীরা যেকোন সময় প্রতিবাদের
মশাল নিয়ে যেকোন সময় শাবির সম্মান রক্ষায় সচেষ্ট হব। জাগ্রত হোক বিবেক, জয় হোক সত্যের, বন্ধ হোক দুর্বৃত্তায়ন।
আশিকুর রহমান
সাবেক শিক্ষার্থী
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ২৯ নভেম্বর (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//জেএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: