নিয়াজ মাহমুদ : ইউনিভার্সিটির প্রথম বর্ষে এসেই সবার লক্ষ্য থাকে, ক্লাসের সেরা ছাত্রটি হব। এসাইনমেন্ট থেকে শুরু করে টিউটরিয়াল সব কিছুতেই সিরিয়াসনেস। প্রায় সবার ক্ষেত্রে ক্লাসের উপস্থিতি থাকে শতভাগের কাছাকাছি।
দ্বিতীয় বর্ষে এসে কোমড়ের দড়িতে টান পড়ে।
অনার্স ফাস্ট ইয়ারের রেজাল্ট হওয়ার পর ক্লাসে মোটামুটি খারাপ ছাত্র আর ভালো ছাত্রদের একটা গ্রুপ তৈরি হয়ে যায়। বলাই বাহুল্য এই গ্রুপটা পরবর্তী ইয়ার গুলোতেও বিদ্যমান থাকে।
তৃতীয় বর্ষে এসে মূলত সিনিয়র জুনিয়র প্রেমের সূত্রপাত হয়। সমবয়সী প্রেম যেগুলো কিনা ফাস্ট ইয়ার থেকেই শুরু হয়েছিল সেগুলো সাধারণত এই সময়ে এসেই ব্রেকাপ হয়। আর যদি ব্রেকাপ না হয় তাহলে বুঝতে হবে রিলেশন আরো বহুদূর যাবে। ক্লাস এসাইনমেন্ট আর এটেনডেন্সের খবর নেই। অতিসিরিয়াস পাবলিক অবশ্য ভিন্ন কথা।
চতুর্থ বর্ষে উঠার পর সাধারণত একটা নেতা নেতা ভাব চলে আসে। কাউকে তোয়াক্কা করি না, টাইপ মনোভাব। এই সময়ে ছেলেদের জীবনে প্রথম চিন্তা আসে একটা চাকরি বাকরি করতে হবে। ভালো একটা জব পেতে হবে। মেয়েরা অবশ্য এই সময়ে এসে জানতে পারে অগনিত প্রতিষ্ঠিত ছেলে তাদেরকে বিয়ে করার জন্য লাইন ধরে আছে। সমবয়সী রিলেশনগুলোর ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা! যদি তোমার বিয়ে হয়ে যায়?
অনার্স পাশ করে মাস্টার্সে এসে গেলে একটা ক্রিটিকাল লাইফ শুরু হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি জব প্রিপারেশন। এটেন্ডেন্সের গুল্লি মারি। আগে বিসিএস হতে হবে। একাডেমিক বই থেকেও ডাইজেস্ট বইয়ের প্রতি আগ্রহ থাকে বেশি। যারা বাইরে যাওয়ার ট্রাই করে তারা ভর্তি হয় GRE কিংবা IELTS প্রোগ্রামে। অনেকগুলো প্রেমের সমাপ্তি হয়ে যায় মাস্টার্সে এসে। সবার মধ্যে একটা চাপা প্রতিযোগিতা থাকে।
অনার্স আর মাস্টার্সের পর এবার ক্যাম্পাসকে বিদায় জানানোর পালা। সবার দিক আলাদা। আবার কখন দেখা হবে ঠিক নেই। রেজাল্টের ভিত্তিতে যে গ্রুপিংটা তৈরি হয়েছিল সেটা হঠাৎ করে মিলিয়ে যায়। প্রত্যেকের জীবনের আলাদা করে গল্প তৈরি হয়। ক্যাম্পাস লাইফের এই ৫ টা বছরেই যতোগুলা অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়, জব লাইফেও বোধকরি এতো অভিজ্ঞতা লাভ করা যায় না। জীবন সুন্দর। সুন্দর আমাদের ক্যাম্পাস লাইফটাও।
লেখক : নিয়াজ মাহমুদ
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা, ২৭ মে (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: