Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

সবাই ইচ্ছেমত সাজেশন দেয়, বেকারদের কষ্ট কেউ বুঝে না

প্রকাশিত: ১০ মে ২০১৮, ০৩:১২

ডা. এইচ আর হাবিব : প্রাইমারী স্কুলে থাকতে আমার সাথে যে ছেলেটি পড়াশোনা বাদ দিয়েছিল, তার এখন একটি অনেক বড় দোকান আছে। ছেলেটির গায়ের রং এখন অনেক ফর্সা হয়ে গেছে। পেটের ভুড়িটাও সামনের দিকে এগিয়েছে। বেছে বেছে বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে সুন্দরী অল্প বয়সী একটি মেয়েও বিয়ে করেছে।

আমাকে দেখলেই এখন সে ৩২ টি দাঁত চ্যাগাইয়া বলে -কি বে, পড়াশোনা কি শেষ হলো, আর কতদিন, চাকরি বাকরি কী কিছু হবে নাকি হুদাই। ভালো করে চেষ্টা কর। মামা খালু ধর ব্যাটা। চাকরিতো আর এমনে এমনে হয় না।

আমার সাথে যে ছেলেটি এসএসসিতে ২.৫০ নিয়ে পাশ করেছিল। সে এখন ডিফেন্সে জব করে। এলাকায় বাসাবাড়ী রঙ্গীন করে ফেলেছে। তার মায়ের কথা আর প্রশংসায় থাকা মুশকিল। আমি গালে হাত দিয়ে তার বাসার জানালা গুণি। সে মাঝে মাঝে ফোন করে বা দেখা হলে মুখের দিকে সাজেশন ছুড়ে দেয়। এই, পড়াশোনা ঠিক ঠাক করছিস তো? একদম মেয়েদের পেছনে ঘুরবি না, চাকরি বাকরিতো নাই, তবুও চেষ্টা করে দেখ পাইস কি না।

এক মেয়ে ছিল। সে ঠিক ঠাক নিজের নামটা পর্যন্ত লিখতে পারতো না। সে এখন প্রাইমারী স্কুলের টিচার। কিভাবে চাকরি পেয়েছে সেটা বলবো না। এই মেয়েটিকে এখন সবাই এলকায় ম্যাডাম ম্যাডাম বলতে বলতে মুখে থুথু বের করে ফেলে। তার দুজন সহকর্মীও রয়েছে। একজন তার বাচ্চা দেখে, আরেকজন তার ক্লাশের নিয়মিত প্রক্সি দেয়। এই মেয়েটিও সুযোগ বুঝে আমার দিকে এক বস্তা সাজেশন ছুড়ে দেয়। আমি তখন হুম হুম করে সব পাঙ্গাস মাছেরর মত গিলি।

সেদিন এক ছোট ভাই তার ফ্রেন্ডের সাথে পরিচয় করে দিল। ছেলেটি কনস্টেবল। শুরুতেই ছেলেটি আমাকে তুমি সম্ভোধন করে বললো - কেমন আছো, কোথায় পড়াশোনা করো তুমি। অথচ এই ছেলেটি আমার চেয়ে সাত বছরের ছোট।

জীবন অদ্ভুত, বড়ই অদ্ভুত। ইচ্ছে হলে সবাই ইচ্ছেমত সাজেশন ছুড়ে দেয়। বেকারদের কষ্ট কেউ বুঝে না।

হলে, হোস্টেলে অথবা মেসে প্রতিদিনকার রুটিনই যে আমাদের এখন ভালো লাগে।
মেসের খালাম্মার প্রতিদিন সকাল বেলা উঠে ডাকা ডাকি- এই উঠেন উঠেন, বাজার আছে আপনের, আপনের চাল শেষ হয়ে গেছে, টাকা শেষ, ম্যানেজারের সাথে কথা বলেন, নইলে দুপুর থাইকা মিল অফ। বুয়ার ডাকাডাকির মাঝেও তারা স্বপ্ন দেখে, কোনো একদিন কোনো এক নরম হাতের স্পর্শ সকাল বেলা মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে ঘুম ভাঙাবে, আর বলবে- এই উঠো উঠো, নাস্তা রেডি, তোমার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে তো।

কে জানি বলেছিল বাছা- লেখা পড়া করার মূল লক্ষ্য মানুষের মত মানুষ হওয়া,
ধূর মিয়া, লেখা পড়া করার মূল লক্ষ্য ভাল চাকরি পাওয়া...

ডা. এইচ আর হাবিব
ভেট ডক্টর

ঢাকা, ০৯ মে (ক্যাস্পাসলাইভ২৪.কম)//সিএস


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ