Azhar Mahmud Azhar Mahmud
teletalk.com.bd
thecitybank.com
livecampus24@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১
teletalk.com.bd
thecitybank.com

ভাষার বিকৃতি নয়, শুদ্ধ প্রয়োগ চাই

প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০১৮, ০৩:২৯

মো.আরিফ হোসাইন হিয়া: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, “আগে চাই বাংলা ভাষার গাথুঁনী তবে ইংরেজির গোড়াপত্তন”এই লাইনটির মাধ্যমেই বোঝা যায় যে, বাংলা ভাষার গুরুত্ব কতটুকু। বাংলা ভাষার ইতিহাস বাঙালী জাতির গর্বের ইতিহাস, প্রতিবাদের ইতিহাস বাঙালী জাতির পরাধীনতার শৃঙ্খল ভঙ্গের ইতিহাস।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যারা ভাষার জন্য শহীদ হয়েছেন সেই ভাষাকে আমরা কতটুকু লালন করতে পেরেছি তা আমার বোধগম্য নয়। ভাষার শুদ্ধতা আমাদের মানসকি শক্তিকে বিকশিত করে। দ্ঃুখ জনক হলেও সত্য যে, যখন আমরা দেখি এই বাংলা ভাষাকে ব্যঙ্গ করা হয়,বিকৃত করে উচ্চারণ করা হয়।বিশেষ করে আমাদের টিভি চ্যানেল ও এফ এম রেড়িও এর উপস্থাপকরা উপস্থাপনার ক্ষেএে বাংলা ভাষাকে বিকৃত করে উচ্চারণ করছে তখন বুঝতে খুব কষ্ট হয় যে উনারা বাংলায় উপস্থাপন করছে নাকি ইংরেজিতে উপস্থাপন করছে।

অনেক সময় রাতে যখন ঘুম আসেনা তখন আমি রেড়িও ফুর্তির অনুষ্ঠান শুনি সেখানে তারা এমনভাবে বাংলা ভাষাকে ব্যঙ্গ করে উচ্চারণ করে সেটা বলার মত নয়। কিছুদিন আগে একটা নাটক দেখলাম সঙ্গত কারনে নাটকের নামটা বলছিনা। সেখানে এক নায়িকা একটা সংলাপকে এমন বিকৃত করে বলছে তার বলার ধরন দেখে নায়ক তার উত্তরে বলছে, ওরে সালারে তোর কথা বলার ঢ়ং দেখে মনে হচ্ছে বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দিয়ে মারা য়ায়। শুধু যে বিভিন্ন ধরনের উপস্থাপনায় বাংলা ভাষাকে বিকৃত করা হচ্ছে তা নয় বরং নাটক, সিনেমা, সাহিত্য রচনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভাষার বিকৃত করা হয়।

আর এই বলার ধরনটা অনেকটা ইংরেজি সংস্কতি দারা প্রভাবিত হচ্ছে। যা সত্যিই জাতির জন্য লজ্জ্বা ও অপমানের। এরকম আংশিক ও অবান্তর মন-মানসিকতা দিয়ে জাতি কখনো ভালো কিছু আশা করতে পারবেনা। আমরা যদি আমাদের ভাষাকে যথাযথভাবে উচ্চারণ না করে বিদেশি ভাষার স্টাইলে উচ্চারণ করি তাহলে এই লজ্জা গোটা জাতির উপর বর্তায়।কেননা ভাষা বিকৃতি ও অপচর্চার মধ্যে দিয়ে হীনমনতার পরিচয় বহন করে।

একটা বিষয় আমাদের সবারই ভালো করে জানা দরকার যে,পৃথিবীতে এমন কোন দেশ খুজেঁ পাওয়া যাবেনা যারা তাদের নিজ মাতৃভাষার জন্য যুদ্ধ করেছে এবং শত শত মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন। এখন আমাদের কাছে সহজেই অনুমেয় যে, ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগ আমাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ন।

২১ শে ফেব্রুয়ারীতে শহীদ মিনারে ফুল দিলেই তাদের প্রতি ভাষার সম্মান দেখানো হয়না, সম্মান দেখাতে হবে নিজ ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি। ভাষার লালন ও পালন করতে হবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেএে। তাহলেই বেচেঁ থাকবে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি। আমরা এই অবস্থা থেকে উত্তরণ ও প্রতিকার চাই। আমার বাংলা ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগ চাই। যারা বাংলা ভাষাকে বিকৃত ও ব্যঙ্গ করে যাচ্ছে তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনতে পারি। এছাড়াও এর শাস্তি হিসেবে নতুন আইন প্রনয়ন করা যেতে পারে।

যখন এই আইনের বাস্তবায়ন হবে এবং শাস্তি ভোগ করবে তখন কিছুটা হলেও ভাষাকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবে বলে মনে করি। পরিশেষে বলতে চাই, বাংলা ভাষার শুদ্ধ প্রয়োগই হোক আমাদের যোগাযোগের গাথুঁনী।

মো.আরিফ হোসাইন হিয়া
নৃবিঙ্গান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ।
ই-মেইল: arifanthro15@gmail.com

ঢাকা, ২০ মার্চ (ক্যাম্পাসলাইভ২৪.কম)//বিএসসি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

সম্পর্কিত খবর


আজকের সর্বশেষ